সিপিএমের প্রার্থী তালিকায় চমক: দমদমে সুজন, যাদবপুরে ছাত্রনেতা সৃজন

লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha) বাংলার ৪২টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে তৃণমূল। কুড়িটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিজেপিও। কিন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার আশায়, এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করতে পারেনি বামেরা। তবে সূত্রের খবর, সিপিএমের প্রার্থী তালিকায় থাকছে বিশাল চমক। যাদবপুর কেন্দ্রে প্রার্থী করা হচ্ছে যুবনেতা সৃজন ভট্টাচার্যকে। আর দমদমে প্রার্থী হচ্ছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। কোন সমীকরণে এঁদের প্রার্থী করতে চাইছে বামেরা?

এটা জানতে হলে একবার চোখ রাখতে হবে এই দুই কেন্দ্রে বিরোধীদের প্রার্থী তালিকা তালিকার দিকে। দমদমে প্রার্থী হয়েছেন বহুদিনের সাংসদ বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা সৌগত রায়। বিজেপি এই কেন্দ্রীয় এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি। তবে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া আরেক প্রবীণ রাজনীতিবিদ তাপস রায়কে এই কেন্দ্র থেকে টিকিট দিতে পারে গেরুয়া শিবির। যদিও রাজনৈতিক মহলের মতে, কলকাতা উত্তরের কেন্দ্রটি বেশি পছন্দ তাপস রায়ের। কিন্তু যদি দমদমে তাপস রায় বিজেপির প্রার্থী হন, তাহলে ২ হেভিওয়েট রাজনীতিবিদের প্রতিপক্ষ হিসেবে আর এক বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদকেই রাখতে চাইছে আলিমুদ্দিন। এই কেন্দ্রে অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবে নাম উঠে আসার কথা তন্ময় ভট্টাচার্যের। তবে বক্তা হিসেবে বা যে কোনও ইস্যুতে দলের হয়ে লড়াই করার দিক থেকে অনেক কদম এগিয়ে সুজন। যে কোনও ক্ষেত্রেই তিনি দলের হয়ে জান-প্রাণ লড়িয়ে দেন। আবার বিরোধীদের প্রতিও তাঁর অসৌজন্য কখনও প্রকাশ পায়নি। প্রবীণ নেতার যুব সংগঠনের সঙ্গেও ভালো সম্পর্ক। এইসব কারণেই হয়তো সুজনকে বেছে নিয়েছে আলিমুদ্দিন।

যাদবপুর কেন্দ্র বরাবরই নজরে। এর আগে যাদবপুর থেকে দাঁড়িয়ে হেরেছেন সুজন চক্রবর্তী। তবে বামেদের সূর্য যখন মধ্য গগনে তখনই যাদবপুর কেন্দ্র থেকেই দক্ষ, প্রাজ্ঞ, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে পরাজিত করেছিলেন তৎকালীন কংগ্রেস প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই যাদবপুরে তৃণমূল প্রার্থী করেছে যুবনেত্রী সায়নী ঘোষকে। অভিনেত্রী এবং যুবনেত্রী হিসেবে যথেষ্ট জনপ্রিয়তা রয়েছে তাঁর। সংগঠন করেন। দলীয় স্তরেও জনসংযোগ যথেষ্ট ভালো। পাশাপাশি, সায়নী সুবক্তা। এর বিপরীতে বিজেপি প্রার্থী করেছে ডাক্তার অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়কে। চিকিৎসক হিসেবে তাঁর পরিচিতি থাকলেও, রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি কতটা লড়াইয়ে জায়গা করতে পারবেন তা নিয়ে সংশয় আছে খোদ পদ্ম শিবিরে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল প্রার্থীই যে বামেদের মূল প্রতিপক্ষ সেটা বুঝেই হয়তো সৃজন ভট্টাচার্যের মতো লড়াকু যুবনেতাকে এই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করার কথা ভেবেছে বামেরা। যে কোনও আন্দোলনে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দেন সৃজন। এর আগে বিধানসভা নির্বাচনে তিনি লড়াই করেছিলেন। যদিও জিততে পারেননি। তবে সে কেন্দ্রটি ছিল সিঙ্গুর, আর এটা যাদবপুর। যাদবপুরের একটি অংশে বামেদের প্রভাব রয়েছে। আবার কিছুটা জায়গা জুড়ে অতি-বাম মনোভাবাপন্নদেরও প্রভাব আছে। এই পরিস্থিতিতে যুবনেতাকে নিয়ে এসে ফাইট দিতে চাইছে আলিমুদ্দিন।

প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে বৃহস্পতিবারই বামফ্রন্টের বৈঠক হবে। শরিক সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করবেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম (Mohammad Selim)। থাকবেন ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুও। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হতে পারে কারণ তৃণমূল এবং কিছু আসনে বিজেপি প্রার্থী ঘোষণা করে দেওয়ায় জোর কদমে প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে সেখানে বামেরা প্রার্থী তালিকা প্রার্থী ঘোষণা না করায় নিচুতলার কর্মীদের মনবল ভেঙে যাচ্ছে। তবে কংগ্রেসকে নিজেদের আসুন ছাড়তে রাজি নয় ফ্রন্ট শরীকরা এই পরিস্থিতিতে আসন রফা মসৃণ করে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করাটাই এখন আলিমুদ্দিনের প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ।

Previous articleমাতৃহারা হলেন অভিনেতা শাশ্বত! শোকের ছায়া পরিবারে
Next articleনন্দীগ্রাম দিবসে শহিদদের শ্রদ্ধার্ঘ্য মমতা-অভিষেকের