জেজেপির সঙ্গে জোটে ইতি! আস্থা ভোটে জয় পেয়ে হরিয়ানায় নয়া ইনিংস শুরু নায়েব সিং সরকারের

৯০ সদস্যের হরিয়ানা বিধানসভায় বিজেপির ৪১ বিধায়কের পাশাপাশি ছ’জন নির্দল এবং হরিয়ানা লোকহিত পার্টির গোপাল কান্ডাও ধ্বনিভোটে বিজেপি সরকারকেই সমর্থন জানিয়েছেন।

আসনরফা নিয়ে সমস্যা শুরু হয়েছিল মঙ্গলবারই। আর লোকসভা নির্বাচনের (Loksabha Election) মুখে বিজেপির হাত ছেড়ে একা লড়ার ঘোষণা জেজেপির (Jananayak Janata Party)। নির্বাচনের আগে হাতে সময় বেশি বাকি নেই। ইতিমধ্যেই বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলই তাঁদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। কিন্তু নির্বাচনের আগেই হরিয়ানার রাজনীতিতে শুরু ডামাডোল। মঙ্গলবার বিকেলেই আসনরফা নিয়ে বিজেপি (BJP) ও জেজেপি জোটের মধ্যে বিস্তর মতপার্থক্য শুরু হয়। জেজেপির অভিযোগ, তাঁদের জেতা ১০ লোকসভা আসনের মধ্যে মাত্র ৩টিতে তাঁদের মনোনীত প্রার্থীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ দেওয়ার কথা বললেই বেঁকে বসে গেরুয়া শিবির। বিজেপি সাফ জানায়, ৩ নয় মাত্র একটি আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে জেজেপি। আর আচমকা বিজেপির এমন ভোলবদলের পর থেকেই জোর চর্চা শুরু হয় হরিয়ানার রাজনীতিতে। ঘটনার জেরে মঙ্গলবারই মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন মনোহর লাল খট্টর (Manohar Lal Khattar)। আর তারপরই নয়া মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন নায়েব সিং সাইনি (Nayeb Singh Saini)।

যদিও আচমকা মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেও বিতর্ক কিছুতেই পিছু ছাড়ছিল না। শেষমেশ বুধবার সকালে আস্থা ভোটে জিতে জোটের হাত ছেড়ে নয়া সরকার গঠন করল বিজেপি। ৯০ সদস্যের হরিয়ানা বিধানসভায় বিজেপির ৪১ বিধায়কের পাশাপাশি ছ’জন নির্দল এবং হরিয়ানা লোকহিত পার্টির গোপাল কান্ডাও ধ্বনিভোটে বিজেপি সরকারকেই সমর্থন জানিয়েছেন। যদিও সদ্য-প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর আস্থাভোটের পরেই বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়েছেন বলে খবর। এদিকে মঙ্গলবার দলীয় বিধায়কদের ভোটভুটিতে অংশ না-নেওয়ার জন্য হুইপ জারি করেছিলেন জেজেপি প্রধান তথা সদ্যপ্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী দুষ্মন্ত চৌটালা।আর সেকারণেই এদিনের আস্থা ভোটে তাঁদের কোনও বিধায়ক উপস্থিত ছিলেন না বলে খবর। যদিও আচমকা বিজেপির এই পাল্টিবাজির রাজনীতিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি জেজেপি। জেজেপির অভিযোগ, মাত্র একটি আসন ছেড়ে ভিক্ষা দিতে চাইছে বিজেপি। কিন্তু ৩টি আসন না ছাড়লে কোনওভাবেই তাঁদের পক্ষে বিজেপির হাত ধরে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা একেবারেই সম্ভব নয় বলেই সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও মঙ্গলবার গেরুয়া শিবিরের এমন সিদ্ধান্তে অনড় থাকলেও নিজেদের অবস্থান থেকে এতটুকু শ্রেণি জেজেপি। আর সেকারণে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিয়ে ফের নয়া সরকার গঠন বিজেপির। তবে লোকসভা নির্বাচনের মুখে আচমকা খাট্টারের এমন সিদ্ধান্তের পিছনে বিজেপির কোনও হাত রয়েছে কী না তা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। কিন্তু এমন আবহে জোটসঙ্গী জেজেপির সঙ্গত্যাগকে একপ্রকার ‘গা জোয়ারির’ রাজনীতি বলেই কটাক্ষ রাজনৈতিক মহলের।

 

এদিকে বুধবার সকাল ১১টা নাগাদ নিজেদের মধ্যে সমস্যা মিটিয়ে হরিয়ানা বিধানসভার অধিবেশনে শুরু হয় আস্থা ভোট। সেই পরীক্ষায় পাশ করে নয়া সরকার গঠন হল হরিয়ানায়। তবে নির্বাচনের মুখে নিজেদের মধ্যে মতপার্থক্যের জেরে গেরুয়া শিবিরের দ্বন্দ্ব আরও একবার প্রকাশ্যে চলে এল।

Previous articleমহাকাশে মতিভ্রম, ‘বিকারগ্রস্ত’ নাসার মহাকাশযান! উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ভয়েজার-১
Next articleবাংলার ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’কে নকল, নির্বাচনী ইস্তেহারে কংগ্রেসের প্রাধান্য মহিলাদের