হিমাচল প্রদেশে ‘নাটক’ অব্যহত! ক্রস ভোটিংয়ের অভিযোগে পদ খারিজ ৬ কংগ্রেস বিধায়কের

বৃহস্পতিবারই ফের হিমাচল প্রদেশের বিধানসভায় আসেন কংগ্রেসের ৬ বিধায়ক। তাঁদের রীতিমতো স্বাগত জানান বিজেপি বিধায়করা।

সময় যত গড়াচ্ছে হিমাচল প্রদেশের (Himachal Pradesh) রাজনীতিতে একের পর এক টুইস্ট। সামনেই লোকসভা নির্বাচন (Loksabha Elction), আর সেই নির্বাচনকে সামনে রেখেই পাহাড়ি রাজ্য দখল করতে চেয়ে উঠেপড়ে লেগেছে গেরুয়া শিবির (BJP)। লক্ষ্য একটাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কংগ্রেসকে সরিয়ে নতুন সরকার গঠন। কিন্তু প্রতিদিনই হিমাচল প্রদেশে একের পর এক নাটক সামনে আসছে। বৃহস্পতিবারই ক্রস ভোটিংয়ের (Cross Voting) অভিযোগে বিধানসভা থেকে ৬ কংগ্রেস বিধায়ককে (Congress MLA) বহিষ্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবারই রাজ্যসভার নির্বাচনে ব্যাপক ক্রস ভোটিং হয়। যেখানে বিজেপি প্রার্থীকে ভোট দেন কংগ্রেসের ৬ সাংসদ। এরপরই কংগ্রেস সাংসদদের একেবারে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ডবল ইঞ্জিন বিজেপি শাসিত রাজ্য হরিয়ানায়। যাতে কোনওভাবেই কংগ্রেস সাংসদরা পরে নিজেদের সিদ্ধান্ত বদল করতে না পারেন সেই আশঙ্কায় ভুগছে বিজেপির থিঙ্ক ট্যাঙ্ক। এদিকে বৃহস্পতিবারই ফের হিমাচল প্রদেশের বিধানসভায় আসেন কংগ্রেসের ৬ বিধায়ক। তাঁদের রীতিমতো স্বাগত জানান বিজেপি বিধায়করা। তবে বিজেপি সূত্রে খবর, এই ৬ কংগ্রেস সাংসদ নাকি রাজ্যসভা নির্বাচনে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবারই বিধানসভার অধিবেশন শুরু হতে কংগ্রেস বিধায়কদের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়। এদিন স্পিকার বলেন, অর্থ বিল নিয়ে সরকারের পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য দলীয় হুইপ জারি হয়েছিল। কিন্তু সেটা উপেক্ষা করেছেন কংগ্রেসের ৬ বিধায়ক। আর সেকারণেই রাজিন্দার রানা, সুধীর শর্মা, ইন্দার দত্ত লখনপাল, দেবিন্দর কুমার ভুটু, রবি ঠাকুর এবং চেতন্য শর্মাকে বিধায়ক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এদিকে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নিজের অবস্থান বদলে নতুন করে কংগ্রেস নেতৃত্বের উপর চাপ বাড়ালেন বিক্রমাদিত্য সিং। তিনি সাফ জানিয়েছেন, এখনও তিনি ইস্তফা প্রত্যাহার করেননি। দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি। বুধবার সকালেই হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখুর বিরুদ্ধে তোপ দেগে রাজ্য মন্ত্রীসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন বিক্রমাদিত্য। আর তার কয়েকঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ফের কংগ্রেসের চিন্তা বাড়িয়েছেন তিনি।

তবে ৬ সাংসদের বিধায়ক পদ খারিজ হয়ে যাওয়ায় অনেকটাই ব্যাকফুটে কংগ্রেস। এখন হিমাচল প্রদেশে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ৬৮ সদস্যের হিমাচল বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার ম্যাজিক ফিগার ৩৫। ছ’জন বিধায়কের পদ খারিজের ফলে এখন রইলেন ৬২ জন। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠতার অঙ্ক নামল ৩৩-এ। এই মুহূর্তে কংগ্রেসের পক্ষে রয়েছে ৩৪ বিধায়ক এবং বিজেপির ২৫। অর্থাৎ তিন নির্দলকে পাশে পেলেও কংগ্রেসকে ছুঁতে পারবে না তারা। কিন্তু সরকার গঠনের জন্য আস্থা ভোট চেয়ে ইতিমধ্যেই সব হোমওয়ার্ক সেরে ফেলেছে বিজেপি। সে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করাই হোক বা বিধানসভায় গিয়ে স্পিকারের কাছে দ্রুত আস্থা ভোট নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে বিজেপি। তবে এখনও কংগ্রেসের পক্ষে বেশি সমর্থন থাকায় ঘোড়া কেনাবেচার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে, বিজেপি যে গোপনে সেই কাজ শুরু করে দিয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে পরিস্থিতি যেদিকে গড়াচ্ছে হিমাচল প্রদেশ বিধানসভার চিত্র যে কোনও মুহূর্তে বদলে যাওয়ার আশঙ্কাপ্রকাশ করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

Previous articleপঞ্চম টেস্টের আগে ধাক্কা ভারতীয় শিবিরে, চোট সারাতে লন্ডনে কেএল রাহুল
Next articleহামাস-ইজরায়েল যুদ্ধ চলছে, পদত্যাগ প্যালেস্তাইনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শাতায়েহর