ব্রাত্যর প্রশ্ন, কুণালের জবাব: জমজমাট ‘গল্পের জন্মকথা’

কোথা থেকে রসদ পাও লেখার? চরিত্রগুলি কি দেখেছো নাকি? প্রশ্ন করছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। আর জবাব দিচ্ছেন সাহিত্যিক-সাংবাদিক কুণাল ঘোষ। এ যেন রোল-বদল। আর তাতেই জমে উঠল ‘গল্পের জন্মকথা’।

শনিবার, বাংলা আকাদেমিতে সাহিত্য উৎসব ও লিটল ম্যাগাজিন মেলা। আর সেখানেই সাংবাদিক সাহিত্যিক কুণাল ঘোষ জানালেন, কেন এতগুলি উপন্যাস-গল্প লেখার কথা মনে হল তাঁর? সেই আলাপচারিতার মধ্যেই উপস্থিত হন শিক্ষামন্ত্রী। লেখক-নাট্যকার-অভিনেতা ব্রাত্য জানান, তিনি কুণালের লেখার একনিষ্ঠ পাঠক, ভক্তও। কুণালের গল্পে কী দাপটে রাজনীতিবিদদেরও স্থান হয়েছে, যাঁদের সঙ্গে রাজনীতিক জীবনে কুণালের যোগাযোগ হয়েছে? উত্তরে কুণাল ঘোষ জানান, হয়েছে। তবে অন্য আঙ্গিকে। এরপর উঠে আসে কুণালের একের পর এক বইয়ের প্রসঙ্গ। উঠে আসে তাঁর বন্দি জীবনের কথা। ব্রাত্য জানতে চান, ‘বন্দির ডায়েরি’ বইটা কোন একটা কারাগারেই লিখেছিলেন? না পরে? কুণালের সদ্য প্রকাশিত, ‘পথের বাঁকে এসে’ উপন্যাসের নিয়েও আলোচনা চলে।

“আমি সাহিত্যের পাঠক। ছিলাম সাংবাদিক। কিন্তু সাংবাদিক শুধু খবর লেখে, আনুষাঙ্গিক ঘটনা লেখেন সাহিত্যিক।“ অভিজ্ঞতার সেই ঝুলি উপুড় করে দিতেই কলম ধরেন সাহিত্যিক কুণাল ঘোষ। দীর্ঘ সাংবাদিক জীবন। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনার সাক্ষী কুণাল ঘোষ। জীবনে এসেছে নানা ঝড়। কিন্তু সেখান থেকেই লেখার রসদ খুঁজে পান। জানালেন লেখক কুণাল। তাঁর কথায়, আমি কাদের জন্য লিখছি তার ধারণা থাকা দরকার। সাংবাদিক হিসেবে যখন কোনও স্টোরি কভার করতে যাচ্ছেন, তখন শুধু ঘটনাটাই লেখা যাচ্ছে সংবাদ মাধ্যমে। কিন্তু যিনি গাড়ির চালক বা চায়ের দোকানির অনেক গল্প থাকে। তাঁর মনে হয়, দৈনিন্দিন খবর লিখে যা পাঠাচ্ছি, তার অনেক কিছুই রোজকার খবরে স্থান পাচ্ছেন না। তাঁদের কথা লিখতেই কলম ধরেন সাহিত্যিক কুণাল। মনে হয় গল্প লিখলে কেমন হয়- যেখান কাল্পনিক চরিত্র থাকবে।

কয়েকদিনের মধ্যেই কুণাল ঘোষের গল্পের সংকলন প্রকাশ পাবে- ‘বাছাই বিশ’। কুণাল জানান, কোনও চরিত্র বা ঘটনাকে আবিষ্কার করে পুর্নির্মাণ করে নিজের মতো করে লেখেন তিনি। তবে, লেখক যে গল্পটা বলতে চাইছেন তার সঙ্গে পাঠক একাত্ম না হলে লেখা বৃথা।

নানা টানাপোড়েন বেশ কিছুদিন কারাগারে কাটাতে হয়েছে কুণাল ঘোষকে। এদিন, তিনি বলেন, বন্দি জীবনকে কৃতজ্ঞতা জানাব। তার আগে খবরের জন্যে অন্য লেখায় সময় দিতে পারিনি। জেলে বসেই অনেক ঝড়-ঝাপ্টার মধ্যেও বিভিন্ন চরিত্রকে নিয়ে উপন্যাস লেখা শুরু করেন কুণাল। পরে প্রকাশিত হয় পর পর উপন্যাস, গল্পের সংকল্প। মাওবাদীদের স্টোরি করতে যাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন কুণাল।

বাংলা আকাদেমিকে ধন্যবাদ জনাতে যাবেন তখনই উপস্থিত হন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর সঙ্গেও লেখালেখি নিয়ে কুণালের আলাপচারিতায় জমে ওঠে ‘গল্পের জন্মকথা’।

আরও পড়ুন- সাংবাদিক যা লিখতে পারেন না, তাই লেখেন সাহিত্যিক! বই লেখা নিয়ে জানালেন কুণাল