ধর্মতলায় শাহি সভা: পরপর প্রশ্ন তুলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিঁধলো তৃণমূল

ঢাকঢোল পিটিয়ে ধর্মতলায় সম্পন্ন হল শাহি সভা। মঞ্চে দাঁড়িয়ে চেনা অঙ্কে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে একের পর এক আক্রমণ শানাতে দেখা গেল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। ‘রাম মন্দির’ থেকে ‘মোদি বন্দনা’ সবই হল, দুর্নীতি নিয়েও সুর চড়ালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ। তবে অমিত শাহের সভায় স্পষ্ট দেখা গেল রাম-বাম কংগ্রেসের আঁতাত, অনুপ্রবেশ নিয়ে দ্বিচারিতা। শুধু তাই নয়, সিবিআইয়ের এফআইআরে নাম থাকা নারদায় টাকা নেওয়া ‘রেজিস্টার্ড চোর’ শুভেন্দু অধিকারীকে পাশে নিয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা অমিত শাহকে তোপ দাগল তৃণমূল। বিজেপির এই সভাকে পুরোপুরি ফ্লপ শো বলে কটাক্ষ করে একের পর এক প্রশ্নবাণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিঁধল ঘাসফুল শিবির।

শহিদদের শ্রদ্ধা জানালেন না শাহ
তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের শহিদ মঞ্চকে চ্যালেঞ্জ করে ধর্মতলার মঞ্চে সভা করলেন অমিত শাহ। তবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তাঁর ভাষণে একবারও সিপিএমের সন্ত্রাসে নিহত শহিদদের কথা কেউ বললেন না অমিত শাহ। শহিদ তর্পণও করলেন না তিনি। এই প্রসঙ্গ তুলেই তৃণমূলের প্রশ্ন তাহলে ধর্মতলার ওই জায়গায় সভা করলেন কেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ?

অনুপ্রবেশ নিয়ে দ্বিচারিতা
ধর্মতলার সভায় একাধিকবার অনুপ্রবেশ ইস্যুতে শাসকদল তৃণমূলকে নিশানায় নিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের বক্তব্য, সীমান্তের দায়িত্বে থাকে বিএসএফ। যা অমিত শাহের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আওতাধীন। অর্থাৎ বিএসএফ তাঁর নিয়ন্ত্রণে। তাহলে অনুপ্রবেশ নিয়ে কী বলছেন অমিত শাহ? অনুপ্রবেশ যদি হয়ে থাকে তাহলে তাতো অমিত শাহর দপ্তরেরই ব্যর্থতা।
চিন সীমান্তেও তো ভারত সরকারের ব্যর্থতা।

শাহের সভায় বাম-কংগ্রেস- বিজেপি আঁতাত
ধর্মতলায় বিজেপির সরাসরি আঁতাতের অভিযোগ তোলা হল তৃণমূলের তরফে। শাহের ভাষণে একবারের জন্যও সিপিএম ও কংগ্রেসের বিরোধীতা করতে দেখা গেল না অমিত শাহকে। এপ্রসঙ্গে তৃণমূলের তোপ, বিজেপির দুই দালাল, এরাজ্যের সিপিএম, কংগ্রেসের বিরোধিতা নেই অমিত শাহর মুখে। কারণ এখানে তিনটে দল সমান। এই সভায় রাম-বাম ও কংগ্রেসের আঁতাত স্পষ্ট। বিজেপির জমায়েত পুরোপুরি ফ্লপ, তবে তাতেও বাম, কংগ্রেসের লোক ছিল।

রেজিস্টার্ড চোরকে পাশে নিয়ে দুর্নীতি বিরোধিতার নাটক
ধর্মতলার সভা থেকে শাসকদলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর সেই অভিযোগ তিনি তুললেন দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআইয়ের এফআইআরে নাম থাকা শুভেন্দু অধিকারীকে পাশে নিয়ে। শাহের এহেন দ্বিচারিতাকে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছে তৃণমূল। শাসকদলের বক্তব্য, বিজেপি দুর্নীতি বিরোধী হলে শুভেন্দুকে সাসপেন্ড কেন করেনি? ওকে গ্রেপ্তার না করে দুর্নীতি নিয়ে কোন মুখে কথা বলেন অমিত শাহ? শুভেন্দু ভাষণে বলল, “চোর ধরো।” চোর তো শুভেন্দু। বিজেপি ওকে চোর বলেছিল। নারদে CBI FIR named. সারদায় অভিযুক্ত। গ্রেপ্তার এড়াতে দলবদলু। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একটা রেজিস্টার্ড চোর, দলবদলুকে নিয়ে মঞ্চে বসে। সিবিআই দেখতে পাচ্ছে না????

সুপারফ্লপ বিজেপির সভা
একইসঙ্গে আমিত শাহের এই সভাকে সুপারফ্লপ সভা বলে কটাক্ষ করা হয়েছে তৃণমূলের তরফে। তৃণমূলের বক্তব্য ওটা সভা? মঞ্চের সামনে, পাশে, পিছনে, চওড়া রাস্তায় জমায়েত নেই। জায়গা ছোট করা হয়েছে ভিড় দেখাতে। সামনে চেয়ার দিয়ে জায়গা নষ্ট করা হয়েছে পরিকল্পিতভাবে। ছাড়া ছাড়া লোক দাঁড়িয়ে রয়েছে। ভিড় দেখানোর চেষ্টা হয়েছে ড্রোন ক্যামেরায় অথচ মেট্রো পর্যন্তও লোক নেই। স্বতঃস্ফূর্ততা নেই। বহিরাগতদের এনে ভিড দেখানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ। ২১ জুলাই তৃণমূলের মঞ্চের শুধু পিছনে যে লোক থাকে, বিজেপির সভায় সেটুকুও নেই।

Previous articleনভেম্বরের শেষেও বেপাত্তা শীত! আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় বাড়ছে স.র্দি-কা.শি
Next articleচিকিৎসা করাতে গিয়েই সামনে এল প.ণবন্দিদের উপর হা.মাসের নি.র্যাতন