নতুন বছরে ‘বিবেক’ দর্শন, স্বামীজির ১৬১-তম জন্মবার্ষিকীতে বিশেষ তথ্যচিত্র 

এই ছবি দেখার পর 'বিবেক' জাগ্রত হবে নবীন প্রবীণ সব প্রজন্মেরই, আশাবাদী প্রত্যেকেই।

অধ্যাত্মবাদের অবিস্মরণীয় আইকন, যুবসমাজের পথ প্রদর্শক স্বামী বিবেকানন্দের কর্ম ও বাণীকে সমাজের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে ধ্বনি দৃশ্য মাধ্যমে মুক্তি পেতে চলেছে ‘বিবেক’। ৮০ মিনিটের স্বল্প দৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্র প্রযোজনায় রয়েছে অম্বুজা নেওটিয়া গ্রুপ। পরিচালনার দায়িত্বে বাংলা তথা দেশের অন্যতম টেলিভিশন ও মিডিয়া বিশেষজ্ঞ অভিজিৎ দাশগুপ্ত। ডকু ফিচারে ‘নরেন’ থেকে ‘স্বামী বিবেকানন্দ’ হয়ে ওঠার সফর যেমন ধরা পড়েছে ঠিক তেমনই স্বামীজির কর্মভূমি আর আদর্শের কথাও বলা হয়েছে। পরিচালক তুলে ধরেছেন সিমলা স্ট্রিটের অন্দরে বড় হওয়া নরেনের শৈশবকে, বিবেকানন্দ হয়ে শিকাগোর সভা কিংবা তারও আগে পোরবন্দর, মাউন্ট আবু, কেপটাউন জুড়ে ধর্ম শিক্ষা দান, শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসের যোগ্য উত্তরসূরী হয়ে ওঠার সফরকে। সমাজের বুকে নারী ক্ষমতায়নের যে বীজ রোপণ করেছিলেন বিবেকানন্দ তা যেন সমাজের জাগ্রত বিবেকের পথ প্রদর্শক। এই প্রজন্মকে তাঁদের মতো করেই স্বামীজির দর্শন বোঝাবে এই তথ্যচিত্র।

স্বামী বিবেকানন্দ প্রাচীন সময়ের মানুষ নন, তিনি যে আজও কতটা প্রাসঙ্গিক তা তাঁর ১৬১ তম জন্মশতবর্ষে এসে মানুষ বুঝতে পারছেন। এদিন প্রেস ক্লাবে তরুণ গোস্বামী সেই কথাই বললেন। তিনি জানান, মৃত্যুর পর স্বামীজির প্রভাব কী গভীর হতে পারে সেটা হাড়ে হাড়ে অনুভব করেছিলেন ব্রিটিশরা। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আদর্শ, অনুপ্রেরণা ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। কিন্তু এই প্রজন্ম যেহেতু রিলস- আর সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশি আকর্ষণ বোধ করে তাই তাদের মতো করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ‘বিবেক’কে তুলে ধরেছেন অভিজিৎ দাশগুপ্ত। প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিস সুর বলেন, অন্যান্য সাংবাদিক সম্মেলনের থেকে এই অনুষ্ঠান অনেকটাই আলাদা। তিনি প্রশ্ন তোলেন, আমরা প্রাচ্যে স্বামীজির চর্চা কতটা করতে পারছি সেটা জানা দরকার। রামকৃষ্ণ মঠ নিরলস ভাবে ঠাকুর মা স্বামীজির কথা প্রচার করছেন, সাধনা করছেন। কিন্তু তরুণ প্রজন্মকে ডিজিটাল মাধ্যমে বিবেকানন্দের প্রতি আগ্রহী করে তোলার লক্ষ্য নিয়েছেন হর্ষবর্ধন নেওটিয়া ও বাংলা তথা দেশের টেলিভিশন ও মিডিয়া বিশেষজ্ঞ অভিজিৎ দাশগুপ্ত। রামকৃষ্ণ মঠ মিশনের সাতজন সন্ন্যাসী এই চিত্রনাট্য তৈরিতে সহায়তা করেছেন। পরিচালক বলছেন, এই প্রজন্ম শর্ট অ্যাটেনশিন সিনড্রোমে ভুগছে। পূর্ব ভারতের থেকে এমনকি কলকাতার থেকেও বাইরের রাজ্যে ও বিদেশে নরেনকে ঘিরে আগ্রহ অনেক বেশি। চিনে বিবেকানন্দ সেন্টার খোলার প্রস্তাব পেয়েছে রামকৃষ্ণ মিশন। বর্ষীয়ান পরিচালক বলেন, আমাদের এখানে বিবেকানন্দকে নিয়ে তথ্য আদান প্রদান যেমন হয়, তেমনি অপপ্রচার করা হয় তাঁর বাণী ও ধর্মপথের। সেইসব দূরে সরিয়ে আসল স্বামীজিকে চিনতে সাহায্য করবে এই তথ্যচিত্র।

ধ্বনি দৃশ্য মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্বামীজিকে নিয়ে কাজ করার সাহস দেখিয়েছেন হর্ষবর্ধন নেওটিয়া। তিনিই প্রযোজক। নিজের কিশোর বয়সের ঘটনা উল্লেখ করে বলেন তাঁর প্রপিতামহ প্রতি সপ্তাহে গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশনে যেতেন। সেখান থেকেই স্বামীজির সঙ্গে পরিচয়। এই চিত্রনাট্যে ভয়েস ওভার করেছেন তিনি। অভিজিৎ দাশগুপ্ত এর আগে ‘নরেন’ নামের শর্টফিল্ম করেছেন যা এখন ইউটিউবে উপলব্ধ। সেখান থেকেই বিশেষ দৃশ্য সংযোগ – বিয়োগের মাধ্যমে এই ফিচার তৈরি করা হয়েছে। এই ছবি দেখার পর ‘বিবেক’ জাগ্রত হবে নবীন প্রবীণ সব প্রজন্মেরই, আশাবাদী প্রত্যেকেই।

Previous articleস্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে বোমা বি.স্ফোরণে প্রা.ণ গেল দ্বিতীয় শ্রেণীর পড়ুয়ার, গু.রুতর আ.হত ২
Next articleপ্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে জয় পেয়ে নজির গড়ল টিম ইন্ডিয়া, কোন রের্কড গড়লেন রোহিতরা?