ধর্মীয় রাজনীতি দিয়েই যে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে বিজেপি, তা আরও একবার প্রকাশ্যে চলে এলো। এবার জন্ম থেকে ধর্মের নথিভুক্তিকরণে নতুন নিয়ন্ত্রণ আনতে চলেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ইতিমধ্যেই দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্ম ও মৃত্যুর সময় থেকে তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ কেন্দ্রীয়ভাবে হবে বলেই বিধি পাশ হয়েছে সংসদে। এই তথ্য ন্যাশানাল পপুলেশন রেজিস্ট্রারে নথিভুক্ত করারও পরিকল্পনা করা হয়েছে। অর্থাৎ জনগণনার নতুন আইনে বাবা-মায়ের ধর্মও জনগণনার মধ্যে তালিকাভুক্ত করাকেই গুরুত্ব দিচ্ছে বিজেপি সরকার। এর পিছনে অসৎ উদ্দেশ্য থাকার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে তৃণমূলের তরফে।

আগের আইন অনুযায়ী একটি শিশুর জন্মের সময় তার পরিবারের ধর্মীয় পরিচয়ের উল্লেখ করতে হত। ২০২৩ সালে পাশ হওয়া নতুন পাশ হওয়া বিধিতে বাবা ও মায়ের ধর্ম আলাদাভাবে উল্লেখ থাকতে হবে, এমনটাই নির্দেশ জারি হতে চলেছে। শিশু দত্তক নেওয়ার ক্ষেত্রেও এভাবেই নিয়মে পরিবর্তন আনতে চলেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তবে এই বিধিকে আইনে পরিণত হতে হবে এবং রাজ্য সরকারগুলিকে তা অনুমোদন করতে হবে।

১ অক্টোবর থেকে কেন্দ্রের নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক জন্ম ও মৃত্যুর ডিজিটাল রেকর্ড রাখা হবে। কোনও জন্ম নথিভুক্তকরণের দুটি ভাগ থাকে – আইনি তথ্য ও সংখ্যাতত্ত্বগত তথ্য। তবে এবার বাবা-মায়ের ধর্মীয় তথ্য সংখ্যাতত্ত্বগত তথ্যের মধ্যেই রেখেছে কেন্দ্র সরকার। অর্থাৎ দেশের ধর্মীয় জনগণনার উপর কতটা গুরুত্ব বিজেপি দিচ্ছে তা তাদের নতুন নিয়ম প্রণয়ন থেকেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

বিজেপির ধর্মীয় নীতিকে প্রশ্নের মুখে তুলে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “এটা কিছুটা প্রশাসনিক বিষয়। সকলের পরিচয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভাল হত যদি ধর্ম বিষয়টাই এড়িয়ে যাওয়া যেত। বহু জায়গাতেই এর উল্লেখ থাকে। শিশুর বাবা বা মায়ের ধর্মের পরিচয়ও দিতে হবে আলাদা করে। এখন সেসব আইন আনার চেষ্টা হচ্ছে। এটা কোনও অসৎ উদ্দেশ্য আছে। অন্য উদ্দেশ্য আছে। প্রশাসনিক কিছু ক্ষেত্রে ধর্মের উল্লেখ, রীতি-নীতি, খাদ্যাভ্যাসের বিষয় থাকে। কিন্তু শিশুর জন্মের সময় বাবা-মায়ের ধর্ম উল্লেখ করতে হবে এটা ধর্ম নিয়ে ধর্মীয় মেরুকরণ নিয়ে ভবিষ্যতে কারও কোনও গভীর চক্রান্তমূলক পরিকল্পনা আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার।”
