Thursday, November 6, 2025

রবিবার লে (Leh) শহর থেকে ভারত-চিন সীমান্ত পর্যন্ত ‘পশমিনা মার্চ’ (Pashmina March) করার ঘোষণা করেছিলেন লাদাখের জন্য কেন্দ্র সরকারের দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষার দাবিতে আন্দোলনে নামা লাদাখের সাধারণ মানুষ। তার আগে শনিবার সকালে লে শহরকে মুড়ে ফেলা হল কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিশেষ নিরাপত্তায়। এমনকি তথ্য আদান প্রদানের উপর ১৪৪ ধারা জারি করে লে শহরকে যুদ্ধক্ষেত্রের আগের পরিস্থিতি বলে মনে হতে থাকে। সোনম ওয়াংচুর (Sonam Wangchuk) আন্দোলন দেখে যাদের মনে হয়েছিল আমির খানের ব়্যাঞ্চো চরিত্রের বাস্তবায়ন করেছেন তিনি, শনিবারের লে শহরের চেহারা দেখলে তাঁদের মনে পড়তেই পারে আমির খানেরই রং দে বসন্তি সিনেমার ইন্ডিয়া গেটের সামনে আন্দোলনে বসা ডিজে ও তার বন্ধুদের ঘিরে ফেলা দিল্লির কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কথা। তবে তাদের সেই সিনেমায় যা পরিণতি হয়েছিল, তা হয়তো নীল আকাশের চাদর ঢাকা সুন্দরী লে-তে কেউ স্বপ্নেও কল্পনা করবেন না।

সোনম ওয়াংচুর সঙ্গে টানা ২১ দিন অনশন করেছেন লাদাখের (Ladakh) মানুষ। এরপর সেই অনশন শুরু করেছিলেন লাদাখের মহিলারা। তাঁদের আশা ছিল এর মধ্যে কেন্দ্র সরকার নিজেদের ৫ বছর আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতির কথা মনে করবে। সাধারণ মানুষের ন্যায্য দাবির কথা মনে করে নজর দেবেন লাদাখে। কিন্তু তার কোনও রকম ইঙ্গিত না পাওয়ায় সত্যাগ্রহের পথে হাঁটার পরিকল্পনা নেন তাঁরা। চিন সীমান্ত পর্যন্ত হেঁটে একদিকে সীমান্ত চিনা (China) অনুপ্রবেশ অন্যদিকে পরিবেশ ধ্বংস করে কারখানা গড়ে তোলার আসল ছবি তুলে ধরতে চান তাঁরা। এই পশমিনা মার্চ শুরু হওয়ার কথা ৭ এপ্রিল।

তার আগে লে শহরে, যেখানে আন্দোলনকারীরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান বিক্ষোভ করছেন সেখানে রীতিমত আতঙ্কের পরিবেশ করে তুলল কেন্দ্র সরকার। একদিকে মহিলাদের অনশনের পরে অনশনে বসা যুবদের থানায় ডেকে ভয় দেখানো শুরু হয়। স্থানীয় ধর্মগুরুদের হস্তক্ষেপে তাঁদের গ্রেফতারি এড়ানো যায়। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় লে শহর। সেই সঙ্গে বাহিনীর কাছে কাঁদানে গ্যাসের সেল (tear gas cell), স্মোক গান এমনকি কাঁদানে গ্রেনেড (granade) রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই ১৪৪ ধারা জারি করে ইন্টারনেট (internet) বন্ধ রাখার নির্দেশিকাও জারি হয়ে গিয়েছে।

আন্দোলনকারীদের দাবি, যে তৎপরতা আন্দোলন বন্ধ করতে দেখানো হচ্ছে তা বিগত প্রায় একমাসের আন্দোলনের সময় দেশের নিরাপত্তা দিতে ব্যবহার হতেও দেখা যায়নি। ভারত-চিন সীমান্তের যে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় লাদাখের মানুষ বাস করেন, তার উন্নয়নের জন্যও এত তৎপরতা দেখা যায়নি যা পশমিনা মার্চের আগে দেখা যাচ্ছে। তাঁদের অভিযোগ, নিজেদের খনিমালিক বন্ধুদের পিঠ বাঁচাতে কী এবার লাদাখের মানুষকে ‘দেশ-বিরোধী’ (anti-national) তকমা দিতে চলেছে কেন্দ্র? ৩২ দিন ধরে চলা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে তবে কেন এত ‘নিরাপত্তা’, প্রশ্ন লাদাখের মানুষের।

Related articles

রাত পোহালে প্রথম দফার নির্বাচন বিহারে: হিংসা ঠেকানোই চ্যালেঞ্জ

নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে পরপর খুন। রাজনৈতিক নেতা থেকে সমর্থক। বিহার বিধানসভা নির্বাচনে তাই শান্তি বজায় রাখাই চ্যালেঞ্জ...

বাংলা কথায় দক্ষতা, কোন পদে পান তৃপ্তি? দীপ্তিকে নিয়ে স্মৃতির ঝাঁপি খুললেন ‘অভিভাবক’ মিঠু

সন্দীপ সুর বাংলার প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে আইসিসি একদিনের বিশ্বকাপ জিতেছেন রিচা ঘোষ কিন্তু ভারতীয় দলের আরও এক ক্রিকেটারের সঙ্গে...

দিঘার জগন্নাথ ধামে প্রথম রাস উৎসবে ভক্তদের ঢল 

দিঘার জগন্নাথ ধামে এবারই প্রথম পালিত হল রাস উৎসব, আর সেই উপলক্ষে সকাল থেকেই উপচে পড়েছে ভক্তসমুদ্র। উৎসবের...

বেঁচে আছেন, তাই জানতে পারলেন ‘দোষী নন’: আজব বিচার উত্তরপ্রদেশে

বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে। উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের (Aligarh) মিঠু সিংয়ের জীবনে যেন সেটাই সত্যি হতে বসেছিল। অবশেষে ৫৫...
Exit mobile version