জালিয়াতি! তমলুকে অভিজিতের বুথ সভাপতি সহ বিজেপির ১২জন পুরুষ লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের উপভোক্তা!

বিজেপি নেতারা ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর উপভোক্তা! ভাবছেন ঠাট্টা! হ্যাঁ, এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য এবার সামনে এলো। ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর উপভোক্তা তালিকায় ১২ জন পুরুষ! শুধু তাই নয়, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পূর্ব মেদিনীুরের তমলুক লোকসভার অন্তর্গত ময়নার এক পরিচিত বিজেপি নেতা। বাকিরাও এলাকার বিজেপি কর্মী হিসেবে পরিচিত। তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসে ঢুকেছে প্রকল্পের টাকা। এবার তমলুকে বিজেপি প্রার্থী স্বেচ্ছাবসর নেওয়া হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। যিনি আবার স্বঘোষিত দুর্নীতি বিরোধী যোদ্ধা বলে জাহির করেন। তাঁর লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির বুথ সভাপতি ও পুরুষ কর্মীরা ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ – এর টাকা চুরি করছে। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, এ বিষয়ে কী বলবেন অভিজিৎবাবু! এটা কী দুর্নীতি নয়? প্রকাশ্যে বিবৃতি দিন বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

ঘটনা ঠিক কী? প্রশাসন সূত্রে খবর, বিজেপির কয়েকজন পুরুষ নেতা-কর্মীকে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পের টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এই ‘অসম্ভব’কে সম্ভব করার পিছনে রয়েছে উপভোক্তা তালিকায় নাম থাকা ওই বিজেপি নেতার ছেলের জালিয়াতি! ময়না-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ হরকুলি গ্রামের যুবক শ্রীকান্ত দাস একটি সংস্থার অধীনে ভোটার কার্ড, আধার কার্ডের কাজ করত। বিভিন্ন সরকারি অফিসের কাজের বরাত পাওয়া ওই সংস্থা পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, হুগলি জেলায় তাকে কাজে পাঠাত। সেই সুযোগে শ্রীকান্ত হুগলির খানাকুল-২ নং ব্লকের লগ-ইন আইডি ব্যবহার করে এই জালিয়াতি করে। মুচলেকা দিয়ে সেকথা কবুলও করেছে অভিযুক্ত।

জানা গিয়েছে, হুগলির খানাকুল-২ ব্লকে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পে আবেদনকারীদের নাম, নথির সঙ্গে ময়নার কয়েকজন বাসিন্দার অ্যাকাউন্ট নম্বর জুড়ে দেয় সে। ফলে নাম-ঠিকানা খানাকুলের হলেও ময়নার বাসিন্দারা বাড়িতে বসে টাকা পেতে শুরু করেন বিজেপির ওই পুরুষ কর্মীরা। আর দিনের পর দিন প্রকল্প থেকে বঞ্চিত থাকেন প্রকৃত উপভোক্তারা।

দক্ষিণ হরকুলি বুথের বিজেপি সভাপতি অশোক দাস। শ্রীকান্ত তাঁর ছেলে। বিজেপি নেতা অশোক দাসছাড়াও ওই তালিকায় রয়েছেন মহিম দাস, মণ্টু দাস, সুখেন মাইতি, অমরেশ মাইতি, রাহুল পাহাড়ি সহ মোট ১২জন পুরুষ। সকলেই বিজেপির সক্রিয় ক্যাডার। এরা প্রত্যেকেই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের হয়ে ভোটের ময়দানে নেমেছেন।

এদিকে প্রকৃত উপভোক্তারা টাকা না পেয়ে বিডিও অফিসে যোগাযোগ করার পর তদন্ত হতেই বিষয়টি সামনে আসে। বিজেপি নেতার ছেলে শ্রীকান্ত দাসকে তলব করেন ময়নার বিডিও সমীর পান। প্রায় তিন ঘণ্টা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সমীরবাবু বলেন, ‘খানাকুলের বিডিওর লগ-ইন আইডি ব্যবহার করে কারচুপি করা হয়েছিল।’ অভিযুক্ত শ্রীকান্ত বলে, ‘আমি ভুলবশত এটা করেছি। আর কখনও এরকম ভুল করব না বলে বিডিওকে জানিয়েছি।’

আরও পড়ুন- রাজ্যে কোথায় কোথায় ভোট পরবর্তী হিংসা, আজই রিপোর্ট তলব কমিশনের!


 

Previous articleরাজ্যে কোথায় কোথায় ভোট পরবর্তী হিংসা, আজই রিপোর্ট তলব কমিশনের!
Next articleওয়াটগঞ্জ খুনের কিনারা, গ্রেফতার মৃতার দেওর!