বিজেপির জাতীয় সম্মেলনের শেষদিন কর্মীদের মধ্যে লোকসভা ভোটের বিউগল বাজিয়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদি। ১০০ দিন সময় ও ৪০০ আসন সংখ্যার লক্ষ্য বেঁধে দিয়ে নির্বাচনের প্রচারে এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন কর্মীদের। পাশাপাশি মনে করিয়ে দিলেন জাতীয় নির্বাচনে কংগ্রেসই তাঁদের মূল লক্ষ্য। মোদি জমানায় দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির কথা তুলে ধরে প্রচারে নামার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। যদিও পরবর্তী পাঁচবছর বা আগামী বিজেপি জমানায় কোন কোন পথে দেশের উন্নয়ন, তার কোনও ব্যাখ্যা প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতায় পাওয়া যায়নি।

কিছুদিন আগে অন্তর্বর্তী বাজেট পেশের সময় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বেশ কিছু পরিকল্পনার কথা পেশ করেন যার লক্ষ্য ছিল ২০৪৭ সাল। দলীয় সম্মেলনের শেষদিন কর্মীদেরও সেই ২০৪৭ সালের স্বপ্ন দেখালেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, ‘লক্ষ্য স্থির করে কাজ করা হচ্ছে যাতে ২০৪৭ সালের মধ্যে, যখন দেশের স্বাধীনতার ১০০ বছর উদযাপন করা হবে, তখন ভারতকে উন্নত দেশের তালিকায় যাতে তুলে ধরা যায়। আমরা সংকল্প নিয়েছি ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতি হিসাবে গড়ে তুলব, এটাই মোদির গ্যারান্টি’। যদিও কোন লক্ষ্য স্থির করে ভারতের অর্থনীতির উন্নয়ন চলবে তার কোনও রূপরেখা মোদির বক্তব্যে পাওয়া যায়নি।
দেশের মানুষের কাছে নিজেদের লক্ষ্য তুলে ধরার জন্য কর্মীদের ১০০ দিনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেন তিনি। মোদি বলেন, ‘আগামী ১০০ দিন আমাদের প্রত্যেককে বেরোতে হবে এবং প্রত্য়েক ভোটার, প্রত্যেক উপভোক্তা এবং প্রত্যেক সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছাতে হবে। আমাদের প্রত্যেকের সমর্থন ও বিশ্বাস জিততে হবে’। পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘তৃতীয়বার জয়ের কথা আমি নিজে পদ উপভোগ করার জন্য বলছি না। আমি নিজের ঘরের কথা ভাবলে কোটি কোটি মানুষের জন্য ঘর তৈরি করে দিতাম না। আমাদের স্বপ্ন ও সংকল্পের পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আগামী পাঁচ বছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

লোকসভা ভোটে মূলত কংগ্রেসকে টার্গেট করেই যে এগোতে চাইছে বিজেপি, তা এদিন পরিষ্কার করে দেন মোদি। তিনি বলেন, ‘কংগ্রেসের হাত থেকে দেশকে, দেশের নাগরিকদের ও দেশের যুব সম্প্রদায়কে বাঁচানো বিজেপির প্রত্যেকটি কর্মীর কর্তব্য। কংগ্রেস অস্থিরতা, পরিবারবাদ, দুর্নীতির জননী ও তোষণের রাজনীতির জননী। ৭০-এর দশকে যখন দেশে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে রাগ জমা হতে লাগল তখন নিজেদের বাঁচাতে তাঁরা অস্থিরতা তৈরির সাহায্য নিল। আজও তারা অস্থিরতা তৈরির জন্য নতুন নতুন চক্রান্ত করে চলেছে। কংগ্রেসের কাছে বিকাশের কোনও অ্যাজেন্ডা নেই, উন্নয়নের কোনও রোডম্যাপ নেই।’

পাশাপাশি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকেও কটাক্ষ করতে বাদ দেননি মোদি। বাজেট সেশনের সময় কংগ্রেস সভাপতি ভুল করে এনডিএ জোটের নামে ৪০০-পার বলে ফেলেছিলেন। সেই কথাকে স্মরণ করিয়েই মোদির দাবি, ‘বিরোধী নেতারাও অনেকে বলছেন এনডিএ সরকার/ ৪০০ পার।’ তবে ৪০০-র লক্ষ্য যে বিজেপির জন্য খুব সহজ হবে না, তা বোঝাতে মোদি বলেন, ‘লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ-কে ৪০০ পার করাতে গেলে বিজেপিকে ৩৭০-এর বেশি আসন পেতে হবে’। সেখান থেকেই দলের জন্য নতুন স্লোগান বেঁধে দিলেন মোদি – অব কী বার/ ৪০০ পার।
