রাজ্যপাল অপসারণ করলেও রাজ্যের চিঠি হাতিয়ার করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) সমাবর্তনে পৌরহিত্য করলেন ‘বহিষ্কৃত’ উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ। সমাবর্তন নিয়ে শনিবার রাত থেকে তীব্র টানাপোড়েন। প্রথমে নিজের নিযুক্ত অস্থায়ী উপাচার্যকে আচমকা সমাবর্তনের আগের রাতে পদ থেকে অপসারণ করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)। কিন্তু রবিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্টের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যাটু মেনে উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউয়ের সভাপতিত্বেই সমাবর্তন হবে। তবে, আচার্য তথা রাজ্যপাল এদিনের অনুষ্ঠানে যোগ দেননি। সেই কথা সরকারিভাবে শনিবার জানানো হয় রাজভবন থেকে। তবে, মঞ্চে আচার্যের চেয়ার শূন্যই থাকে। এদিকে এদিন কলকাতায় থাকলেও সমাবর্তন আসেননি ইউজিসি-র চেয়ারম্যানও৷
সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বুদ্ধদেব সাউ জানান, রাজভবনের চিঠি তিনি গ্রহণ করেননি। তাঁর কথায়, ‘‘কী কারণে হয়েছে সেটা লেখা নেই। যিনি চিঠি পাঠিয়েছেন তাঁকে জিজ্ঞাসা করুন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার আমাকে কন্টিনিউ করার চিঠি দিয়েছে। আমি দু’টো চিঠি কোর্ট মিটিং-এ রেখেছি। কোর্ট মিটিং-এ যেটা বলেছে আমি সেটাই করেছি। ছাত্রদের স্বার্থ সবার ঊর্ধ্বে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অথরিটি কোর্ট। উপাচার্য হিসাবে কাজ চালিয়ে দেওয়ার জন্য সমাবর্তনে।’’
আচার্যের নির্দেশ না মেনে সমাবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণেই বুদ্ধদেবকে বহিষ্কার করা হচ্ছে রাজভবনের তরফে দাবি করা হয়। এরপরেই উপাচার্যের মেয়াদবৃদ্ধি করে চিঠি পাঠায় রাজ্য। রাজভবনের চিঠিতে লেখা হয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) সমাবর্তনের অনুষ্ঠান হলে, তার খরচ কাটা হবে উপাচার্যের বেতন থেকে। এ বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘‘আমি কি আইনের ঊর্ধ্বে? দেশের আইন কানুন আছে। বেতন যদি কেটে নিতে চান, তাহলে কাটতেই পারেন। তদন্ত তো আমি চাই। আমার অনেক পরিশ্রম হয়েছে। এবার আমি ঘুমোবো। সমাবর্তনটা আমি ছাত্রদের জন্য করেছি। আমি উপাচার্য পদের জন্য লালায়িত নই। আমি রাজ্যপালকে ধন্যবাদ জানাই। আমি রাজ্য সরকারকেও ধন্যবাদ জানাই৷’’
আইনি জটিলতা থাকায় এদিন ছাত্রছাত্রীদের হাতে ডিগ্রি তুলে দেন যাদবপুরের সহ-উপাচার্য৷