‘সংগঠিত’ করা প্রাক্তন বাম বিধায়ক গ্রেফতার, থানায় বিশৃঙ্খলা কর্মীদের

সিপিআইএম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বাঁশদ্রোণী থানায় জানান, সন্দেশখালিতে নিরাপদ সর্দার একটি পাল্টা সংগঠন তৈরি করছিলেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের সংগঠিত করছিলেন।

দিনভর সিপিএম কর্মীদের চরম বিশৃঙ্খলা বাঁশদ্রোণী থানায়। সন্দেশখালিতে তাণ্ডব চালানোর পরিকল্পনা করার অপরাধে প্রাক্তন সিপিআইএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারের গ্রেফতারির প্রতিবাদে থানার বাইরে বিক্ষোভ দেখান তারা। যদিও সিপিআইএম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য প্রকাশ্যে বলেন এলাকার লোকেদের সংগঠিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন নিরাপদ। সেক্ষেত্রে বামেরাই স্বীকার করলেন ‘ইন্ধন’ দিচ্ছিলেন তাঁদের নেতারা। গ্রেফতার প্রাক্তন বিধায়ক যদিও দাবি করেন ঘটনার সময় তিনি এলাকাতে ছিলেন না। তবে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের পরই গ্রেফতারির সিদ্ধান্ত নেয় বসিরহাট পুলিশ। যদিও বামেদের দাবি থানায় নিরাপদ সর্দারের নিরাপত্তার আশঙ্কায় তাঁরা বিক্ষোভ দেখান।

রবিবার সকালে নিরাপদ সর্দারের বাড়ি গিয়ে তাঁকে বাঁশদ্রোণী থানায় তুলে নিয়ে আসে পুলিশ। তখন থেকেই সিপিআইএমের ক্ষেত মজুর সংগঠনের রাজ্য সম্পাদকের জন্য থানার বাইরে জড়ো হতে থাকেন কর্মী সমর্থকেরা। তবে সন্দেশখালি থানার পুলিশ না আসা পর্যন্ত নিশ্চিত হয় না তাঁকে গ্রেফতার করা হচ্ছে কি না। থানায় আসেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম থেকে নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য, আইনজীবী ফিরদৌস সামিম, শতরূপ ঘোষ, সৃজন ভট্টাচার্য। প্রায় কয়েকশো কর্মী থানার বাইরে রাস্তা ঘিরে বসে থাকেন। তাঁরা পাল্টা অভিযোগকারী তৃণমূল নেতা শিবু হাজরার গ্রেফতারির দাবি জানান। তাঁদের দাবি গ্রামবাসীদের অভিযোগের তীরে থাকা শিবু হাজরা পুলিশের খাতায় পলাতক, অথচ তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার হলেন প্রাক্তন বিধায়ক।

বামকর্মীদের পাশাপাশি সিপিআইএম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বাঁশদ্রোণী থানায় জানান, সন্দেশখালিতে নিরাপদ সর্দার একটি পাল্টা সংগঠন তৈরি করছিলেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের সংগঠিত করছিলেন। এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সংগঠিত করার কাজে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন নিরাপদ সর্দার। পাশাপাশি তাঁর দাবি নিরাপদকে গ্রেফতার করে মহিলাদের আন্দোলন থামিয়ে দেওয়া যাবে মনে করলে মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন।

অর্থাৎ বামনেতার কথাতেই স্পষ্ট ‘ইন্ধন’ দেওয়ার কাজ প্রাক্তন সিপিআইএম বিধায়ক করছিলেন। শনিবার তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ দাবি করেছিলেন সন্দেশখালি এলাকায় অশান্তিতে ইন্ধন দিচ্ছিল বামেরা। পাশাপাশি তৃণমূলের পক্ষ থেকে মন্ত্রী পার্থ ভৌমিকও দাবি করেন যারা অশান্তি বাঁধাবেন দল নির্বিশেষে তাঁদের গ্রেফতার করবে পুলিশ। সেই মতো অভিযুক্ত জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য উত্তম সর্দার, বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সন্দেশখালির ঘটনায় মোট ১১১ জনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তার মধ্যে প্রথম নাম নিরাপদ সর্দারের।

এই পরিস্থিতিতে তাঁর গ্রেফতারির পর নিরাপদ সর্দার দাবি করেন তাঁর গ্রেফতার ‘চরম অন্যায়। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে সন্দেশখালির মানুষ।’ তবে তাঁর গ্রেফতারির পর বাঁশদ্রোণী থানা থেকে তাঁকে সন্দেশখালি নিয়ে যাওয়ার আগে পুলিশের গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করে বামকর্মীরা। অন্যদিকে রবিবার সন্দেশখালি যাওয়ার চেষ্টা করে ডিওয়াইএফআই নেত্রী মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাম কর্মীরা। তাঁদের ন্যাজাট ফেরিঘাটেই আটকে দেয় পুলিশ। তাঁরা দাবি করেন বামেদের আটকানোর জন্য ফেরি চলাচলও বন্ধ করে দেয় পুলিশ।

Previous articleযোগী রাজ্যে এক নাবালক সহ পরিবারের তিনজনের মৃতদেহ ঘিরে চাঞ্চল্য
Next articleমোহনবাগান জয় পেলেও, দলের খেলায় খুশি নন বাগান কোচ হাবাস