“৩৭০ ধারা প্রয়োগ চিরস্থায়ী নয়, শীঘ্রই নির্বাচন”: জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফেরানোর ‘সুপ্রিম’ নির্দেশ

দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি সঞ্জয় কিষান কউল, বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি সূর্য কান্তের বেঞ্চ দীর্ঘ ১৬ দিন শুনানি পর্ব চলার পর এই রায়দান করেন।

৩৭০ অনুচ্ছেদ (Article 370) জম্মু ও কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) জন্য একটি সাময়িক মর্যাদা ছিল। সোমবার মামলার রায় ঘোষণা করতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court of India) প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেন, জম্মু ও কাশ্মীর ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রে সামিল হওয়ার পর তার আর সার্বভৌমত্ব ছিল না। দেশের শীর্ষ আদালত আরও জানিয়েছে, উপত্যকায় সংবিধানের ৩৭০ ধারা প্রয়োগ করে যে ব্যবস্থা জারি ছিল তা চিরস্থায়ী ছিল না। পাশাপাশি সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জম্মু এবং কাশ্মীর ভারতেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ বলেই এদিন স্পষ্ট জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে সোমবার ৩৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে শীর্ষ আদালতের বেঞ্চে তিনরকম রায় এসেছে বলেই ইঙ্গিত দেন দেশের প্রধান বিচারপতি। এছাড়া এ দিন শীর্ষ আদালতের তরফে জানানো হয়, জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে হবে। তবে সুপ্রিম রায়ের পর বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, জনবিন্যাস কিংবা জনসংখ্যার ভিত্তিতে নয়, রাজনৈতিক কারণেই বিধানসভায় জম্মুর জন্য আসন বাড়িয়ে উপত্যকাকে কব্জা করতে চাইছে বিজেপি।

এদিন রায় ঘোষণা করতে গিয়ে শীর্ষ আদালতের তরফে যা যা জানানো হয়েছে

• জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে হবে
• যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণেই জম্মু ও কাশ্মীরে সংবিধানের ৩৭০ ধারা প্রয়োগ করা হয়েছিল
• ৩৭০ অনুচ্ছেদ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ছিল না
• ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভার নির্বাচন করাতে হবে
• কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবেই থাকবে লাদাখ
• জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা থাকবে কি থাকবে না সে ব্যাপারে দেশের রাষ্ট্রপতি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা একেবারে সঠিক
• সংবিধানের ৩৭০ (১)(ডি) ধারা প্রয়োগ করে ভারতের সংবিধানের সমস্ত ধারা জম্মু ও কাশ্মীরে প্রয়োগ করা যাবে
• ভারতে অন্তর্ভূক্তির পর জম্মু-কাশ্মীরের কোনও অভ্যন্তরীণ সার্বভৌমত্ব গুরুত্ব রাখে না
• সংবিধানের ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করা হলে কেন্দ্রকে অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সব সিদ্ধান্তকেই আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৫ অগাস্ট কাশ্মীর নিয়ে বড় ঘোষণা করে মোদি সরকার (Modi Govt)। বাতিল করা হয় ভূস্বর্গের ‘বিশেষ মর্যাদা’। ৩৭০ অনুচ্ছেদ এবং ৩৫-A অনুচ্ছেদ রদ করার ঘোষণা করে কেন্দ্র। জম্মু-কাশ্মীরকে ভেঙে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি করা হয়। তারপর কেটে গিয়েছে চার চারটি বছর। মোদি সরকারের সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতাতেই একাধিক মামলা দায়ের হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় একাধিক পিটিশনে। সেই নিয়েই চূড়ান্ত রায় ঘোষণা শীর্ষ আদালতের। এদিন দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি সঞ্জয় কিষান কউল, বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি সূর্য কান্তের বেঞ্চ দীর্ঘ ১৬ দিন শুনানি পর্ব চলার পর এই রায়দান করেন।

 

 

 

 

Previous articleকাটল আ.তঙ্ক, মৈপীঠের লোকালয় থেকে জ.ঙ্গলে ফিরল বাঘ
Next articleগোলাপি বলের ভবিষ্যৎ কি, কী ভাবছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড? জানালেন বিসিসিআই সচিব জয় শাহ