বাংলাদেশের নির্বাচনের আগে উ.দ্ধার মুঙ্গেরি ‘পেন পি.স্তল’

কিন্তু ওই বোতামে চাপ দিলেই কলম নিমেষে বদলে যাবে আগ্নেয়াস্ত্রে। আর  এক বোতামের চাপেই কেল্লা ফতে!

বাংলাদেশের নির্বাচন ঘিরে সাজ সাজ রব, আর সেই আবহেই বাংলায় উদ্ধার হল মুঙ্গেরি ‘পেন পিস্তল’।দেখতে ছোট্ট একটি কলম।অন্যান্য কলমের মতো তার মাথাতেও রয়েছে খাপ। রয়েছে বোতামের মতো একটি বস্তুও। কিন্তু ওই বোতামে চাপ দিলেই কলম নিমেষে বদলে যাবে আগ্নেয়াস্ত্রে। আর  এক বোতামের চাপেই কেল্লা ফতে!

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুঙ্গেরি ‘পেন পিস্তল’ কলকাতা ও সীমান্তবর্তী জেলা হয়ে বাংলাদেশে পাচারের ছক চলছে।মাত্র ২৫ হাজার টাকা খরচ করলেই হাতে পৌঁছে যাচ্ছে নয়া পদ্ধতিতে তৈরি মুঙ্গেরি আগ্নেয়াস্ত্র। সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনা  থেকে এমনই চারটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। এক অস্ত্র পাচারকারীকে জেরা করে এই ব‌্যাপারে বেশ কিছু তথ‌্য পান রাজ‌্য পুলিশের গোয়েন্দারা। সেই সূত্র ধরে বিহারের জামালপুর থেকে তিন পাচারকারীর কাছ থেকে উদ্ধার হয় সাতটি ‘পেন পিস্তল’।

জানা গিয়েছে, এই রাজ্যের গোয়েন্দাদের কাছ থেকে তথ‌্য পেয়েই বিহারের জামালপুর থেকে উত্তর ২৪ পরগনার দুই কুখ‌্যাত অস্ত্র পাচারকারী আরমান ও বিলালকে ওই পেন পিস্তল-সহ গ্রেফতার করে বিহার পুলিশ। যদিও রাজ্যের গোয়েন্দাদের মতে, এই রাজ‌্য থেকে কোনও ‘পেন পিস্তল’ এখনও উদ্ধার না হলেও গোপনে আগে তা পাচার হয়েছে, এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। সামনেই বাংলাদেশের ভোট। তার আগে গোপনে সীমান্ত পেরিয়ে চোরাপথে বাংলাদেশে এই অতি ছোট মাপের পিস্তল পাচারের ছক চলছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বস্তুটি দেখতে অবিকল কলমের মতো। একটু ভারী। তবে সহজেই রাখা যায় বুকপকেট বা প‌্যান্টের পকেটে। আবার রাখা যায় পেনের বাক্সেও। খুব ভালভাবে না লক্ষ‌্য করলে কারও পক্ষেই বোঝা সম্ভব নয় যে সেটি একটি মারণাস্ত্র হয়ে উঠতে পারে। আবার শুধু উপরের খাপ খুললে দেখা যায়, তাতে পেনের নিব নেই। তার বদলে রয়েছে নল। সেখান দিয়ে ভরা যায় একটি বুলেট  প্রয়োজনমতো সেই বুলেট ৭.৬৫ মিমি বা ৯ মিমি হতে পারে। স্প্রিংয়ের সঙ্গে আটকে যায় বুলেটটি।

এর পর ট্রিগার টানা তথা বোতাম টেপার পালা। গোয়েন্দাদের মতে, এই মুঙ্গেরি পিস্তল দূর থেকে ‘ট্রিগারিং’ করলে তা ধরাশায়ী করতে পারে যে কোনও ব‌্যক্তিকে। আর একটু কাছে বা পয়েন্ট ব্ল‌্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে তা ব‌্যবহার করলে ঘটতে পারে মৃত্যুও। শুধু ব‌্যক্তিগত কারণে হামলা নয়, কোনও জঙ্গি সংগঠন ‘লোন উলফ অ‌্যাটাক’ করার ছক কষলে অতি সহজেই ব‌্যবহার করতে পারে এই পেন পিস্তল। বহু বছর আগেও এই পিস্তল ব‌্যবহার করা হয়েছে। যদিও এখন পালটেছে তার প্রযুক্তি  এই পিস্তল হয়েছে অনেক আধুনিক।

পুলিশ সূত্র থেকে জানা গিয়েছে,  মুঙ্গেরের একটি বেআইনি অস্ত্র কারখানায় তৈরি সাতটি পেন পিস্তল তাদের সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। একেকটির দাম ধরা হয় ১৫ হাজার টাকা করে। সেই পিস্তল কলকাতায় নিয়ে এসে একেকটি ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করার ছক কষে আরমান ও বিলাল। জামশেদ নামে এক পাচারকারী তাদের এই পেন পিস্তলগুলি দেয়। তারা পুরো টাকা নগদে মেটায়। এর পর জামশেদের বাইকে করে তারা জামালপুর স্টেশনে আসে। স্টেশনে প্রবেশ করার আগেই তিনজন হাতেনাতে ধরা পড়ে বিহার পুলিশের হাতে। তাদের কাছ থেকে ১৪টি বুলেটও উদ্ধার হয়। গোয়েন্দাদের দাবি, চক্রটি বাংলাদেশের এজেন্টদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখে।

 

Previous articleবিশ্বকাপে ব‍্যর্থ শাকিবরা, বড় সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের
Next articleফের কোভিড আতঙ্ক! মাস্ক ফিরছে বিশ্ব জুড়ে