বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে অশালীন মন্তব্য, গিরিরাজের বিরুদ্ধে স্পিকারকে অভিযোগ সুদীপের

বাংলার মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অশালীন মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং। এরই প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে তৃণমূল। গিরিরাজের মন্তব্যের প্রতিবাদে এবার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে অভিযোগ জানালেন তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার লোকসভার প্রশ্নোত্তর পর্ব সমাপ্ত হওয়ার পরেই সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে আলাদা করে বৈঠকে ডেকে পাঠান স্পিকার। গিরিরাজ সিং-এর পাশাপাশি এদিন মহুয়া মৈত্রের বিষয় নিয়েও আলোচনা হয় ওম বিড়লা এবং সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

স্পিকারের ঘরে এদিন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ওম বিড়লার আলোচনার সময় উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী। সূত্রের খবর,আগামীকাল শুক্রবার লোকসভায় মহুয়া মৈত্রকে নিয়ে এথিক্স কমিটির রিপোর্ট পেশ হতে চলেছে। প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষ হওয়ার পরেই মহুয়াকে নিয়ে প্রস্তাবনা পেশ করে পদক্ষেপ করা হবে। সূত্রের দাবি, শুক্রবার দুপুরেই মহুয়ার বিরুদ্ধে ‘অর্থের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন’ শীর্ষক অভিযোগে আনুষ্ঠানিকভাবে রিপোর্ট পেশ করবে বিজেপি সাংসদ বিনোদ সোনকারের নেতৃত্বাধীন এথিক্স কমিটি। কমিটির সেই রিপোর্ট লোকসভায় পেশ হলে রেজলউশন বা প্রস্তাবনার মাধ্যমে সভার সদস্যদের সম্মতিতে এবং সম্ভাব্য ভোটাভুটির মাধ্যমে মহুয়ার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেবেন অধ্যক্ষ ওম বিড়লা। এই উপলক্ষে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে কেন্দ্রীয় শাসক দলও। সমস্ত বিজেপি সাংসদকে কাল বাধ্যতামূলক হাজিরা দেওয়ার জন্য জারি করা হয়েছে তিন লাইনের হুইপ। এ বিষয়ে থেমে নেই তৃণমূলও। শুক্রবার মহুয়ার ইস্যুতে ‘কাউন্টার স্ট্র‍্যাটেজি’ গড়ে তুলতে ইন্ডিয়া জোটের সদস্যদের সঙ্গেও আলোচনা শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল। মহুয়ার বিরুদ্ধে শাস্তি ঘোষণা হলে, লোকসভা থেকে ওয়াক আউট করে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে অবস্থান সত্যাগ্রহ করবে তৃণমূল। কংগ্রেস সহ ইন্ডিয়া দলগুলিও মহুয়া মৈত্র ইস্যুতে তৃণমূলের পাশে রয়েছে। এদিন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় স্পিকারকে মহুয়া ইস্যুতে আলোচনার জন্য সময় দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। যদিও মাত্র ৩০ মিনিটই সময় দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। তৃণমূলের তরফে ওই রিপোর্ট নিয়ে নিম্নকক্ষে আলোচনার দাবি জানিয়ে রাখা হয় স্পিকারের কাছে। এথিক্স কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে কোনও ‘একতরফা’ সিদ্ধান্ত যেন না নেওয়া হয়।

এদিন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাকে স্পিকারের দপ্তরের তরফে জানানো হয়, প্রশ্নোত্তর পর্বের পর আমি যেন দেখা করি। সেই মতো দেখা করি। মহুয়া মৈত্র সহ নানান বিষয়ে স্পিকারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। গিরিরাজ সম্পর্কে বক্তব্যটি আমি নিজে তুলেছি স্পিকারের কাছে। আমি বলেছি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্ত অভিনেতা অভিনেত্রীরা ছিলেন। সেই বিষয়টিকে অশ্লীলভাবে বলেছেন গিরিরাজ সিং। একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে এই ধরণের মন্তব্য করা উচিত নয় একজন ক্যাবিনেট মন্ত্রীর।”

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী বৈঠক সম্পর্কে আমার সঙ্গে গিরিরাজের এত কথা হল এবং পরে তিনি অস্বীকার করলেন। তিনি আমায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছেন। আমার বক্তব্য, এরমধ্যে আপত্তির কী আছে যে অস্বীকার করতে হল? আমি নিশ্চিত কলকাতা থেকে দিল্লি বিজেপির দপ্তরে বার্তা পাঠানো হয়েছে। সেই কারণেই মন্তব্য প্রত্যাহার করেছেন গিরিরাজ সিং।” মহুয়া মৈত্র প্রসঙ্গে সুদীপ বলেন, “প্রথম দিন সভার কার্যবিবরণী তালিকায় ৫ নম্বরে মহুয়া ইস্যু ছিল। আজ যখন স্পিকারকে বিষয়টি জানাই, তখনই আমায় বলা হল যে, শুক্রবার রিপোর্ট এবং তার সঙ্গে প্রস্তাবনা আনা হবে। আমি বলেছি যে, মহুয়া মৈত্রকে বলতে দিতে হবে এবং গোটা বিষয়টি আলোচনার জন্য সময় দিতে হবে। কারণ, ইন্ডিয়া জোটের সব দলই মহুয়া ইস্যুতে বক্তব্য রাখতে চায়।

Previous articleগঙ্গাসাগরের উন্নয়নে কেন্দ্রীয় অনুদানের দাবি! মোদির উপস্থিতিতে রাজ্যসভায় সওয়াল তৃণমূলের
Next articleঅবশেষে মিলল উত্তর, ভারতীয় জাদুঘর ভাঙা নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত মোদি সরকারের