গঙ্গাসাগরে এক ঢিলে দুই পাখি প্রশাসনের, বিশেষ পরিচ্ছন্নতার উদ্যোগ

সব ধরনের জৈব বর্জ্য সংগ্রহ করে তার সঙ্গে ব্যাকটেরিয়া ও গোবর মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে জৈবসার।

হাঁটতে গেলে ময়লায় পা, স্নানে গেলে নোংরার দৃশ্যে অভক্তি – এই ছবি খোলনলচে বদলে গিয়েছে গঙ্গাসাগরে। ‘সেই’ গঙ্গাসাগর যে আর নেই তা শুধু ছবিতে না, পুণ্যার্থীদের চোখের ভাষাতেও স্পষ্ট। লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীকে যেমন আলিঙ্গন করে সব তীর্থের সেরা তীর্থ গঙ্গাসাগর, তেমনই তাঁদের সেরা পরিষেবাটুকুও দিতে সদাব্যস্ত প্রশাসন। এবারের মেলায় পরিচ্ছন্নতার কথা ভেবে নেওয়া হয়েছে এক অভিনব পদক্ষেপ, যাতে এক ঢিলে দুই পাখি মারা সম্ভব। মেলার যাবতীয় জৈব বর্জ্য সংগ্রহ করে নেওয়া হল জৈবসার (fertilizer) তৈরির উদ্যোগ।

রাজ্য সরকার আগেই গঙ্গাসাগর মেলাকে গ্রিনমেলা ঘোষণা করেছিল। এখানে প্লাস্টিক ও থার্মোকলের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ। মেলায় বিভিন্ন খাবারের দোকান বা সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্যও মিলছে শালপাতার থালা, বাটি। প্রতিদিনের এই ধরনের জৈব বর্জ্য সংগ্রহের জন্য় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহযোগিতায় প্রতিদিন মেলায় ঘুরছে ৭৫ জন স্বেচ্ছাসেবক। সব ধরনের জৈব বর্জ্য সংগ্রহ করে তার সঙ্গে ব্যাকটেরিয়া ও গোবর মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে জৈবসার। এবছর এত সংখ্যক পুণ্যার্থী মেলায় আসছেন যে জৈবসারের পরিমাণ ৮ মেট্রিক টনের বেশি সার তৈরির হওয়ার আশা করছেন দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা প্রশাসন।

তবে শুধু পচনশীল বর্জ্য (bio-degradable waste) না, এবছর পুণর্ব্যবহারযোগ্য বর্জ্য (re-usable waste) থেকেও বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা সংগ্রহ করছেন পড়ে থাকা কাপড়। তৈরি করবেন পাপস। আবার কাঁচের বা প্লাস্টিকের বোতল থেকে তৈরি করবেন তাঁরা ঘর সাজানোর জিনিস। প্রশাসনের স্বেচ্ছাসেবী দল সাধারণ মানুষকে সচেতন করার কাজ করছেন। মেলায় তৈরি হয়েছে ১০ হাজার বায়ো টয়লেট (bio-toilet)। সেগুলি ব্যবহারের জন্য সতর্ক করা হচ্ছে সাধারণ পুণ্যার্থীদের। সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা দাবি করেন পুণ্যার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত টয়লেট ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিচ্ছন্নতার এই উদ্যোগে যথেষ্ট স্বচ্ছন্দবোধ করছেন পুণ্যার্থীরাও।