আনন্দপুরকাণ্ডে নয়া মোড়! ধৃ.তকে লাগাতার জে.রা পুলিশের, ফাঁ.সাতেই কি ধ.র্ষণের অভিযোগ?

কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) এক সূত্রের দাবি, ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি এই অপরাধের নেপথ্যে রয়েছে। মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে অপহরণের একটি পাল্টা অভিযোগ হাতে পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা।

আনন্দপুর (Anandapur) এবং নেতাজিনগর (Netaji Nagar) অপহরণ কাণ্ডের তদন্ত একযোগে যতই এগোচ্ছে, ততই সামনে আসছে একের পর এক হাড়হিম করা ঘটনা। প্রকাশ্যে আসছে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব। লালবাজার সূত্রে তেমনটাই খবর। এদিকে শুক্রবার রাতে গাড়িচালককেও (Driver) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রীতিমতো পরিকল্পনা করে ডেকে এনে মারধর করে যুবক ও তাঁর গাড়ির চালককে ঘরে আটকে রাখা হয়। ওই যুবকের গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে সিনেমা দেখে ও শহর ঘুরে শেষে তাঁর বিরুদ্ধেই ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করা হয়। আনন্দপুর ধর্ষণ-কাণ্ডের তদন্তে নেমে এমন তথ্য সামনে আসতেই কার্যত চোখ কপালে উঠেছে পুলিশকর্তাদের।

এদিকে কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) এক সূত্রের দাবি, ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি এই অপরাধের নেপথ্যে রয়েছে। মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে অপহরণের একটি পাল্টা অভিযোগ হাতে পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। সেখানে ধর্ষণ-কাণ্ডে অভিযুক্তদেরই অপহরণ করা হয়েছে বলে নেতাজিনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই অপহরণ মামলার তদন্তে নেমে শনিবার শৌভিক দাস মাল ওরফে সানি নামে এক জনকে গ্রেফতার করেছে লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখা। ধৃতকে রবিবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে তাঁর দশ দিনের পুলিশি হেফাজত হয়েছে। এদিকে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে নেতাজিনগরের অপহরণ-কাণ্ডের পাশাপাশি ধর্ষণ-রহস্যেরও একাধিক তথ্য হাতে পেয়েছেন তদন্তকারীরা।

লালবাজার সূত্রে খবর, অভিযুক্ত শৌভিক এবং তাঁর এক সঙ্গী যুবকের পরিকল্পনাতেই সিনেমার বিষয়ে কথা বলার অছিলায় বেহালার বাসিন্দা যুবককে গত সোমবার নেতাজিনগরে ডাকিয়ে আনা হয়। ওই যুবককে ফোন করেছিলেন শৌভিকই। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, শৌভিকের ফোন পেয়ে চালককে সঙ্গে নিয়ে গাড়ি নিয়ে চলে যান যুবক। এরপর ওই যুবক এবং তাঁর চালককে মারধর করে নেতাজিনগরের একটি ফ্ল্যাটে আটকে রাখেন শৌভিক ও তাঁর সঙ্গী যুবক। দু’জনকে ঘরের ভিতরে হাত-পা বেঁধে আটকে রেখে ওই যুবকের গাড়ি নিয়ে বেরোন শৌভিকেরা। তাঁদের সঙ্গী হন ধর্ষণের অভিযোগকারিণীও। তদন্তে জানা গিয়েছে, অভিযোগকারিণী শৌভিকের বন্ধুর সঙ্গে ওই দিন সন্ধ্যায় গড়িয়াহাট সংলগ্ন একটি মলে সিনেমাও দেখেন। তার পরে শৌভিককে সঙ্গে নিয়ে তিন জন বেরোন। গাড়ি নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে আনন্দপুর থানা এলাকায় ঘুরে বেড়ান অভিযোগকারিণী। পুলিশের সিসি ক্যামেরায় সেই ছবিও ধরা পড়েছে।

এসবের পরে ওই রাতে গাড়ির ভিতরে বেহুঁশ করে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে আনন্দপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন অভিযোগকারিণী তরুণী। অভিযোগে নাম দেওয়া হয় নেতাজিনগরের ফ্ল্যাটে আটকে থাকা বেহালার বাসিন্দা যুবক এবং চালকের বিরুদ্ধে। এদিকে তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, লকডাউনের আগে খাবারের হোম ডেলিভারির ব্যবসা ছিল শৌভিকের। বান্ধবীর মাধ্যমে বিক্রমের সঙ্গে তাঁর আলাপ। শৌভিককে নিজের একটা সিনেমার শ্যুটিং ইউনিটে কেটারিংয়ের টোপ দিয়েছিল বিক্রম। এমনকী তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এই কেটারিংয়ের বরাত বাবদ ১৫ লাখ টাকাও অগ্রিম পাঠানো হয়। কিছুদিনের মধেই অবশ্য মুম্বাই পুলিশের টিম হানা দেয় শৌভিকের কাছে।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পরিকল্পনা করেই বিষয়টি সাজিয়েছিলেন শৌভিকেরা। পুলিশের নজর ঘোরাতে এবং ধর্ষণের অভিযোগের প্রমাণ মজুত করতেই অপহৃতদের গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছিলেন তিন জন। তদন্তে উঠে এসেছে, তাঁরা একাধিক বার গাড়ি পাল্টান। মোবাইলের একাধিক সিম ব্যবহারের প্রমাণও হাতে উঠে এসেছে পুলিশের।

 

 

 

Previous articleকতটা ফিট হার্দিক, কবে ফিরবেন মাঠে? জানালেন বোর্ড সচিব জয় শাহ
Next articleগেরুয়া প্রভাবে পরিবারতন্ত্রেই আস্থা মায়াবতীর! লোকসভার আগে দলের নতুন কোঅর্ডিনেটর ঘোষণা