কালীদাস হয়ে যাচ্ছেন রাজ্যপাল। নিজের গাছের ডাল নিজেই কাটছেন তিনি। প্রশাসন চালাতে যে দক্ষতার প্রয়োজন হয় তা রাজ্যপালের নেই। রবিবার, সাংবাদিক বৈঠকে এভাবেই যাদবপুরের সমাবর্তন নিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে এভাষাতেই তুলোধনা করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। যেভাবে রাজ্যপাল উপাচার্যকে অপসারণ করেছেন তা আইনের পরিপন্থী বলেও এদিন জানান তিনি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মুখ্যমন্ত্রীকে অগ্রাহ্য করছেন রাজ্যপাল। আমি বাকি উপাচার্যদের বলব তারাও গলা ধাক্কা খেতে পারেন। আমি অনুরোধ করব ওদের মুখের উপর পদত্যাগ পত্র ছুড়ে দিন।

এরপর এই রাজ্যপালকে তীব্র কটাক্ষ করে ব্রাত্য বসু বলেন, উনি প্রমোশন চাইছেন উপরাষ্ট্রপতি না হলেও যাতে সমতুল্য কোনও পদ পাওয়া যায় সেই চেষ্টায় উনি করছেন। প্রশাসন চালাতে যে দক্ষতার প্রয়োজন হয় তা রাজ্যপালের নেই। নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা এক আশ্চর্য মানুষ তিনি ওঁনার বিদায় আসন্ন।

রাজ্যপালের যাবতীয় কার্যকলাপের জন্য অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান। তবে সেই সমস্ত কিছুকে সরিয়ে রেখে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় সমাবর্তন অনুষ্ঠান। যদিও এদিনের অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, ইউজিসি চেয়ারম্যান। বিতর্ক এড়াতে এদিন ডিগ্রি প্রদান করেন সহ-উপাচার্য। সমাবর্তনের আগের দিন রাতেই অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউকে অপসারণ করেন রাজ্যপাল। কিন্তু উপাচার্য না থাকলে সমাবর্তন হতে পারে না। তাই উচ্চ শিক্ষা দফতর রবিবারের জন্য বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছিল অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে।

রবিবার সমাবর্তনের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোর্ট মিটিং শুরু হয়। সেই বৈঠকে দুই পক্ষের চিঠিই পেশ করা হয়। তারপর উপাচার্যের উপস্থিতিতেই শুরু হয় সমাবর্তন। নির্ধারিত সময়ের কিছুটা পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন এয়ার থিয়েটারে। সেখানে যদিও পৌরোহিত্য করেন রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু। সহ-উপাচার্য অমিতাভ দত্ত পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেন শংসাপত্র। পাশেই বসে থাকেন বুদ্ধদেব সাউ।

এদিকে যেভাবে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আগের দিন রাতে উপাচার্যকে অপসারণ করল রাজভবন একেবারে ই সুপ্রিম কোর্টের আইনের পরিপন্থী বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এদিন তিনি জানান, সুপ্রিমকোর্ট বলেছেন কোনও উপাচার্যকেই রাজ্যপাল বরখাস্ত বা নিয়োগ করতে পারবেন না। চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে এই কথা। সেক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের আইন অনুযায়ী কেউই বরখাস্ত হননি। ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা ভাবতে চাই। উনি যা করছেন তা উচ্চ শিক্ষার জন্য ভয়াবহ ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎকে অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে পরিকল্পনা মাফিক।

আরও পড়ুন- গীতাপাঠকে চ্যালেঞ্জ জানানো বৃথা, সংবিধানপাঠের আসর জমাতে পারল না কংগ্রেস
