“কুছ তোহ লোগ কহেঙ্গে…”, সোশ্যাল মিডিয়ায় লম্বা পোস্ট করে কাজের খতিয়ান দিলেন মিমি

যাদবপুরের (Jadavpur) সাংসদ পদ ছাড়তে চান অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী (Mimi Chakraborty)। গতকাল, বৃহস্পতিবার বিধানসভায় (Assembly) গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কাছে সে কথা জানিয়ে এসেছেন তিনি। দিয়ে এসেছেন চিঠিও। মিমি জানিয়েছেন, এখনও মমতা তাঁর ইস্তফার বিষয়ে সম্মতি জানাননি। মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে সবুজ সঙ্কেত পেলে তিনি লোকসভার স্পিকারের কাছে গিয়ে ইস্তফাপত্র দেবেন।

বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়ে মিমি সংবাদ মাধ্যমকে আরও বলেছিলেন, ‘‘আমি রাজনীতিক নই। কখনও রাজনীতিক হবও না। সব সময় আমি কর্মী হিসাবে মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছি। আমি লোকসভায় কত দিন উপস্থিত থেকেছি, কিছু লোকের তাই নিয়ে মাথাব্যথা। যদি এক মাস দিল্লিতে থাকি, লোকে বলবে সাংসদ দিল্লিতে থাকেন, এখানে কাজ করেন না। আবার এখানে থাকলে বলা হবে, সংসদে আমার উপস্থিতি কম। আমাদের সব দিকের ভারসাম্য রেখে চলতে হয়।’’

মিমি দাবি করে বলেছিলেন ‘‘আমি মানুষকে অনেক পরিষেবা দিয়েছি। কোমর অবধি জলে নেমে ত্রাণ দিয়েছি। আমপানে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। নিজের ফান্ড থেকে অনেক কাজ করেছি। এগুলো প্রচার করিনি। আমি রাজনীতি বুঝি না। নিজের কাজ প্রচার করতে পারি না। রাজনীতিতে এলে সব সময় চালের প্যাকেট ধরে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে হয়। আমি সেটা করতে পারিনি। এটাও আমার রাজনীতি ছাড়ার অন্যতম কারণ। সাংসদদের ফান্ড কতটা ব্যবহার করা হয়েছে, তা দিয়ে কতটা কাজ করা হয়েছে, নির্দিষ্ট পোর্টালে গিয়ে সেই তথ্য দেখুন। এক নম্বরে কার নাম রয়েছে, এক বার দেখে নিন। এটা আমার গর্ব।’’

 

এর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় লম্বা-চওড়া পোস্ট করে নিজের খতিয়ান তুলে ধরলেন যাদবপুরের তারকা সাংসদ মিমি। তাঁর লোকসভার অন্তর্গত ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রে (যাদবপুর, টালিগঞ্জ, বারুইপুর পশ্চিম, বারুইপুর পূর্ব, সোনারপুর উত্তর, সোনারপুর দক্ষিণ এবং ভাঙড়) ২০১৯ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত সাংসদ তহবিল থেকে কত টাকার কাজ করেছেন সেই তালিকাও পোস্ট করেন মিমি।

তিনি লেখেন, “আমি মিমি চক্রবর্তী। আমার জীবনঅধ্যায়ের অধিকাংশ সময় অভিনয় জগতে থেকে মানুষকে মনোরঞ্জন দিতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু বিগত ৫ বছর, বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ গণতন্ত্রের একজন সাংসদ রূপে যতটা কাজ সাধারণ মানুষের জন্যে করতে পেরেছি, মানুষের করের টাকা সঠিক ভাবে ব্যবহার করে উন্নয়নমূলক কাজ করেছি, সৎপথে থেকে মাথা উঁচু করে এগিয়ে গেছি… সেই সফরের কথা মনে করলে মারাত্মক আত্মতুষ্টি হয়। তাই আনন্দের সাথে বিগত পাঁচ বছরের আমার সাংসদ রূপে যাবতীয় কাজের খতিয়ান আজ জনসমক্ষে তুলে ধরলাম।”

তাঁর সংযোজন, “আন্তরিক কৃতজ্ঞতা আমার নেত্রী, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-কে, তার স্নেহের হাত আমার মাথায় সর্বক্ষণ রাখবার জন্য। আগামী দিনে আমি সক্রিয় রাজনীতিতে থাকি বা না থাকি, আমার কাজের মাধ্যমে আমি নিশ্চিতরূপে মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় থাকব।( COVID-এর কারণে সেই সময় ফান্ড আসা বন্ধ ছিলো )। সবশেষে লেখেন, “কুছ তোহ লোগ কাহেনগে, লোগো কা কাম হে কেহনা!”

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় বক্তৃতা পেশ করেন। তা শেষ হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে যান মিমি। সেখানেই ইস্তফা দিতে চেয়েছেন তিনি, এমনটাই সূত্রের খবর। সম্প্রতি সংসদের দু’টি স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন মিমি। সংসদের শিল্পবিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি। ছিলেন কেন্দ্রীয় শক্তি মন্ত্রক এবং নবীন ও পুনর্নবীকরণযোগ্য বিদ্যুৎ মন্ত্রকের যৌথ কমিটির সদস্যও। এই দু’টি পদ থেকেই তিনি ইস্তফা দেন।

Previous articleএবার মা সারদার ব্যঙ্গচিত্র করে উপহাস বিজেপির! ধিক্কার তৃণমূলের
Next article‘থাকবো নাকো বদ্ধ ঘরে’, ১৯৩ দেশ ঘুরে ফেলেছেন ৭৯ বছর বয়সী ভূ-পর্যটক!