কালীঘাটে পুজো দিয়ে সংহতি যাত্রা মমতার, নেতৃত্বে অভিষেকও: জনপ্লাবনে ভাসল রাজপথ

ধর্মের নামে কোনও ভেদাভেদ নয়, বাংলাজুড়ে সম্প্রীতির বার্তা দিতে পথে নামলেন তৃণমূল (TMC) সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, তিনটের কিছু আগেই কালীঘাট মন্দিরে পৌঁছন তৃণমূল সুপ্রিমো। সেখানে পুজো দেন তিনি। এরপর হাজরা মোড় থেকে শুরু হয় সংহতি ব়্যালি। নেতৃত্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। রাজনৈতিক কর্মসূচি না হলেও, লোকসভা নির্বাচনের আগে এটা তৃণমূলের জনসংযোগ বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।

সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তা দিতে রাজ্যজুড়ে সম্প্রীতি যাত্রা ডাক দেন মমতা। হাজরা পার্ক থেকে  রাজপথে সংহতি মিছিল শুরু হয়। মিছিলের সামনের সারিতে ছিলেন সব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা। তৃণমূলের কোনও নেতা-নেত্রী ছিলেন না। এমনকী, অভিষেকও ছিলেন না প্রথমের দিকে। তৃণমূল সভানেত্রী আগেই জানিয়ে ছিলেন এটা কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়। সেই মতোই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব এগোয় মিছিল। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ইন্দ্রনীল সেন ও বিধায়ক দেবাশিস কুমারকে দেখা যায় পদযাত্রাকে সামনে থেকে সুষ্ঠুভাবে এগোনোর জন্য পরিচালনা করতে।

ওই মিছিল থেকে একটু পিছনে রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে মিছিলে পা মেলান অভিষেক। সঙ্গে ছিলেন সাংসদ শান্তনু সেন, মন্ত্রী সুজিত বসু, কৃষ্ণ চক্রবর্তী, অন্যন্যা বন্দ্যোপাধ্য়ায়-সহ তৃণমূল নেতৃত্ব।   তবে, সংহতি যাত্রায় সব থেকে বেশি নজরে পড়ে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি। যত মিছিল এগোয়, ততই মিছিল বড় হতে থাকে। মিছিলের মাথা যখন বালিগঞ্জ ফাঁড়ি পৌঁছয়, তখনও মিছিলের ল্যাজ থাকে হাজরা পার্কেই। যে সংখ্যক মানুষ মিছিলে পা মেলাবেন বলে আশা ছিল, তার থেকেও অনেক বেশি লোক সমাগম হয়। জনপ্লাবনের আকার নেয় কলকাতা দক্ষিণের রাজপথ।

হাজরা পার্ক থেকে মিছিল শুরু করে বালিগঞ্জের গড়চা রোডের কাছে গুরুদ্বারে পৌঁছন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মিছিলকে গড়চা রোডের মুখে রেখে মহিলা নিরাপত্তা রক্ষীর স্কুটিতে চেপে গুরুদ্বার যান তৃণমূল সুপ্রিমো। ভিতরে ঢুকে প্রণাম করে বেরিয়ে আসেন। সেখান উপস্থিত সকলের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময়ও করেন। ফের স্কুটিতে চড়ে মিছিলে ফিরে আসেন। মমতা আসতেই ফের মিছিল শুরু হয়। মিছিলে বাজানো হয় রাজ্য সংগীত, “বাংলার মাটি বাংলার জল”। তবে কোনও রাজনৈতিক স্লোগান শোনা যায়নি।

 

পার্কসার্কাসের কাছে এসে লেডি ব্র্যাবোর্ন কলেজের কাছে ক্যাথলিক চার্চে ঢোকেন তৃণমূল সভানেত্রী। তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে ও ফুল দিয়ে স্বাগত জানায় চার্চ কর্তৃপক্ষ। এরপরে গির্জার ভিতরে ঢুকে প্রার্থনা করেন মমতা। চার্চে উপস্থিত ধর্মযাজকদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করে বেরিয়ে আসেন।

 

সেখান থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যান পার্কসার্কাস মোড়ের মাজারে। সেখান থেকে যান রহমানিয়া মসজিদে। সেখানে প্রার্থনা করে পার্কসার্কাস মোড়ের সভায় পৌঁছন তৃণমূল সুপ্রিমো।    সম্প্রীতির বার্তা দিতেই এদিন রাজ্যে সংহতি যাত্রার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তৃণমূল সভানেত্রী। রামমন্দির উদ্বোধন ঘিরে লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক গিমিক তৈরি করতে চাইছে বিজেপি। কিন্তু বাংলায় সেই মন্দির উদ্বোধন ঘিরে কোনও হাওয়া তুলতে পারেনি বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু তৃণমূলের সংহতি ব়্যালি ঘিরে জনপ্লাবনে ভাসল মহানগরের রাজপথ।

Previous articleরামকে হা.তিয়ার করেও বিফলে চেষ্টা! ফ্লপ গ.দ্দার শুভেন্দুর ‘ভ.ণ্ডামি’-র চ.ক্রান্ত
Next articleপ্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা, বাড়ল মহিলা ভোটারের সংখ্যা