পাঁচ দশক ধরে একটানা কাজ করার পর আচমকাই বয়স জড়িত সমস্যায় ভুগতে শুরু করেছে নাসার (NASA ) মহাকাশযান। শুনতে অবাক লাগলেও, ভয়েজার-১ (NASA VOYAGER 1 Mission) এর কার্যকলাপ নিয়ে এমনই মত মহাকাশবিজ্ঞানীদের। ১৯৭৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর NASA ভয়েজার-১ মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করে। সেই থেকে অবিরাম কাজ করে চলেছে। কিন্তু গত নভেম্বর মাস থেকে পৃথিবীতে যে তথ্য পাঠাচ্ছে সে, তার বেশিরভাগই বোধগম্য নয়। আবার কিছু তথ্য একেবারেই অর্থহীন, অপ্রাসঙ্গিক এবং ভুল। তাই নিয়ে উদ্বিগ্ন বিজ্ঞানীরা।
নাসা জানিয়েছে, বর্তমানে পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫০০ কোটি মাইল দূরে অবস্থান করছে ভয়েজার-১ (VOYAGER 1)। সৌরজগতের একেবারের কিনারায় অবস্থিত গ্রহদের পর্যবেক্ষণ করতেই এর উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। হেলিওস্ফিয়ার বলয়ের বাইরে পদার্পণকারী প্রথম মহাকাশযান এই ভয়েজার-১। বৃহস্পতিকে ঘিরে থাকা বলয়ও তারই আবিষ্কার। এখানেই শেষ নয় আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতির দুই উপগ্রহ, শনির পাঁচটি উপগ্রহ এবং শনিকে ঘিরে থাকা G বলয়ও ভয়েজার-১ মহাকাশযানই আবিষ্কার করে। এ বিষয়ে বলে রাখা দরকার যে ১৯৭৭ সালেই উৎক্ষেপণ হয় ভয়েজার-২ মহাকাশযানের। ভয়েজার-১ মহাকাশযানের আগে পৃথিবী থেকে রওনা দেয় ভয়েজার-২। কিন্তু গন্তব্যে আগে পৌঁছয় ভয়েজার-১। প্রাথমিক পর্যায়ে দুই মহাকাশযানের কার্যকালের মেয়াদ পাঁচ বছর নির্ধারিত হয়েছিল। কিন্তু একের পর এক সাফল্যে NASA-র বিজ্ঞানীরা ইউরেনাস এবং নেপচুনে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু এই মুহূর্তে যা অবস্থা তাতে সঞ্চিত প্লুটোনিয়ান থেকে এযাবৎ যে শক্তির জোগান পেয়েছে ভয়েজার-১ তাও শেষ হওয়ার পথে। একাধিক যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়েছে। বিয়ারিংগুলি খুলে পড়ে গিয়েছে। সমস্যা গুরুতর তবে এখনই আশা ছাড়তে নারাজ বিজ্ঞানীরা। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই ভয়েজার-১কে পুনরায় শক্তি ফিরিয়ে দিতে চেষ্টা চালাচ্ছে নাসা।