গত নভেম্বর (November) মাসেই ছত্তিশগড়ের (Chattisgarh) জনসভা থেকে আরও ৫ বছর বিনামূল্যে দেশবাসীকে রেশন (Free Ration) দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। আর মাস পেরোতে না পেরোতেই এবার মোদির ঘোষণায় সিলমোহর দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা (Central Ministry)। বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন (Loksabha Election)। আর তার আগে মোদির এমন ঘোষণা মাস্ট্রারস্ট্রোক হবে কী না তা সময় বলবে। কিন্তু নির্বাচনকে মাথায় রেখেই মোদি সরকার যে ৮০ কোটি দেশবাসীর মন জয় করতেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে তা দিনের আলর মতো পরিষ্কার। মঙ্গলবারই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনার মেয়াদ বৃদ্ধিতে ছাড়পত্র দিয়েছিল। আর বুধবার কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর (Anurag Thakur) মন্ত্রীসভার বৈঠকের পর জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস থেকে আগামী পাঁচ বছর দেশের ৮০ কোটি মানুষ বিনামূল্যে রেশন পাবেন। পাশাপাশি এদিন অনুরাগ আরও জানিয়েছেন আগামী পাঁচ বছর এই প্রকল্প বাবদ খরচ হবে ১১ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি টাকা। তবে নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদি সরকারের এমন পদক্ষেপকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধীরা। এদিকে নির্বাচনমুখী ছত্তিশগড়ের জনসভা থেকে এই প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দেওয়ার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ করেছিলেন তৃণমূলের (TMC) রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখলে। এদিকে বিরোধীদের অভিযোগ, নির্বাচনের আগে এস করে লাভের লাভ কিছুই হবে না। মানুষ খুব ভালোমতোই জানেন, দেশবাসীর জন্য ঠিক কতটা দরাজ কেন্দ্র।

তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের আশ্বাস, এই প্রকল্পের জন্য টাকা বা শস্য কোনও কিছুরই ঘাটতি থাকবে না। প্রয়োজনে তহবিল আরও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় প্রতি মাসে ভর্তুকিযুক্ত দামে ৫ কেজি খাদ্যশস্য দেওয়া হয় দরিদ্র মানুষদের। কোভিড মহামারির সময়ে, ২০২০ সালে এর পাশাপাশি প্রতি মাসে বিনামূল্যে ৫ কেজি করে খাদ্যশস্য প্রদান করা শুরু করে মোদি সরকার। শেষ পর্যন্ত, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু, খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায়, আরও এক বছরের জন্য বিনামূল্যে রেশন প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। আর সেই হিসাব মেনেই, ২০২৩-এর ৩১ ডিসেম্বরই এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, বিনামূল্যে খাদ্যশস্য সরবরাহের এই প্রকল্পের মেয়াদ আরও ৫ বছরের জন্য বাড়ানো হল।

উল্লেখ্য, আর্থিক নীতি নিয়ে বারবার সমালোচিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ইউপিএ জমানার থেকে মোদি জমানায় জিডিপি বৃদ্ধির হার থেকে শুরু করে বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি সব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মনমোহন সিংয়ের আমলের আর্থিক বৃদ্ধির সঙ্গে তুলনা করে মোদি সরকারকে একাধিক বাণে বিদ্ধ করেছেন বিরোধীরা। কিন্তু সেই সমস্ত দাবি উড়িয়ে কেন্দ্রের সাফাই, গত পাঁচ বছরেই দেশে গরিবি মুক্ত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ১৩ কোটি মানুষ।
