Thursday, August 28, 2025

টিবি রোগীদের ৬ মাস ওষুধ পাঠাচ্ছে না কেন্দ্র, বিপাকে বাংলার ১ লক্ষ রোগী

Date:

বিগত ৬ মাস ধরে বাংলার টিবি রোগীদের ওষুধ পাঠাচ্ছে না কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সেন্ট্রাল টিবি ডিভিশন। যার নিট ফল, জীবন-মৃত্যুর সঙ্কটে পড়েছেন বাংলার যক্ষ্মারোগীরা। বর্তমানে বাংলার প্রায় ১ লক্ষ ২ হাজার রোগী চার ধরনের যক্ষ্মার ওষুধ পান। সিংহভাগই হলেন ড্রাগ সেনসেটিভ টিবি রোগী। মানে সরকার নির্ধারিত যক্ষ্মার ওষুধ নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নিলে তাঁরা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যান। বাকি ১-২ শতাংশ হলেন ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট টিবি রোগী। অর্থাৎ হাতেগোনা কিছু ওষুধ ও ইঞ্জেকশন দিলে তবেই তাঁদের রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তাদের অভিযোগ, কেন্দ্র চূড়ান্ত অনিয়মিতভাবে বাংলায় পাঠাচ্ছে সাধারণ টিবিরোগীদের ওষুধ। ফলে সাধারণ যক্ষ্মারোগীরা ক্রমেই ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট যক্ষ্ণারোগীতে পরিণত হবেন। শুধু তাই নয়, এরকম চলতে থাকলে বছরে গড়ে একজন টিবি রোগী আশপাশের ৮ থেকে ১০ জন মানুষকে সংক্রামিত করবেন। হু হু করে বাড়বে রোগ। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে আছে, আর মাত্র ১ বছর, ২০২৫ সালের মধ্যে ভারতকে করতে হবে যক্ষ্মামুক্ত। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একথা বলেছেন। অথচ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকই জীবনদায়ী ওষুধ সরবরাহ সুনিশ্চিত করতে পারছে না।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আশু বিপদ ঠেকাতে রাজ্য স্থানীয়ভাবে ওষুধ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু তাতে বিপদ খুব একটা কমেনি। মূলত যে বহুজাতিক সংস্থা বেশিরভাগ যক্ষ্মার ওষুধ নির্মাতা, জেলায় জেলায় মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকরা তার প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ওষুধ পাঠাতেও বলেছেন। কিন্তু বহুক্ষেত্রেই তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, যা চাহিদা, তাতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন। বিপাকে পড়ে এখন জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরগুলি ওষুধের দোকান থেকে টিবির ওষুধ কেনা শুরু করেছে। সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সেন্ট্রাল টিবি ডিভিশন থেকে গত ৬ মাস ধরে নিয়মিত ওষুধ পাঠাচ্ছে না। ফলে যক্ষ্মারোগীদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সমস্যা মেটাতে আমরাই ওষুধ কিনে রোগীদের দিচ্ছি।

২০২৫ সালের মধ্যে ভারতকে যক্ষ্মামুক্ত করার ডাক দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেখানে যক্ষ্মার জীবনদায়ী ওষুধ সরবরাহে কেন্দ্রের উদাসীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে।স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, “যক্ষ্মার ওষুধ নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নিলে অধিকাংশ আক্রান্ত সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যান। বাকি ১-২ শতাংশ ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট টিবি রোগীকে হাতেগোনা কিছু ওষুধ ও ইঞ্জেকশন নিতে হয়। তাহলে তাঁদের রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকে। কেন্দ্রের এই নির্ধারিত ওষুধ সরবরাহ অনিয়মিত হওয়ায় যক্ষ্মারোগীদের প্রাণ সংশয়ের পাশাপাশি আশেপাশে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ছে।”স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন ড্রাগ সেনসেটিভ যক্ষ্মারোগীদের ছ’মাসের ওষুধ খেতে হয়। ওষুধ চারটি। সেগুলি হল আইসোনাজাইড, রিফমপিসিন, ইথামবুটল এবং প্যারাজিনামাইট। এর মধ্যে প্রথম দু’মাসের ‘অ্যাকিউট স্টেজে’ দেওয়া হয় প্যারাজিনামাইট বাদে তিনটি ওষুধের ফিক্সজড ডোজ কম্বিনেশন। তৃতীয় মাস থেকে পরের আরও চার মাস রোগীরা পান প্যারাজিনামাইট সহ চারটি ওষুধের ফিক্সজড ডোজ কম্বিনেশন। এই চারটি ওষুধের সবক’টির এখন চরম আকাল। সমস্যায় জেরবার স্বাস্থ্য দফতর।




Related articles

প্রধানমন্ত্রীদের নিয়ে বই লিখছেন মমতা, প্রকাশ কবে জানালেন ছাত্র সমাবেশ থেকেই

শুধু তৃণমূল সুপ্রিমো বা বাংলায় তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী নন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সাতবারের সাংসদ চারবারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সেই...

Gold Silver Rate: আজ সোনা রুপোর দাম কত? জেনে নিন এক ঝলকে

২৮ অগাস্ট (বৃহস্পতিবার) ২০২৫১ গ্রাম ১০ গ্রামপাকা সোনার বাট ১০১৭০ ₹ ১০১৭০০ ₹ খুচরো পাকা সোনা ১০২২০...

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে জাতীয় দলে ফেরার লক্ষ্যে সামি

ওয়েস্ট ইন্ডিজের(West Indies) বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ দিয়েই ফের ভারতীয় দলের জার্সিতে মাঠে ফিরতে চান মহম্মদ সামি(Mohammed...

মহারাষ্ট্রে বহুতল দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৫!

গণেশ বন্দনার আনন্দ মুহূর্তে বদলে গেছে বিষাদে। উৎসবের মাঝেই মহারাষ্ট্রে বহুতল দুর্ঘটনায় (Building collapsed in Maharashtra) মৃতের সংখ্যা...
Exit mobile version