রাজ্য পুলিশের কৃতিত্বকে আড়াল! NIA ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপের আর্জি কুণালের

নির্বাচন কমিশন (Election Commision) কি বিজেপির (BJP) কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে? তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) অভিযোগের পরও কেন এনআইএ-র (NIA) ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হল না? শনিবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে এমনই অভিযোগ করলেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। এদিন দুপুরে সাংবাদিক সম্মেলন করে কুণাল প্রশ্ন তোলেন, কোথায় বিজেপি নেতাদের মানহানি মামলার নোটিশ? পাশাপাশি জঙ্গি দমনে রাজ্য পুলিশের কৃতিত্বকে ধামাচাপা দিতেই উঠেপড়ে লেগেছে মোদি সরকার, এমন অভিযোগও সামনে এসেছে।

দিনকয়েক আগেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তথ্য দিয়ে অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-র সুপারের বাড়িতে রাতের অন্ধকারে বিজেপি নেতারা যাচ্ছেন। গোপনে মিটিং হচ্ছে। তাঁদের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী ধরপাকড় চলছে। এনআইএ কর্তা ধনরাম সিংয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি। অভিযোগের পর শোনা গিয়েছিল বিজেপি নেতারা মানহানির মামলা করবেন। তিনি বলেন, অভিষেকের অভিযোগ যদি মিথ্যে হয় তাহলে মানহানির নোটিশ দিন বিজেপি নেতা। আর অভিযোগ যদি সত্যি হয় তাহলে সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিক কমিশন। কিন্তু এতক্ষণ কেটে গেলেও কোনওটাই কেন হল না, এদিন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক।

পাশাপাশি আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলই বিপুলভাবে জিতছে বলেও মন্তব্য করেন কুণাল। তিনি জানান, নির্বাচনী সমীক্ষায় কান দেবেন না। এসবই দর্শক ধরার খেলা। এর সঙ্গে জনমতের কোনও সম্পর্ক নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াই, কেন্দ্রের বঞ্চনা দেখে নিজেদের অভিজ্ঞতায় সিদ্ধান্ত নিন। এই ভাষাতেই এদিন তথাকথিত নির্বাচনী সমীক্ষাকে তোপ দাগল তৃণমূল। শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ নির্বাচনী সমীক্ষাকে একহাত নিয়ে বলেন, ভোট আসার সঙ্গে সঙ্গে কিছু সমীক্ষা দেখা যাচ্ছে। আমরা খুব স্পষ্ট ভাবে বলছি, যে সমস্ত সমীক্ষা প্রকাশিত হচ্ছে, তা দেখার পর আমরা জনগণের ওপর পূ্র্ণ আস্থা রাখছি। একুশের নির্বাচনের আগে আমরা দেখেছিলাম গেল গেল রব উঠেছিল। তৃণমূলকে দুর্বল দেখিয়ে অন্য দলকে এগিয়ে রাখা হয়েছিল সমীক্ষায়। তার নিট রেজাল্ট তৃণমূল দুশোর বেশি আসন পেয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। সমীক্ষার ইতিহাসে বারবার যা দেখা গিয়েছে তা জনমতের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়নি। অর্থাৎ সমীক্ষা ভুল বলে প্রমাণিত হয়েছে। কুণাল মনে করিয়ে দেন, এবার ৩০ থেকে ৩৫টি সিট তৃণমূল পাবে। ওটা ৩৬, ৩৭ অথবা ৩৮-এ চলে যায় যাতে নেতৃত্ব সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করছেন। মানুষের বিপুল সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। ফলে এইসব সমীক্ষার দিকে তাকাবেন না, নিজেদের সিদ্ধান্তে থাকুন। বাংলার মানুষ তৃণমূলের সঙ্গে আছে। তৃণমূল বাংলার মানুষের সঙ্গে আছে। তৃণমূল জিতছে, এসবে প্রভাবিত হবেন না।

তবে এখানেই শেষ নয়, এদিন সমীক্ষার পাশাপাশি এক তৃণমূল কর্মীকে নিগ্রহকাণ্ডে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল। কুণাল বলেন, বিজেপির পোষ্যপুত্র প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি যেভাবে প্রকাশ্যে এক তৃণমূল কর্মীর গায়ে হাত তুলেছেন আমরা তার তীব্র নিন্দা করছি। রাজ্য কংগ্রেস সভাপতির এই আচরণ প্রমাণ করে দিচ্ছে তাঁরা কোন সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করেন। তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছেন, দিশাহীন জায়গায় আছেন। সাধারণ তৃণমূল কর্মীদের ওপর যে আক্রোশ তিনি দেখিয়েছেন, এর জন্য তাঁর ক্ষমাপ্রার্থনা ও দুঃখপ্রকাশ করা উচিত।

Previous articleজোর করে স্বীকারোক্তি! আদালতে ইডি-র নামে অভিযোগ শাহজাহানের
Next articleঅভিনব উদ্যোগ! মুখ্যমন্ত্রীর ছবি বুকে এঁকে ভোট প্রচার তৃণমূল কর্মীর