জনধন অ্যাকাউন্ট নিয়ে তৃণমূল সাংসদ জহর সরকারের তোপের মুখে মোদি সরকার। অর্থ প্রতিমন্ত্রী ভগবৎ কারাডের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর বক্তব্য, খোদ অর্থ মন্ত্রকই জানিয়েছে ৫১ কোটি জনধন অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল, তার ১৮-২০ শতাংশেই কোনও লেনদেন হচ্ছে না। ওই সমস্ত অ্যাকাউন্টে রয়েছে ১১,৫০০ কোটি টাকা। যা প্রকল্পটির অধীনে ব্যাঙ্কে জমা হওয়া টাকার ৫.৬%।
কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তিনি নালিশ করেছিলেন, ১০ কোটিরও বেশি জনধন অ্যাকাউন্ট ভুয়ো। খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বিপুল সংখ্যক অ্যাকাউন্ট হোল্ডারকে। সেই সমস্ত অ্যাকাউন্টে যে টাকা পড়ছে, তার ভবিষ্যৎ কী? সেই টাকা কোথায় যাচ্ছে? এই মর্মে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন তৃণমূল সাংসদ জহর সরকার। এতদিনে তিনি সেই চিঠির জবাব পেলেন।
জবাবি চিঠিতে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ভগবত কারাড কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন, জনধন যোজনার ১০ কোটি অ্যাকাউন্ট ভুয়ো, অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের কোনও হদিশ নেই। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের সেই প্রাপ্তি চিঠিরই একটি প্রতিলিপি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ফের একবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন তৃণমূল সাংসদ।
দেশের সব মানুষকে ব্যাঙ্কিং পরিষেবার আওতায় আনতে টাকা রাখার বাধ্যবাধকতা না থাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট (জিরো ব্যালান্স) খোলার পরিকল্পনা করেছিল পূর্বতন ইউপিএ সরকার। তারা প্রকল্পটিকে পুরোপুরি কার্যকর করার আগেই ভোটে হারে।
কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনা নাম দিয়ে জিরো ব্যালান্স ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট প্রকল্প চালু করে মোদী সরকার। তা কেন্দ্রের বিভিন্ন ভর্তুকি প্রকল্প কার্যকরের জন্যও ব্যবহার হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ার এক্স হ্যান্ডেলে তৃণমূল কংগ্রেসকে ট্যাগ করে সাংসদ জহর সরকার লেখেন, ‘কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক মেনে নিয়েছে যে, ৫১ কোটি জনধন অ্যাকাউন্টের মধ্যে ২০ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ১০ কোটি অ্যাকাউন্টের কোনও হদিশ নেই। সেইসব অ্যাকাউন্টে কোনও লেনদেন হয় না। এই স্বীকারোক্তিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মেনে নিচ্ছেন যে, সরকারের ১১,৫০০ কোটি টাকা অব্যবহৃত ভাবে ব্যাঙ্কে পড়ে আছে। ২০১৪ সালের ২৮ অগস্ট প্রত্যন্ত এলাকার গরিব মানুষের কাছে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পৌঁছে দিতে চালু করা হয়েছিল জনধন যোজনা। জীবন জ্যোতি বিমা যোজনা, সুরক্ষা বিমা যোজনা, অটল পেনশন যোজনা ও মুদ্রা যোজনার মতো কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্পের ভর্তুকি উপভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দিতে এই অ্যাকাউন্টের ব্যবহার করে থাকে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই জনধন যোজনাতেই বাসা বেঁধেছে দুর্নীতি। সেই দুর্নীতিই প্রকট করলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ।
আরও পড়ুন- পূ্র্ব মেদিনীপুরের আরও একটি সমবায় নির্বাচনে জোড়াফুলের বি.পুল জয়! খালি হাতেই ফিরল রাম-বাম জোট