সংশোধনাগারে মহিলা বন্দিরা অন্তঃসত্ত্বা! সব রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব শীর্ষ আদালতের

সংশোধনাগারে মহিলা বন্দিদের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার ঘটনা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এবার মহিলা আবাসিকদের পরিস্থিতি নিয়ে সব রাজ্যের রিপোর্ট তলব করল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। শুক্রবার, এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি হিমা কোহলি ও আসানুদ্দিন আমানুল্লাহর বেঞ্চ বিভিন্ন রাজ্যের সংশোধনাগারে (Correctoinal Home) মহিলা বন্দিরা কী অবস্থায় আছেন- সেবিষয়ে খোঁজ নেওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। সব রাজ্যে (State) মহিলা বন্দিদের কী পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে তথ্য জমা দিতে হবে।

সম্প্রতি জেলবন্দি মহিলাদের গর্ভবতী হওয়ার ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে কলকাতা হাই কোর্ট। হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএম শিবাজ্ঞনম এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর বলে উল্লেখ করে। তবে, শুধু এ রাজ্যই নয়, সারা দেশের ছবিটাই এক। বিভিন্ন রাজ্যে জেল বন্দি মহিলারা গর্ভবতী হয়ে পড়ছেন বলে অভিযোগ। রাজ্যের মহিলা সংশোধনাগারগুলি নিয়ে আইনজীবী তথা আদালত বান্ধব তাপস ভঞ্জ ও আইনজীবী কল্লোল গুহঠাকুরতা প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি রাজ্যের জেলগুলিতেই ১৯৬টি শিশুর জন্ম হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন টি এস শিবজ্ঞানম। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মামলাটি একটি বিশেষ বেঞ্চে স্থানান্তর করে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। ঘটনাটিতে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করে শীর্ষ আদালত (Supreme Court)। তারপরই বিষয়টি গৌরব সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের নজরে আনেন। তাপসের দাবি, কোনও মহিলা বিচারাধীন বা সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পর জেলে প্রবেশের আগে তাঁর প্রেগনেন্সি টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হোক। এদিন মামলাটিতে রিপোর্ট তলব করল সুপ্রিম কোর্ট।

যদিও ‘আদালতবান্ধব’-এর এই রিপোর্টে মানতে নারাজ বন্দিনীরা। সোমবার, দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের মহিলা বন্দিদের ব্লক এবং আলিপুর মহিলা সংশোধনাগার পরিদর্শন করেন জাতীয় মহিলা কমিশনের ২ সদস্য ডেলিনা খোংদুপ ও শালিনী সিং। কারা দফতর সূত্রের খবর, বেশ কয়েকজন মহিলা আবাসিক তাঁদের অভিযোগ করেন, ওই রিপোর্টের জেরে তাঁদের সন্তানের ‘পিতৃত্ব’ প্রশ্নের মুখে। জেল থেকে বেরোনোর পরে তাঁরা সামাজিক প্রশ্নের সম্মূখীন হবেন। মহিলা আবাসিকদের দাবি, ওই রিপোর্ট তৈরির আগে তাঁদের সঙ্গে কথা বলা হয়নি। জেলে এসে তাঁরা অন্তঃসত্ত্বা হননি। জেলে এমন ঘটনা ঘটেছে বলেও তাঁরা শোনেননি।

আরও পড়ুন: “কুছ তোহ লোগ কহেঙ্গে…”, সোশ্যাল মিডিয়ায় লম্বা পোস্ট করে কাজের খতিয়ান দিলেন মিমি

কারা দফতর সূত্রে খবর, নির্দিষ্ট সময় অন্তর রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা সংশোধনাগার পরিদর্শন করেন। সংশোধনাগারে থাকা অবস্থায় কোনও মহিলা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ছেন, এমন কোনও রিপোর্ট তাদের তরফে জমা পড়েনি। রিপোর্ট অনুযায়ী, গত এক বছরে সংশোধনাগারে ১১টি শিশুর জন্মেছে। জেলবন্দি হওয়ার আগেই ওই মহিলারা গর্ভবতী ছিলেন। এক মহিলা বন্দিকে করোনাকালে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। মুক্ত থাকাকালীনই তিনি অন্তঃসত্ত্বা হন। অনেক মহিলা বন্দি সংশোধনাগারে এসেছেন তাঁদের সন্তানদের নিয়ে।

Previous articleপ্রয়াত টেলি অভিনেত্রী কবিতা চৌধুরী!
Next articleপ্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ জয় নিউজিল্যান্ডের, একাধিক নজির উইলিয়ামসনের