লোকসভার দায়! বন্ধ দরজা খুলে নীতীশকে ফেরালো বিজেপি

লোকসভা ভোটের আগে তড়িঘড়ি অসম্পূর্ণ রামমন্দিরের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ইন্ডিয়া জোটের দিকে ঝুঁকে থাকায় বিহারের ৪০টি লোকসভা আসন কম পড়ে যাচ্ছিল

একদিকে নীতীশ কুমার, যিনি একসময় বলেছিলেন কোনওভাবেই আর বিজেপিতে ফেরৎ যাবেন না। অন্যদিকে বিজেপি, যেখানে অমিত শাহ নীতীশের জন্য বন্ধ করেছিলেন দলের দরজা। তারপরেও দেড় বছরের মাথায় সেই বিজেপিতেই ফিরলেন নীতীশ কুমার। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে বিজেপি কেন একসময় মুখে কালি মাখানো নীতীশকে কেন ফিরিয়ে নিল বিজেপি। আর সেখানেই দেখা যাচ্ছে লোকসভা ভোটের মুখে গোটা দেশে আলোড়ন তুলে দেওয়া এই দলবদলের পিছনেও রয়েছে লোকসভার অঙ্ক।

ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম সঙ্গী ছিলেন নীতীশ। ইতিমধ্যেই বাংলায় তৃণমূল ও দিল্লি-পাঞ্জাবে আপ-এর সঙ্গে বনিবনায় অন্ধকারের দিকে ইন্ডিয়া জোটের ভবিষ্যৎ। এই পরিস্থিতিতে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ইন্ডিয়া জোট ছাড়লে তাতে সংখ্যাতত্ত্বের দিক থেকে দুর্বল হবে জোট। সেই সঙ্গে মানসিকভাবেও দুর্বল হবে বিরোধিরা। ইতিমধ্যেই বিরোধীদলগুলির নেতাদের ওপর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভয় দেখিয়ে মানসিক চাপ তৈরির প্রক্রিয়া জারি রেখেছে বিজেপি সরকার। নীতীশ সেই মাইন্ড গেমে নতুন সংযোজন।

লোকসভা ভোটে বিজেপির একটি বড় লক্ষ্য গোবলয়- উত্তরের হিন্দি বলয়ের রাজ্যগুলি। যে কারণে লোকসভা ভোটের আগে তড়িঘড়ি অসম্পূর্ণ রামমন্দিরের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ইন্ডিয়া জোটের দিকে ঝুঁকে থাকায় বিহারের ৪০টি লোকসভা আসন কম পড়ে যাচ্ছিল বিজেপিকে ক্ষমতায় আনতে। নীতীশ কুমার বিজেপিতে যোগ দিলে এই ৪০টির অধিকাংশ আসন নিশ্চিত হবে বিজেপির পক্ষে।

যদিও নীতীশ কুমার ২০১৫ সালে যখন ক্ষমতায় এসেছেন তখন তাঁর হাতে মাত্র ৪৩জন বিধায়ক। রাজ্যের তৃতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে রাজ্য সামলানোর দ্বায়িত্ব পড়ে নীতীশের ওপর। ফলে রাজ্যের একটা বড় অংশের মানুষ যে তাঁর পক্ষে নেই তা বিজেপির কাছেও স্পষ্ট। সেই পরিস্থিতিতে নীতীশ কুমারকে বিজেপিতে যোগদান করানো বিজেপির পক্ষে সহজ। অন্যদিকে এতদিন অন্যান্য রাজ্যের ক্ষেত্রে বিধায়ক ভাঙানো নিয়ে বিজেপিতে দায়ী করা হয়েছে বিরোধীদের পক্ষ থেকে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নিজে বিজেপিতে যোগ দিলে বিজেপির বিরুদ্ধে দল ভাঙানোর অভিযোগও ওঠানো যাবে না।

এনডিএ জোট ভেঙে বেরিয়ে আসা নীতীশ কুমারকে ফের বিজেপিতে নেওয়ার বিষয়ে বিহারের বিজেপি বিধায়কদের মধ্যে খানিকটা বিক্ষোভ থাকলেও লোকসভা ভোটের আগে দলকে নিয়ন্ত্রণ করা বিজেপির পক্ষে সহজ। সেক্ষেত্রে বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতাদের সরিয়ে রাজ্যে নতুন নেতাদের দ্বায়িত্বেও এনেছে বিজেপি। সেক্ষেত্রে লালু প্রসাদের আরজেডি-র বিরোধিতা করে একজোট করা সহজ হবে বিজেপির পক্ষে।

Previous article‘পাল্টি’র রেকর্ড গড়ে নবমবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন নীতীশ
Next articleপারস্যের রাজা নন, মিশরীয়দের পরাজিত করে বিড়াল? গল্প নয় সত্যি!