“পুলিশ সঙ্গে গেলে এটা হত না”! ভূপতিনগরকাণ্ডে সাফ জানাল রাজ্য, আগামিকাল পরিদর্শনে চন্দ্রিমা-কুণাল

রবিবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ভূপতিনগর যাচ্ছেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও কুণাল ঘোষ। সূত্রের খবর, ধৃত দুই তৃণমূল নেতার পরিবারের পাশে দাঁড়াতে বলা হয়েছে তাঁদের। রবিবার তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি বলাইচরণ মাইতি ও বুথস্তরের নেতা মনোব্রত জানার পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি এলাকায় একটি জনসভা করারও কথা রয়েছে তাঁদের। ভগবানপুর ২ নম্বর ব্লকের অর্জুননগরে এই জনসভা হবে। শনিবার ভোররাতে ভূপতিনগরের বোমা বিস্ফোরণ মামলায় আচমকাই সেই গ্রামে হানা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। অভিযোগ, ভোটের মুখে জোর করে ও বেআইনিভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি বলাইচরণ মাইতি ও বুথস্তরের নেতা মনোব্রত জানাকে পাকড়াও করে আনার সময় গ্রামবাসীদের বাধার মুখে পড়তে হয় এনআইএ আধিকারিকদের। পাথরের আঘাতে মাথা ফাটে এক এনআইএ আধিকারিকের। তবে এদিনের ঘটনার পিছনে বিজেপির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে ‘পুরোটাই পরিকল্পিত’ বলে সাফ জানিয়েছে তৃণমূল।

তবে এদিন সরকারের তরফে সাফ জানানো হয়েছে, এদিন স্থানীয় থানায় কথা না বলেই ভূপতিনগরের ৪-৫ গ্রামে আচমকাই পৌঁছে যান এনআইএ আধিকারিকরা। এরপরই রাজ্য পুলিশের সাহায্য না নিয়েই গাজোয়ারি করে একাধিক জায়গায় হানা দেয়। কিন্তু যদি এনআইএ পুলিশকে জানিয়ে সবটা করত সেক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির এতটা অবনতি হত না। পাশাপাশি আরও জানানো হয়েছে, এটা মূলত ২০২২ সালের ঘটনা। কিন্তু ২০২৩ সালের জুন মাসে তদন্তভার হাতে নেয় এনআইএ। কিন্তু লোকসভা ভোটের মুখেই কেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার এই ‘অতিতৎপরতা’ না নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তবে লোকসভা নির্বাচনের মুখে মোদি সরকারের প্রতিহিংসার রাজনীতি ফের প্রকাশ্যে চলে এসেছে। তবে এখানেই শেষ নয় এদিন রাজ্য সরকারের তরফে আরও জানানো হয়েছে, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে এনআইএ। ভূপতিনগরের কোনও উচ্চপদস্থ জেলা শাসক, পুলিশ সুপার কারও সঙ্গে কথা না বলেই মর্জিমাফিক অ্যাকশন নিতে গিয়ে উল্টে বিপদের মুখে পড়তে হয়েছে এনআইএকে। এমনকি নির্বাচন কমিশনের তরফে জেলা শাসককে পদে বসান হলেও তাঁকেও কিছু জানানো হয়নি। পাশাপাশি ২০২৩ সালে রাম নবমীর ঘটনায় এনআইএ অতিসক্রিয়তা দেখাতে গিয়ে উল্টে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রশ্নের মুখে ফেলে বলেও সাফ জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৫ জানুয়ারি এইভাবেই বিনা অনুমতিতে রেশন বন্টন মামলার তদন্তে সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা। গ্রামবাসীদের আক্রোশে জখম হয়েছিলেন বেশ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কয়েকজন আধিকারিক। সেই একইভাবে গ্রামবাসীদের কাছে গাজোয়ারি করতে গিয়ে ফের একি দশা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের। তবে শনিবার বালুরঘাটের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মাঝরাতে কেন গিয়েছিল এনআইএ? স্থানীয় পুলিশকে জানিয়ে তো যায়নি। মাঝরাতে গ্রামের মানুষ অচেনা কাউকে দেখলে তো এমনই ঘটে! শুধু তাই নয়, ঘটনার নেপথ্যে বিজেপির চক্রান্তেরও ইঙ্গিত দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বলেন, ভোটের আগে বেছে বেছে বুথে বুথে তৃণমূলের লোকজনকে গ্রেফতারের চক্রান্ত করছে বিজেপি। বিজেপির এই নোংরা রাজনীতির বিরুদ্ধে সারা বিশ্বকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাব।

এরপরই রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষকে ভূপতিনগরে গিয়ে দুই তৃণমূল নেতার পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন- তৈরি হল তৃণমূলের ১২ সদস্যের ইস্তেহার কমিটি, নেতৃত্বে অমিত মিত্র

Previous articleতৈরি হল তৃণমূলের ১২ সদস্যের ইস্তেহার কমিটি, নেতৃত্বে অমিত মিত্র
Next articleআগামিকাল লাল-হলুদের সামনে বিএফসি, প্লে-অফে টিকে থাকতে তিন পয়েন্ট লক্ষ্য ইস্টবেঙ্গলের