রাত পোহালেই উত্তরের তিন জেলায় ভোট, সন্ত্রাসের আবহ তৈরির চেষ্টায় বিজেপি

বহু জায়গায় বোমাবাজি শুরু হয়েছে, কোথাও কোথাও আবার টাকা দিয়ে ভোট কেনার চেষ্টাও করছেন গেরুয়া নেতারা। রাত জেগে বুথ কেন্দ্র পাহারা দিতে তৎপর তৃণমূল কর্মীরাও।

শুক্রবার লোকসভা নির্বাচনের (Loksabha Election)প্রথম দফার ভোট হতে চলেছে উত্তরের তিন কেন্দ্রে— কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি (Coochbehar, Alipurduar, Jalpaiguri)। আবহাওয়ার ঊর্ধ্বমুখী পারদের সঙ্গে ভোটের উত্তাপ সামাল দিতে তৈরি জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যেই ভোটকর্মীরা ইভিএম মেশিন (EVM Machine) নিয়ে নিজেদের বুথে চলে গিয়েছেন। হাওয়া অফিস (Weather Department) বলছে ১৯ এপ্রিল দিনের তাপমাত্রা থাকবে ৩৩ ডিগ্রির ওপরে। গরমের দাবদাহে ভোটার ও ভোট কর্মীদের যাতে সমস্যা না হয়, সেদিকেও নজর রেখেছে জেলা প্রশাসন। এর মাঝেই বিজেপির সন্ত্রাস অব্যাহত। কোচবিহারে প্রিসাইডিং অফিসারদের দিয়ে জোর করে সই করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিএসএফের বিরুদ্ধে। দিনহাটায় আক্রান্ত তৃণমূল কর্মী। পরাজয় টের পেয়ে আগে থেকেই সন্ত্রাসের আবহাওয়া তৈরি করছে বিজেপি (BJP), অভিযোগ তৃণমূলের (TMC)। বহু জায়গায় বোমাবাজি শুরু হয়েছে, কোথাও কোথাও আবার টাকা দিয়ে ভোট কেনার চেষ্টাও করছেন গেরুয়া নেতারা। রাত জেগে বুথ কেন্দ্র পাহারা দিতে তৎপর তৃণমূল কর্মীরাও।

উত্তরবঙ্গে ভোট নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে জেলা প্রশাসনের তরফে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তিন জেলায় এমন অনেক কেন্দ্র রয়েছে যেখানে বুথ কেন্দ্রের আশেপাশে জঙ্গল ঘেরা পরিবেশ। স্বভাবতই বন্যপ্রাণীর আক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই সেদিকে কড়া নজর রেখেছে বনকর্মীরা। এ ছাড়াও আচমকা প্রাকৃতিক দুর্যোগ সংক্রান্ত কোনও সমস্যা হলে তা মোকাবিলায় তৈরি রয়েছে সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা।

আলিপুরদুয়ারে মোট ভোটার ১৭ লক্ষ ৭২ হাজার ৮৭৭। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছেন ৮ লক্ষ ৮৮ হাজার ৭৯৮ ও মহিলা ভোটার ৮ লক্ষ ৮৪ হাজার ১৫ জন।

কোচবিহারে ১৪ জন লড়ছেন। উল্লেখযোগ্য প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া (তৃণমূল), নিশীথ প্রামাণিক (বিজেপি), নীতীশচন্দ্র রায় (ফরওয়ার্ড ব্লক) ও পিয়া রায়চৌধুরি (কংগ্রেস)। মোট ভোটার ১৯ লক্ষ ৬৬ হাজার ৫৬৩। পুরুষ ও মহিলা ভোটারের সংখ্যা যথাক্রমে ১০ লক্ষ ১৪ হাজার ৬১৩ এবং ৯ লক্ষ ৫১ হাজার ৯১৭। তৃতীয় লিঙ্গ ৩৩। মোট ২০৪৩টি ভোট কেন্দ্র রয়েছে যার মধ্যে স্পর্শকাতর বুথ ১৯৬টি, মোট ভোটকর্মী ১২ হাজার ১৮০ জন।

জলপাইগুড়ি জেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১৮ লক্ষ ৮৫ হাজার ৯৬৩। মহিলা ভোটার ৯ লক্ষ ২৭ হাজার ৩৩৯ এবং পুরুষ ভোটার ৯ লক্ষ ৫৮ হাজার ৬১১ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ১৩।

জেলাশাসক শ্যামা পারভিন জানান, গরমের কথা মাথায় রেখে প্রতি ভোটকেন্দ্রে ছাউনির ব্যবস্থা রয়েছে। জেলায় সমস্ত বুথ মিলে ১০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন হয়েছে। রাজ্য পুলিশ ৮ হাজার, জেলার মোট বুথ ১৯০৪ যার মধ্যে স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা ৩৯৯। প্রশাসন ১৮টি বুথে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসিয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলায় মডেল বুথ ১৪৯ এবং থিমবুথ ১৩। মহিলা পরিচালিত বুথ থাকছে ১৪৯টি। বুথ অনুযায়ী একটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে দুটি বুথ থাকলে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে চারজন। দুইয়ের বেশি বুথ হলে আটজন। এছাড়া রাজ্য পুলিশ থাকবে একজন করে। ২৭টি কুইক রেসপন্স টিম থাকছে। প্রত্যেক টিমে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। আরটি মোবাইল বা হেভি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড প্রত্যেক থানায় একটি করে থাকবে। সব বুথে ওয়েবকাস্টিং রাখা হবে।

 

Previous articleমাহির কাছে অদ্ভুত আবদার লখনৌ-এর, ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়
Next articleপ্রিসাইডিং অফিসারদের জোর করে ফর্মে সই করাছে বিএসএফ, বিস্ফোরক উদয়ন