গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই ‘হাত’ছাড়া রাজস্থান, মমতাকে ‘নকল’ করে মধ্যপ্রদেশ-ছত্তিশগড়ে ‘বাজিমাৎ’ বিজেপির

৪ রাজ্য মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড় ও তেলেঙ্গানা বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশ হচ্ছে আজ। এখনও পর্যন্ত যা ট্রেন্ড তাতে এই ৪ রাজ্যেই ঘটছে পালাবদল। চারের মধ্যে à§© রাজ্যেই কংগ্রেসকে সরিয়ে ক্ষমতায় আসছে বিজেপি। এবং তেলেঙ্গানায় বিআরএসকে সরিয়ে ক্ষমতায় আসছে কংগ্রেস। তবে রাজস্থানে প্রথামাফিক পালাবদলের হিসেব থাকলেও, বাকি দুই রাজ্যে জয়ের পথে হাঁটতে থাকা বিজেপির সাফল্যের পিছনে মমতার ছায়া দেখছে রাজনৈতিক মহল। তা হল বাংলায় মমতার মস্তিষ্কপ্রসূত জনমুখি প্রকল্প ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের’ হুবহু নকল করে মধ্যপ্রদেশে ‘লাডলি বেহেন’ ও ছত্তিশগড়ে ‘মাহতারি বন্দন যোজনা’। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ধাঁচে এই দুই রাজ্যেই মহিলাদের মাসে à§§ হাজার টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল গেরুয়া শিবির। সেই প্রকল্পই এই দুই রাজ্যে বিজেপির জন্য তুরুপের তাস হয়ে উঠেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। পাশাপাশি রাজস্থানে কংগ্রেসের হারের পিছনে সরাসরি গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।

কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, রূপশ্রী, পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্ক প্রসূত এই সমস্ত মহিলামুখী প্রকল্পগুলোকে এক সময় ‘রেউড়ি রাজনীতি’ বলে কটাক্ষ করেছিল বিজেপি। অথচ ২৩-এর বিধানসভা নির্বাচনে মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ে হার নিশ্চিত বুঝে মমতার লক্ষ্মীর ভাণ্ডারকে হাতিয়ার করে নেয় গেরুয়া শিবির। মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান নির্বাচনের ঠিক আগে চালু করেন লাডলি বেহেনা প্রকল্প। যার মাধ্যমে মহিলাদের মাসে ১০০০ টাকা আর্থিক সাহায্য করা হয়। ভোটের আগে মমতার নকল করা এই প্রকল্প বিপুল সাড়া ফেলে দেয় মধ্যপ্রদেশে। প্রকল্পের সুবিধাভোগী প্রায় ১ লক্ষ মহিলাই বিজেপির জয়ের পথ পরিস্কার করে দিয়েছে বলেই দাবি রাজনৈতিক মহলের।

অন্যদিকে, একই অঙ্ক দেখা গিয়েছে ছত্তিশগড়েও। এখানেও নির্বাচনী ইস্তেহারে খোদ অমিত শাহ ঘোষণা করেন, বিজেপি ছত্তিশগড়ে ক্ষমতায় এলে এখানে বিজেপি সরকার প্রতিটি বিবাহিত মহিলাকে প্রতি বছর চেকের মাধ্যমে ১২ হাজার টাকা দেবে। এর পাশাপাশি ৫ বছরের জন্য স্বাস্থ্যপ্রকল্প দেওয়ার ঘোষণা করে বিজেপি। সরাসরি মমতার তরফে বাংলায় চালু করা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ও স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পকে নকল করে ছত্তিশগড়ে বিজেপির এই ঘোষণাই বিজেপির জয়ের পথ অনেকটাই পরিস্কার করে দিয়েছে বলে অনুমান রাজনৈতিক মহলের। এর পাশাপাশি ৩ রাজ্যে কংগ্রেসের হারের অন্যতম কারণ হিসেবে রাজনৈতিক মহলের অনুসন্ধানে উঠে আসছে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। রাজস্থানে কংগ্রেসের হারের পিছনে ঠিক এই কারণকে দায়ি করছে সংশ্লিষ্ট মহল। ৫ বছর অন্তর রাজস্থানে পালাবদলের একটি ট্রেন্ড তো ছিলই, তার উপর অশোক গেহলট ও শচিন পাইলটের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের কংগ্রেসের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতেছে রাজস্থানে। ভোটের ঠিক আগে গেহলট ও পাইলটের হাতে হাত রাখার ছবি যতই তুলে ধরা হোক না কেন শেষবেলায় তা আর কাজে আসেনি।

শেষ পাওয়া খবরে ট্রেন্ড বলছে, ১৯৯ আসনের রাজস্থানে ১১১ আসনে এগিয়ে বিজেপি, কংগ্রেস ৭৩ ও অন্যান্য ১৩। মধ্যপ্রদেশে ২৩০ আসনের মধ্যে ১৬২ আসনে এগিয়ে বিজেপি, কংগ্রেস ৬৬ ও অন্যান্য ২। ছত্তিশগড়ে ৯০ আসনের মধ্যে ৫৫ আসনে এগিয়ে বিজেপি, কংগ্রেস ৩২ ও অন্যান্য ৩। এবং একমাত্র তেলেঙ্গানায় সরকার গড়ার পথে কংগ্রেস। এখানে ১১৯ আসনের মধ্যে ৮ আসনে এগিয়ে বিজেপি, কংগ্রেস ৬৪ ও বিআরএস ৩৮, মিম ৬ ও অন্যান্য ২ টি আসনে এগিয়ে।