ফের প্রকাশ্যে গেরুয়া রাজনীতি। স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও (Health Sector) গৈরিকীকরণের অভিযোগ উঠল। এবার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের (NMC) প্রতীক থেকে অশোক স্তম্ভকে (Ashok Stambh) সরিয়ে দেওয়া হল। তার পরিবর্তে বসানো হল ধন্বন্তরীর মূর্তি (Dhanvantari)। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই দেশজুড়ে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। তবে কেন্দ্রের মোদি সরকারের (Modi Govt) বিরুদ্ধে সবকিছু বদলে দেওয়ার অভিযোগ তুলে প্রথম থেকেই সরব বিরোধীরা। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Mamata Banerjee) এই প্রসঙ্গে মোদি সরকারকে প্রতিনিয়ত কটাক্ষ করেন। তবে এবার মেডিক্যাল কমিশনের প্রতীক নিয়েও রাজনীতি গেরুয়া বাহিনীর। বিষয়টি সামনে আসতেই নিন্দায় সরব বিরোধীরা। অশোক স্তম্ভ সরিয়ে কেন সেই জায়গায় ধন্বন্তরীর মূর্তি আনা হল তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। সবকিছুকেই গায়ের জোরে বদলে দেওয়া সম্ভব কী না তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। তবে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে কীভাবে ধর্মের ছোঁয়া লাগল তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই। এদিকে তৃণমূলের (TMC) তরফে রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন (Shantanu Sen) ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনকে চিঠি দিয়ে ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। যদিও লোগো পরিবর্তনের (Logo Change) বিষয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
তবে শুধু তৃণমূল কংগ্রেস নয় এনএমসির লোগো পরিবর্তনের প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠনও। শান্তনু বলেন, এই জিনিস একেবারেই বরদাস্ত করা হবে না। অশোকস্তম্ভ দেশের ঐতিহ্য। তাকে এভাবে বদলে দেওয়া মানব না। তিনি আরও জানান, চিকিৎসকের কাছে সবাই রোগী। এখানে ধর্ম, জাত, বর্ণ, ধনী, দরিদ্রের কোনো প্রভেদ, বিভেদ নেই। পেশায় প্রবেশের সময়ই চিকিৎসকদের এই শপথ নিতে হয়। রাজনীতির নামে গৈরিকীকরণের এই প্রচেষ্টা আমরা বরদাস্ত করব না। দেশজুড়ে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার থেকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে নতুন লোগো। আগে লোগোতে শুধুমাত্র অশোক স্তম্ভের ছবি ছিল। এখন সেটাকেই বদলে নতুন প্রতীকের মাঝখানে রয়েছে ধন্বন্তরীর মূর্তি। কিন্তু আচমকা কেন এমন পরিবর্তন? ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বিষ্ণুর অবতার ধন্বন্তরীকে দেবতাদের চিকিৎসক বলা হয়। সেই মূর্তিকে ঘিরে রয়েছে তিনটি মানুষ। তাঁদের গায়ে দেওয়া হয়েছে জাতীয় পতাকার রঙ। সঙ্গে লেখা, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন-ভারত।
সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাসের অভিযোগ, ধন্বন্তরির ছবি আসলে চিকিৎসা বিজ্ঞানকে কয়েক হাজার বছর পিছিয়ে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ। পাশাপাশি অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্সের সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, লোগোতে হিন্দু দেবতা, দেশের নামের পরিবর্তন পূর্ণ গৈরিকীকরণের প্রচেষ্টা এবং বিজ্ঞান ও মানবতার চূড়ান্ত পরিপন্থী।