Tuesday, August 26, 2025

ব্রিগেডে ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ’! লাভের গুড় বিজেপির, গাঁটের টাকা খসবে গরিব ব্রাহ্মণদের

Date:

Share post:

আর মাত্র কয়েক মাসের অপেক্ষা। চব্বিশের লোকসভা ভোটের দামামা বাজল বলে! আর।বিজেপির কাছে ভোট মানেই হিন্দুত্বের জিগির। তা বিজেপির অন্ধ ভক্তরাও অস্বীকার করতে পারেন না। হিন্দুত্বের জিগির তোলার উপাদান হিসেবে রামমন্দির যদি প্রথম উদাহরণ হয়, তাহলে দ্বিতীয় অবশ্যই ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ’। আর রামমন্দিরের উদ্বোধনের আগে আগামী ২৪ ডিসেম্বর তা হতে চলেছে খাস কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে।

অরাজনৈতিক কর্মসূচি বলে প্রচার হলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতি যে গেরুয়া রাজনীতির রং চড়াবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অন্যদিকে, বাংলার সাধারণ ঘর থেকে উঠে আসা ব্রাহ্মণরা এই গীতাপাঠে কতটা অংশ নেবেন, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় তৈরি হয়েছে। কারণ, এই কর্মসূচির প্রধান শর্ত হল, যোগ দিতে হলে নিজেদের গাঁটের কড়ি খরচ করে এসো। অর্থাৎ, ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের যে প্রতিনিধিরা গীতা পাঠ করতে চান, তাঁদের ফর্ম তোলা থেকে শুরু করে ট্রেনভাড়া, এমনকী গীতা কেনার টাকাও নিজেদের দিতে হবে। এতেই ক্ষোভের ক্ষোভ তৈরি হয়েছে ব্রাহ্মণ সমাজে। তাঁদের অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, ‘বিজেপি লাভের গুড় খাবে আর গাঁটের টাকা খরচ হবে গরিব ব্রাহ্মণদের’!

গীতাপাঠের মুখ তথা ব্রাহ্মণদের জামাই আদর করে ব্রিগেড পর্যন্ত নিয়ে আসা বা তাঁদের ফলাহারের ব্যবস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে করবে না আয়োজকরা। যাবতীয় খরচ
ব্রাহ্মণদের কাঁধেই চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রথমেই কিনতে হচ্ছে একটি ফর্ম। তার মূল্য ২০ টাকা। এমনকী ছাত্রছাত্রীদেরও প্রবেশমূল্য ধার্য হয়েছে ১০ টাকা। সেই ফর্মে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, পরিচয়পত্রের ফোটোকপি সঙ্গে রাখতে হবে অংশগ্রহণকারীদের। গীতাপাঠের পদ্ধতি আগে থেকেই হোয়াটসঅ্যাপে জানিয়ে দেওয়া হবে। আছে ড্রেসকোডও—পুরুষদের সাদা পাঞ্জাবির সঙ্গে ধুতি বা পাজামা, আর মহিলাদের লাল পাড় সাদা শাড়ি। কিন্তু, যাতায়াতের খরচ আয়োজকরা দেবে না। সেই দায় এবং দায়িত্ব অংশগ্রহণকারীদের নিজস্ব। এতেই ক্ষোভ ছড়াচ্ছে।

ব্রাহ্মণ সমাজের এক প্রতিনিধির কথায়, ‘গীতাপাঠের জন্য আবেদন করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু যা ফরমান দেখলাম…! দরকার নেই। গাঁটের টাকা খরচ করে, নিরাপত্তার এত বাড়াবাড়ি পেরিয়ে গীতা পড়তে যেতে পারব না।’ ব্রাহ্মণ সংগঠনের অন্য এক সদস্য বলেন, ‘পুরোটা রাজনৈতিক। যে সব নিয়মের কথা বলছে, আমাদের মতো ব্রাহ্মণদের তা মেনে অংশ নেওয়া অসম্ভব। আমরা যাচ্ছি না। নিজেদের পকেট থেকে টাকা দিয়ে যাও, সমস্ত প্রমাণপত্র দাও, আবার নিজেদের খরচে বাড়ি ফেরো… অসম্ভব।’ উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামীর কটাক্ষ, ‘গীতাপাঠ নিয়ে এত নিয়ম কোনওদিন দেখিনি। আসলে বিজেপি সব হারিয়েছে, তাই ধর্মকে হাতিয়ার করে লড়াইয়ে থাকার চেষ্টা করছে।’

spot_img

Related articles

প্রাথমিক টেট-এর তথ্য ফাঁস হয়নি, বিভ্রান্তি কাটিয়ে জানালো পর্ষদ

নতুন জালিয়াতির বিরুদ্ধে কড়া রাজ্যের শিক্ষা দফতর। প্রাথমিক টেট-এর (Primary TET) তথ্য ফাঁস হওয়া নিয়ে নতুন করে বিভ্রান্তি...

ট্রাম্পের ছোঁয়া পলকাটা হিরেতে! মোদির গুজরাটেই বেকার অন্তত ১ লক্ষ শ্রমিক

বন্ধুত্বের বাহানায় বিপুল ক্ষতির মুখে গোটা দেশকে ঠেলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে বন্ধু ডোনাল্ড ট্রাম্পের বসানো শুল্কের...

ভয় পেয়েই কুকথা শান্তনুর! ফাঁস মতুয়াদের নিয়ে নোংরা রাজনীতি

মতুয়াদের নিয়ে রাজনীতি করতে মাঠে নেমেছিলেন খোদ নরেন্দ্র মোদি। ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়িতে আধিপত্য কায়েমে বিজেপির নোংরা রাজনীতি দীর্ঘদিনের। ঠাকুরবাড়ির...

নীরবে প্রস্তুতি শামির, দলীপ দিয়েই কামব্যাকের লড়াই

কয়েকদিন আগে এশিয়া কাপের(Asia Cup) দল ঘোষণা হয়েছে। সেখানে সুযোগ পাননি মহম্মদ সামি(Mohammed Shami)। ভারতীয় দলে তিনি ফিরবেন...