উত্তরকাশীর ভাঙা সুড়ঙ্গ ‘চার ধাম’-এর অংশ, মোদির স্বপ্নের প্রকল্পের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে

১৭ দিনের অক্লান্ত পরিশ্রমের পর উত্তরকাশীর ধসে যাওয়া সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৪১ জন শ্রমিককে। শ্রমিকদের উদ্ধারে স্বস্তির শ্বাস ফেলেছে গোটা দেশ। তবে সমস্যা বেধেছে অন্য জায়গায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির স্বপ্নের চারধাম প্রকল্পের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে ধসে যাওয়া এই সিল্কিয়ারা-বারকোট সুড়ঙ্গ। ফলে বহু পরিকল্পিত সেই চারধাম প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কী? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

চারধাম যাত্রা আরও সহজ করতে ৪ ধাম প্রকল্পের অংশ হিসাবে সিল্কিয়ারা থেকে বারকোট পর্যন্ত সুড়ঙ্গ তৈরিতে ছাড়পত্র দিয়েছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অর্থনৈতিক বিষয়ক কমিটি। তার মাথায় ছিলেন স্বয়ং মোদি। মোট চার কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কথা ছিল সিল্কিয়ারায়। গোটা প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল ১,৩৮৩ কোটি টাকা। চার বছর আগে সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের মেয়াদও ছিল চার বছরই। অর্থাৎ, প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের দিকে। ঠিক সেই সময়েই ঘটেছে এই দুর্ঘটনা।

দেবভূমি উত্তরাখণ্ডের প্রবিত্র দুই স্থান গঙ্গোত্রী এবং যমুনোত্রী। একটি গঙ্গা নদী এবং অন্যটি যমুনা নদীর উৎসস্থল। এদের মধ্যে দূরত্ব ২৮ কিলোমিটার। সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শেষ হলে এই ২৮ কিলোমিটার দূরত্ব মাত্র সাড়ে চার কিলোমিটারে অতিক্রম করা সম্ভব হবে। সেই কারণেই সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু হয়। কাজ যখন একেবারে শেষ পর্যায়ে তখনই নামে এই ধস। তবে কেন সুড়ঙ্গে আচমকা ধস নামল? কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। তবে কিছু সম্ভাব্য কারণ উঠে এসেছে। মনে করা হচ্ছে, সুড়ঙ্গের কোনও অংশে পাথর আলগা ছিল। কোথাও হয়তো ফাঁপা অংশে জল জমে ছিল। তাই খননের সময় প্রচণ্ড শব্দে ধস নামে এবং সুড়ঙ্গের মুখ বন্ধ হয়ে যায়। এই দুর্ঘটনার জেরেই আটকে পড়েন ৪১ জন শ্রমিক। দীর্ঘ ১৭ দিনের চেষ্টার পর উদ্ধার সম্ভব হয় শ্রমিকদের।

১৭ দিনের দীর্ঘ লড়াইয়ের পর এখন প্রশ্ন একটাই, এই সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গের ভবিষ্যৎ কী? চারধাম প্রকল্পেরই বা কী হবে? আবার কবে কাজ শুরু হবে? এই সুড়ঙ্গেই কি আবার নামবেন শ্রমিকেরা? সরকারের তরফে জানা যাচ্ছে, চারধাম প্রকল্পের জন্য সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গ খোঁড়া অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু এর ভবিষ্যৎ এখন অন্ধকারে। বিশেষজ্ঞেরা সুড়ঙ্গটি খুঁটিয়ে পরীক্ষা করবেন। তার পর এর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এই সুড়ঙ্গেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে আবার কাজ শুরু হবে, না কি বিকল্প কোনও রাস্তা খুঁজবেন কর্তৃপক্ষ, প্রশাসনের কাছেও তা আপাতত পরিষ্কার নয়। ফলে সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গের ভবিষ্যৎ বিশ বাঁও জলে।

Previous articleবে.নিয়ম বরদাস্ত নয়! স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প থেকে অ.পসারিত ১৪২ বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান
Next articleবরাহনগরের গোডাউনে অ.গ্নিকাণ্ড! দমকলের ৩ ইঞ্জিনের চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে