বেনজির: লোকসভা ভোটে জম্মু-কাশ্মীরের থেকেও বাংলায় বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী চায় নির্বাচন কমিশন!

কোভিডকালে বাংলায় আট দফা ভোট, সবচেয়ে বেশি দিন ধরে বিধানসভা নির্বাচন- এইসব ছাপিয়ে যাচ্ছে ২০২৪-এর লোকসভা ভোট। লোকসভা নির্বাচনে এরাজ্যে জম্মু-কাশ্মীরের থেকেও বেশি সংখ্যায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে চায় নির্বাচন কমিশন। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে পাঠানো চিঠিতে নির্বাচন কমিশন (Election Commission) লিখেছে, বাংলায় লোকসভা ভোটে তারা ৯২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে চায়। এছাড়া স্ট্রংরুম ও গণনা কেন্দ্রগুলির নিরাপত্তায় রাখা হবে ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী (Cntral Force)। অর্থাৎ সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৯০০ কোম্পানি বা ১০ লক্ষের কাছাকাছি (এক কোম্পানি মনে ১০০ জওয়ান) বাহিনী মোতায়েন করা হতে পারে এরাজ্যের ভোটে। এক রাজ্যে ভোটে এত সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগ নজির বিহীন।

কমিশন সূত্রে খবর, এরাজ্যে আগে কখনও এত সংখ্যক বাহিনী মোতায়েন করা হয়নি। জম্মু-কাশ্মীরের মত সংবেদনশীল রাজ্য বা মাওবাদী উপদ্রুত ছত্তিশগঢ়, মধ্যপ্রদেশেও নয়। গত লোকসভা নির্বাচনে এরাজ্যে ৭৪০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। গত পঞ্চায়েত ভোটে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে কমপক্ষে ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট করানোর কথা হয়েছিল। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা পাওয়া যায়নি।

এবার পশ্চিমবঙ্গের পরেই জম্মু ও কাশ্মীরের জন্য সবচেয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছে কমিশন। তবে তার সংখ্যা এরাজ্যের তুলনায় অনেকটাই কম। সেখানে
সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচনের জন্য ৬৩৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের জন্য কমিশন চেয়েছে ২৫২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী।
বিহার এবং ছত্তিসগঢ়ের জন্য যথাক্রমে ২৯৫ ও ৩৬০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া হয়েছে।

লোকসভা ভোটের সঙ্গেই অন্ধ্রপ্রদেশ, অরুণাচল প্রদেশ, ওড়িশা এবং সিকিমে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। কমিশন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে পাঠানো চিঠিতে জানিয়েছে, অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশার জন্য ২৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রয়োজন। অরুণাচল প্রদেশ ও সিকিমের জন্য যথাক্রমে ৭৫ ও ১৭ কোম্পানি বাহিনী লাগবে। ঝাড়খণ্ড ও পঞ্জাবের জন্য ২৫০ কোম্পানি বাহিনী চেয়েছে কমিশন। পাশাপাশি মণিপুরের জন্য ২০০ কোম্পানি বাহিনী চেয়েছে কমিশন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজ্য গুজরাটের জন্যও ২০০ কোম্পানি বাহিনী চাওয়া হয়েছে।

অর্থাৎ যেসব রাজ্যে একসঙ্গে লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচন হচ্ছে সেইসব রাজ্যেও বাংলার থেকে বহু সংখ্যক কম কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তাব দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। তাহলে কীসের ভিত্তিতে বাংলার জন্য এই ব্যবস্থা? রাজনৈতিক মহলের মতে, বিরোধী দলগুলি বিশেষ করে বিজেপি জাতীয় স্তরে বাংলার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে এমন কল্পচিত্র তৈরি করছে, যার জেরে এই প্রস্তাব কমিশনের। এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটাই দেখার।

Previous articleমিথ্যাচারের ফাঁ.দে পড়ে বিরোধীদের কণ্ঠস্বর প্রতিধ্বনিত রাজ্যপালের! সন্দেশখালি নিয়ে প্রতিক্রিয়া কুণালের
Next articleবুধবার রাত থেকেই রাজ্যে ফের শুরু বৃষ্টি, জেনে দিন আপডেট