ইচ্ছুক ক্রীড়াবিদদের চাকরি দেবে রাজ্য: বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, প্রাক্তন খেলোয়াড়দের মাসিক সম্মাননা

ক্রীড়াবিদদের জন্য সুখবর। বাংলার কৃতি খেলোয়াড়দের কাজের জন্যে আর রাজ্য ছেড়ে যেতে হবে না। চাইলে রাজ্য সরকারই তাঁদের চাকরি দেবে। বৃহস্পতিবার, ধনধান্য স্টেডিয়ামে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে এই বড় ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এই জন্য মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে একটি ডেস্ক তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি বাংলার বিশিষ্ট ১৫৬৭ জন প্রাক্তন ক্রীড়াবিদের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ মাসিক সাম্মানিক হিসেবে ভাতা দেওয়া হবে বলেও জানান মমতা।

এদিন অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে খেলাশ্রী প্রকল্পে আওতায় বিভিন্ন ক্রিড়াবিদদের সম্মানিত করার পাশাপাশি, রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের অফিসারদের শৌর্য পদকে সম্মানিত করেন মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন। জানান, “পুলিশের আট জন আধিকারিক, যাঁরা অনেক বীরত্বের পরিচয় দিয়েছেন, তাঁদের শৌর্য পদকে সম্মানিত করলাম। তাঁদের কর্মদক্ষতা ও নিষ্ঠাকে আমি কুর্নিশ জানাই”। কলকাতা পুলিশের দক্ষতায় কলকাতা দেশের মধ্যে নিরাপদতম শহর। মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন ডিজি রাজীব কুমারের নেতৃত্বে রাজ্য পুলিশও ভালো কাজ করবে।

এদিন মোট ৩২২ জন ক্রীড়াবিদকে সম্মাননা জানানো হচ্ছে। ৭২ জনকে নিজেই সম্মাননা দেন মমতা। ন্যাশনাল গেমস, এশিয়ান গেমস, ন্যাশনাল প্যারালিম্পিক্সে কৃতী ৩২২ জন ক্রীড়াবিদকে প্রায় ৬ কোটি ৪২ লাখ ৫০ হাজার টাকার সম্মাননা জ্ঞাপন করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী জানান, “আমাদের সরকার অনেক নতুন সম্মাননা চালু করেছি। খেল সম্মান, বাংলার গৌরব, ক্রীড়াগুরু, জীবনকৃতি পুরষ্কার। এখনও পর্যন্ত ৪৬০ জন বিশিষ্ট  ব্যক্তি এই সম্মান পেয়েছেন।“

বাংলার ১৫৬৭ জন বিশিষ্ট প্রাক্তন ক্রীড়াবিদ- যাঁরা জাতীয় স্তরে ও আন্তর্জাতিক স্তরে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন- তাঁদের প্রতিমাসে ১হাজার টাকা সাম্মাননা দেওয়া হবে। এদিন তার আনুষ্ঠানিক সূচনা হয় করেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, “১৫৬৭ জন অবসরপ্রাপ্ত ক্রীড়াবিদদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসে এক হাজার টাকা করে সাম্মানিক যাবে। আজ থেকেই তা চালু হয়ে গেল। ১ সেপ্টেম্বর থেকে তাঁরা এই সাম্মানিক পাবেন। চার মাসের সাম্মানিকও আজ চলে যাবে তাঁদের কাছে।“

 

এরপরেই বাংলার খেলোয়াড়দের জন্য সুখবর শোনান মমতা। বলেন, যে সব ক্রিড়াবিদরা চান, তাঁরা রাজ্য সরকারের চাকরির জন্য আবেদন করতে পারেন। এর জন্য একটি ডেস্ক তৈরি করতে অরূপ বিশ্বাসকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী কথায়, খেলোয়াড়রা পুলিশের চাকরিতে বেশি উপযুক্ত। কারণ, তাঁরা শারীরিকভাবে সক্ষম। “অনেক ক্রীড়াবিদকে আমরা পুলিশে চাকরি দিয়েছি। বিশেষ করে রাজ্যের পিছিয়ে পড়া এলাকার ছেলেমেয়েদের খেলাধুলোর জগতে নিয়ে আসার জন্য, জঙ্গলমহল কাপ, সৈকত কাপ, রাঙামাটি কাপ, সুন্দরবন কাপ-সহ বিভিন্ন টুর্নামেন্ট আমরা করি। রানার্স ও উইনার্সদের পুলিশে চাকরি দিই। ইতিমধ্যেই আমরা প্রায় ৪,৩০০ জন খেলোয়াড়কে চাকরি দিয়েছি”।

 

মুখ্যমন্ত্রী জানান, এর জন্য প্রয়োজনে নতুন আইন করা হবে। ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে মুখ্যসচিবকে নথি তৈরি করতে বলেছেন তিনি। এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই স্টেডিয়ামে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে।

Previous articleঅসচেতনতা বরদাস্ত নয়, মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে কড়া বার্তা ডিজির
Next articleভারত-ইংল্যান্ড প্রথম টেস্ট, গুটিয়ে গেল ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস, প্রথম দিনের শেষে ভারতের রান সংখ্যা ১ উইকেট হারিয়ে ১১৯ রান