যাদবপুরে পরীক্ষার্থীকে যৌন প্রস্তাব! কাঠগড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক

জুটা (JUTA ) অবশ্য গোটা ঘটনার কথা অস্বীকার করেছে। তাঁদের কথায়, ওই ছাত্রী প্রতারণা করছিলেন এবং অধ্যাপক সেটা ধরে ফেলায় এভাবে দোষারোপ করা হচ্ছে।

ফের আঙুল উঠল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) দিকে। ছাত্র নির্যাতনের বিতর্ক কাটতে না কাটতেই এবার স্নাতকোত্তরের প্রথম বর্ষের পড়ুয়াকে হল থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে যৌন প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে। ছাত্রীর অভিযোগ, পরীক্ষা শেষেই ফাইনাল ইয়ারের দুই ছাত্র তাঁকে বলেন, ‘ভাল করে পরের পরীক্ষা দিতে হলে স্যারের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হতে হবে!’ হতভম্ব ছাত্রী ইমেলের মাধ্যমে অভিযোগ জানিয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু-সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত শীর্ষ পদাধিকারীকে।

হোস্টেলের বারান্দা থেকে পড়ে গিয়ে প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যুর তদন্ত এখনও চলছে। এরপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একাধিক পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে শোনা যায়। কিন্তু মানসিকতা বদলেছে কি? যে ছাত্রীকে এই কুপ্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। গ্রাম থেকে শহরে পড়তে আসা মেয়েটি যাদবপুরে ভর্তির পরীক্ষায় ১০০-র মধ্যে ৯০ নম্বর পেয়ে মেধাতালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। ক্লাস শুরুর পর থেকেই বুঝতে পারছিলেন, গ্রাম থেকে আসা এক ছাত্রীর ভাল নম্বর পাওয়াকে ভাল চোখে দেখেননি ওই অধ্যাপক। তাঁর অভিযোগ মাঝেমধ্যেই সহপাঠীদের সামনে ওই ছাত্রীকে নিয়ে ঠাট্টা করতেন অধ্যাপক। প্রাথমিকভাবে গোটা বিষয়টাকে এড়িয়ে গেলেও কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনার পর নিজেকে অধ্যাপকের ‘টার্গেট’ বলে মনে করছেন ওই ছাত্রী। আর সেই কারণেই রীতিমতো আতঙ্কিত ওই পড়ুয়া।

ইমেলে ওই ছাত্রী যে অভিযোগ করেছেন সেখানে লিখেছেন, ১৯ ফেব্রুয়ারি তাঁর প্রথম বর্ষের প্রথম পরীক্ষার দিন থেকে আসল ঘটনার সূত্রপাত। পরীক্ষার হলে আচমকাই ওই অধ্যাপক সবার সামনে তাঁর নাম ধরে ডাকেন এবং বলেন, তাঁকে শারীরিক তল্লাশি নিতে হবে, কারণ তিনি চিরকুটে পরীক্ষার উত্তর লিখে এনেছেন। এরপরই সবার সামনে অস্বস্তিকর ভাবে শরীরে হাত দিয়ে তল্লাশি করা হয়। যদিও ছাত্রীর কাছ থেকে কোন টুকলি পাওয়া যায়নি। এর পরের ঘটনা বুধবার অর্থাৎ ২১ ফেব্রুয়ারি। গতকাল তাঁর প্রথম বর্ষের প্রথম সেমেস্টারের দ্বিতীয় পরীক্ষা। ছাত্রী জানিয়েছেন, প্রায় দেড় ঘণ্টা পরীক্ষা দেওয়ার পর হঠাৎই পরীক্ষার হলে যিনি গার্ড দিচ্ছিলেন, তিনি তাঁর নাম ধরে ডেকে বলেন তাঁকে ওই অধ্যাপকের ঘরে ডেকে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পত্রে ছাত্রী জানান, অধ্যাপক তাঁকে দেখে প্রথমেই তাঁর হাত সজোরে ধরে ঘরের মধ্যে টেনে আনেন। এরপর ওই ছাত্রীর হাতের উপর একপ্রস্ত কালি ঢেলে দিয়ে বলেন, ‘‘তুমি হাতে পরীক্ষার উত্তর লিখে এনেছো।’’ এরপর ছাত্রী বলেন যে তিনি এই হাতের ছবি তুলে শারীরিক নির্যাতনের প্রমাণ দেবেন।। তখন অধ্যাপক দ্রুত পড়ুয়ার হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে দিয়ে বলেন যে তার চাহিদা নাম এখানে এই বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা করা দুষ্কর হবে। ছাত্রী জানিয়েছেন, এখানেই তাঁর উপর নির্যাতন শেষ হয়নি। ওই অধ্যাপক তাঁকে এর পর টেনে নিয়ে যান তাঁর বিভাগীয় প্রধানের কাছে। ছাত্রীর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগও করেন। কিন্তু সৌভাগ্যবশত বিভাগীয় প্রধান আস্থা রাখেন ছাত্রীর উপরেই। কোনও মতে পরীক্ষা শেষ করেন ওই ছাত্রী কিন্তু তারপরই আবার সিনিয়র দুই দাদা এসে কুপ্রস্তাব দেন। জুটা (JUTA ) অবশ্য গোটা ঘটনার কথা অস্বীকার করেছে। তাঁদের কথায়, ওই ছাত্রী প্রতারণা করছিলেন এবং অধ্যাপক সেটা ধরে ফেলায় এভাবে দোষারোপ করা হচ্ছে। গোটা ঘটনায় মানসিক অবসাদে ভুগছেন নির্যাতিতা ছাত্রী।


Previous articleআইপিএলে কি খেলতে পারবেন শামি? এলো বড় আপডেট
Next articleসপ্তমবারের জন্য কেজরিকে তলব ইডির, এবার কি যাবেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী?