যৌন হেনস্থার অভিযোগে ফের অশান্ত যাদবপুর! অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত পরীক্ষা

জুটার সাফাইয়ের পাল্টা দিয়েছেন দক্ষিণ কলকাতার ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জুটার চরম সমালোচনা করেন।

পরীক্ষার হল থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ছাত্রীকে (Student) যৌন হেনস্থার অভিযোগ! ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার থেকেই নতুন করে অশান্ত হয়ে ওঠে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (Jadavpur University)। আর ঘটনাকে কেন্দ্র করে যখন অশান্ত বিশ্ববিদ্যালয় এমন আবহে অভিযোগকারিণী যে বিভাগে পড়তেন অর্থাৎ সাংবাদিকতা এবং গণজ্ঞাপন (Journalism and Mass Communication) বিভাগের স্নাতকোত্তর প্রথম বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের (First Semester) পরীক্ষাই এবার অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে দিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে শুক্রবার অভিযোগকারিণীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাফ জানান, ‘‘আমি মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। বর্তমানে কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। কে, কী বলছেন, আমি জানি না। তদন্ত হলে আসল সত্য প্রকাশ্যে আসবে।’’ তবে ইতিমধ্যেই নিয়মকানুন মেনেই পড়ুয়ার অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ বিষয়ক কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। কমিটিই পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখবে বলে খবর।

ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার লিখিত অভিযোগ সামনে এনেছিলেন সাংবাদিকতা এবং গণজ্ঞাপন বিভাগের ওই ছাত্রী। এরপরই ছাত্রী অভিযোগের কথা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুকে একটি ইমেলও করেন। তিনি অভিযোগপত্রে সাফ জানান, অভিযুক্ত অধ্যাপক তাঁর উপর পরীক্ষার খাতায় নকল করার মিথ্যা অভিযোগে পরীক্ষার হলেই সকলের সামনে শারীরিক তল্লাশি নেন। পাশাপাশি ছাত্রীর আরও অভিযোগ, পরের পরীক্ষার দিন তাঁকে হল থেকে নিজের ঘরে ডেকে পাঠিয়ে শারীরিক নির্যাতনও করেন ওই অধ্যাপক। তবে এখানেই তিনি থামেননি, ছাত্রীর আরও অভিযোগ, এরপর দুই সিনিয়র ছাত্রকে দিয়েও তাঁকে যৌন প্রস্তাব দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের পাশাপাশি সেই চিঠির কপি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শীর্ষ পদাধিকারী-সহ রাজ্য মহিলা কমিশন এবং যাদবপুর থানাতেও পাঠান অভিযোগকারিণী।

তবে ঘটনার কথা পুরোপুরি অস্বীকার করেছে যাদবপুরের শিক্ষক সংগঠন ‘জুটা’। শিক্ষক সংগঠনের তরফে সাফ জানানো হয়েছে, এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি। ছাত্রীকে পরীক্ষার হলে নকল করতে বাধা দেওয়ার কারণেই এমন অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। জুটার তরফে সাফ জানানো হয়, ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে আগে কখনও এমন অভিযোগ ওঠেনি। তবে জুটার এই সাফাইকে একেবারেই মানতে নারাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই বিভাগের অনান্য পড়ুয়ারা। তাঁদের অভিযোগ, অধ্যাপকের কীর্তি সামনে আসতেই নিজেদের দোষ ঢাকতে এক নিরীহ পড়ুয়াকে টার্গেট করা হচ্ছে। যদিও জুটার এই সাফাইয়ের পাল্টা দিয়েছেন দক্ষিণ কলকাতার ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জুটার চরম সমালোচনা করেন। অরূপের স্পষ্ট অভিযোগ, “ছাত্রীর অভিযোগ যাচাই না করেই জুটার সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় ছাত্রীকেই অভিযুক্ত প্রমাণ করতে উঠেপড়ে লেগেছেন”। ওই পোস্টে অরূপের আরও অভিযোগ, এর আগেও হস্টেলে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় এই পার্থপ্রতিমকেই র‌্যাগিংয়ে অভিযুক্ত ছাত্রদের হয়ে সাফাই দিতে দেখা গিয়েছিল।’’

Previous articleভারত-ইংল্যান্ড চতুর্থ টেস্ট ম্যাচ, প্রথম দিনের শেষ ইংল্যান্ডের রান সংখ্যা ৭ উইকেট হারিয়ে ৩০২
Next articleএজেন্সির ভয়ে বিজেপিকে অনুদান কর্পোরেটদের! তদন্তের দাবি কংগ্রেসের