Friday, December 19, 2025

প্রচারের লোক না পেয়েই ‘AI সমতা’! ‘পুঁজিবাদীদের প্রযুক্তি’ ব্যবহার করে সমালোচিত আলিমুদ্দিন

Date:

Share post:

কম্পিউটারের বিরোধিতা করা সিপিএম-এর প্রচারে এবার AI-এর সাহায্য নিচ্ছে। আবার সেই AI প্রচারকের নাম দিয়েছে সমতা। যা দেখে বিরোধীরা বলছে, ৮-এর দশকে পশ্চিমবঙ্গে কম্পিউটার (Computer) ঢোকা আটকানো মতো উন্নয়ন-বিরোধী কাজ করা বামেরা এবার ভোল বদলাচ্ছে? আসল কারণ না কি অন্য। দেওয়াল লেখা থেকে প্রচার- কোনও কিছুর জন্যই লোক পাচ্ছে না আলিমুদ্দিন। ফলে এখন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নির্ভর অ্যাঙ্কর!

আটের দশকে প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর আমলে কলকাতার ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউটে কম্পিউটারের গাড়ি নিরাপদে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বায়ুসেনার বিমানে করে ১২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠাতে হয়েছিল। কারণ, রাজ্যে কম্পিউটার ঢোকার তীব্র বাধার কথা ঘোষণা করেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। দিন বদলেছে। “আমরা ২৩৫ ওরা ৩৫” বলা তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে (Buddhadev Bhattacharya) জীবদ্দশাতেই দেখে যেতে হচ্ছে যে তাঁরা শূন্য। সময়ের দাবি মেনে অনেকদিনই স্যোশাল মিডিয়াকে প্রচার, বার্তার হাতিয়ার করেছে CPIM। এমন কী ব্রিগেডের আগে চটুল বাংলা গানের প্যারোডি করে কর্মী-সমর্থকদের উজ্জীবিত করার চেষ্টাও করে বামেরা। তাতে ব্রিগেড ভরলেও ভোট বাক্স শূন্যই ছিল। এবার প্রচারের জন্য লোক পাচ্ছে না CPIM। দেওয়াল লেখাতেও অনীহা। ফলে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের স্মরণাপন্ন আলিমুদ্দিন। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে যখন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা থেকে শুরু করে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ঝাঁপিয়েছে রাজ্যের শাসকদল-সহ বিরোধীরা তখন কর্মী অভাবে ধুঁকতে থাকা বামেরা এআই-অ্যাঙ্কর এনে ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচার শুরু করে কার্যত দৈন্যতা বুঝিয়ে দিল। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, দলের পরিস্থিতি দেখে সিপিএমের ক্যাডাররা আর মাঠে নেমে লড়াইয়ে রাজি নয়।

কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গের কোথাও কম্পিউটার চালু করতে দেওয়া হবে না- ১৯৭৭ সালে বাংলার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই নিয়ে লাগাতার রীতিমতো জঙ্গি আন্দোলন করে জ্যোতি বসু সরকার। আটের দশকে যখন বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় এমনকী দেশেও কয়েকটি জায়গায়, ব্যাংক এবং সরকারি অফিসে কম্পিউটার বসানোর কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে তখনও নো কম্পিউটার বলে কঠোর অবস্থানে অনড় ছিল সিপিএম। কারণ তাদের যুক্তি ছিল কম্পিউটার চালু হলে প্রচুর শ্রমিক-কর্মী কাজ/চাকরি পাবেন না। যদিও পরে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ফার ইস্টার্ন ইকোনমিক রিভিউ- এর একটি সাক্ষাৎকারে স্বীকার করে নেন, কম্পিউটার-বিরোধিতা বামপন্থীদের বোকামি ছিল।

শূন্যের ধারাবাহিকতার পরে, এবারের নির্বাচনে প্রচারের জন্য লোক খুঁজে পাচ্ছে না বামেরা। যতই তরুণদের প্রার্থী করুক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তা এবং প্রশাসনিক সাফল্যকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মুখ নেই আলিমুদ্দিনে। ফলে ফ্রিল্যান্স ওয়েব ডেভেলপারদের দিয়ে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সে ভরসা রাখতে হচ্ছে কমরেডদের। দোলের দিন সিপিএমের অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেল ও ফেসবুক পেজ থেকে ২৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। রাজ্যবাসীকে দোলযাত্রার দলের শুভেচ্ছা জানিয়েছে AI অ্যাঙ্করের মাধ্যমে।

তবে, এই পোস্টের পরেই স্যোশাল মিডিয়া প্রচুর সমালোচনা ছড়িয়ে পড়ে। কেই লেখেন, অ্যাঙ্কারকে দেখে বিজেপি প্রার্থীর মতো লাগছে। কারও কথায় এটা তো মার্কিন পুঁজিবাদীদের প্রযুক্তি। সব মিলিয়ে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে প্রচার করতে গিয়ে কটাক্ষের শিকার সিপিএম।





spot_img

Related articles

স্বচ্ছ ভারত মিশন প্রকল্পে রাজ্যে আরও ২৩০ কোটি টাকা খরচ, বেশ কিছু অর্থ দেবে রাজ্য

স্বচ্ছ ভারত মিশন (Swachh Bharat Mission) প্রকল্পে রাজ্যে (State) আরও ২৩০ কোটি টাকা খরচ হতে চলেছে। পঞ্চায়েত দফতর...

ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টা, কমিশনকে নিশানা ব্রাত্যর

শিক্ষকদের বিএলওর কাজে যুক্ত করে পঠন-পাঠনে এমনিই ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছে নির্বাচন কমিশন। এদিকে, সামনেই মাধ্যমিক পরীক্ষা। তাই ওই...

দু-মলাটে প্রকাশ হল তৃণমূল সরকারের দেড় দশকের রিপোর্ট কার্ড ‘উন্নয়নের পাঁচালি’

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) উদ্বোধন করেছিলেন আগেই। শুক্রবার বই আকারে প্রকাশিত হল তৃণমূল সরকারের (TMC Government) দেড়...

৬০ কোটির কেলেঙ্কারির ঝামেলায় আবারও নাম জুড়লো শিল্পা শেট্টির

শিল্পা শেট্টির বাড়িতে তল্লাশি! ৬০ কোটির কেলেঙ্কারির অভিযোগে ক্ষুব্ধ অভিনেত্রী বললেন, “আমি নির্দোষ”। ৬০ কোটি টাকার আর্থিক কেলেঙ্কারির...