সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ দেবশ্রীর কেরিয়ার নষ্ট করতেই তৃণমূলের গড়ে প্রার্থী করল শুভেন্দু

বামেরা যখন মধ্য গগনের সূর্য তখনও দক্ষিণ কলকাতায় তৃণমূলের গড়ে দাঁত ফোটাতে পারেনি তারা। আর এখন তো তৃণমের ভরা জোয়ার। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্র জয় বিরোধীদের কাছে শুধু কঠিন নয়, অসম্ভব। বাম জমানাতেও এই কেন্দ্রে “ঘর শত্রু” দের প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়ে দেওয়ার রেওয়াজ ছিল। যাতে ভোটে চূড়ান্ত বিপর্যয়ের পর ওই প্রার্থী আর দলের অন্দরে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারেন। কার্যত দলের মধ্যে কোনও নেতা বা নেত্রীর কেরিয়ার শেষ করে দেওয়ার ইচ্ছা থাকলে বামেরা সেই নেতা বা নেত্রীকে দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্রে দাঁড় করিয়ে দিত।

এবার বামেদের পথ অনুসরণ করল রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি, বলা ভালো বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বঙ্গ বিজেপির অন্দরে নিজেকে শীর্ষ নেতা করে তোলার তাগিদে দিলীপ ঘোষকে তাঁর জেতা আসন মেদনিপুর থেকে কলকাঠি নেড়ে অন্যত্র সরিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু। ঠিক একইভাবে সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ দেবশ্রীকে চৌধুরীকে তাঁর জেতা আসন থেকে সরিয়ে দক্ষিণ কলকাতায় বাঘের মুখে ফেলে দিলেন শুভেন্দু।

মোদি সরকারের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রায়গঞ্জের বিদায়ী সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর কাছে লড়াইটা হয়ে উঠল ভয়ঙ্কর কঠিন। ওই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী মালা রায়। তৃণমূলের দূর্গ বলে পরিচিত দক্ষিণ কলকাতায় লড়াই করাটা শুধু কঠিনই নয়, সেখান থেকে জিততেও পারাটাও কার্যত অসম্ভবই।

কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রকের প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী সঙ্ঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠ হলেও রাজ্য রাজনীতিতে খুব একটা পরিচিত মুখ ছিলেন না। তবে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রায়গঞ্জ আসন থেকে জিতে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন। রাজ্য রাজনীতিতে রাতারাতি জায়ান্ট কিলার তকমা পেয়েছিলেন দেবশ্রী। ২০১৯-এর লড়াই রীতিমতো কঠিন ছিল দেবশ্রী চৌধুরীর কাছে। ২০১৪ সালে সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিমের পাশাপাশি লড়াইয়ে ছিলেন কংগ্রেসের হেভিওয়েট দীপা দাশমুন্সি। লড়াইয়ে ছিলেন তৃণমূলের জনপ্রিয় নেতা কানাইয়ালাল আগরওয়ালও। তাঁদের সঙ্গে লড়ে জয় ছিনিয়ে এনেছেন দেবশ্রী। তারও আগে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রাক্তনী। সেবার কেন্দ্র ছিল বর্ধমান দুর্গাপুর আসন। ২০০৬ সালে বালুরঘাট থেকে বিধানসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৬০০০ ভোটে পরাজিত হন।

দলীয় সূত্রে খবর, দেবশ্রী যখন জানতে পারলেন তাঁকে রায়গঞ্জ আসন থেকে ছেঁটে দেওয়ার ছক কষেছেন শুভেন্দু অধিকারী, তখন তিনি দক্ষিণবঙ্গে কোনও একটিআসন চেয়েছিলেন। দমদম কেন্দ্র থেকে দাঁড়ানোর ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু ওই আসনে দলবদলু শীলভদ্র দত্তকে দাঁড় করিয়ে দেন শুভেন্দু। দেবশ্রীকে প্রস্তাব দেওয়া হলে ভোটের টিকিট পেতে হলে দক্ষিণ কলকাতা কিংবা ডায়মন্ড হারবার থেকে দাঁড়াতে হবে। কারণ এই দুই কেন্দ্রে কোনও প্রার্থী পাচ্ছে না দল। অগত্যা শুভেন্দু কারিকুরিতে দেবশ্রী চৌধুরীকে দক্ষিণ কলকাতায় দাঁড় করালো বিজেপি।

Deborshree Chowdhury – suvendi adhikary – south kolkata – bj

Previous article“প্রতিটি মানুষের জীবন রাঙিয়ে উঠুক”! রাজ্যবাসীকে দোলযাত্রার ‘শুভনন্দন’ মুখ্যমন্ত্রীর
Next article“রং জীবনকে আরও প্রাণবন্ত করে”! রাজ্যবাসীকে দায়িত্বের সঙ্গে দোল পালনের বার্তা অভিষেকের