মানছি না-মানব না! OBC নিয়ে ‘BJP-র রায়’কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যাওয়ার বার্তা মমতার

"কোর্টের সবাই খারাপ নয়, আমি কোর্টকে সম্মান করি। কিন্তু যে ব্যক্তি এই রায় দিয়েছেন যে ওবিসি সংরক্ষণ থেকে মুসলিমদের বাদ দেবে, সেই রায় মানি না।

লোকসভা নির্বাচনে প্রকাশ্যে ধর্মীয় সংঘাতের আবহ তৈরি করেছে বিজেপি। বিরোধীদের ইস্তাহারে জাতিগত সংরক্ষণের যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, তার অপব্যাখ্যা করে প্রচার চালাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। এবার রাজ্যের মন্ত্রীসভায় পাশ হওয়া ওবিসি সংরক্ষণে ‘গদ্দার’ ব্যবহার করে এক শ্রেণির মানুষকে সংরক্ষণ থেকে বঞ্চিত করা নিয়ে বিজেপিকে তোপ দাগলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে বাংলার ওবিসিদের সংরক্ষণে যে কোনও পরিবর্তন হবে না, তা দমদমের নির্বাচনী জনসভা থেকে স্পষ্ট করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চতর আদালতে যাওয়ার ঘোষণা করেন মমতা।

তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরে মন্ত্রীসভায় ওবিসি স্বীকৃতি দেওয়ার কাজ শুরু হয়। ২০১২ সাল থেকে ওবিসি সংশোধিত আইনে সংশাপত্র দেওয়ার কাজ হয়। একটি রাজ্যের তৈরি করা নীতির উপর কীভাবে আদালত বাদ দিতে পারে প্রশ্ন তোলেন মমতা। তিনি বলেন, “উপেন বিশ্বাস তখন চেয়ারম্যান ছিলেন। বাড়ি বাড়ি সার্ভে করে করে আমরা ওবিসি রিজার্ভেশন করেছিলাম। ২০১২ সাল থেকে চলছে। কোর্টে আগেও কেস হয়েছিল, কেস খালি হয়ে গিয়েছিল। একটা সরকার কী নীতি নেবে সেই নীতি নিয়ে বিজেপি শাসিত রাজ্যে কোনও প্রশ্ন কেউ করতে পারে?”

দমদম লোকসভা কেন্দ্রে খড়দহ ও আগরপাড়ায় দুটি জনসভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকেই বিজেপির সংবিধান বিরোধী নীতি নিয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যেই রাজ্যের মানুষকে বেকায়দায় ফেলছে বারবার, তা নিয়ে তোপ দাগেন। এই প্রসঙ্গেই তিনি শিক্ষা দফতরে প্রায় ২৬ হাজার মানুষের চাকরি যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে আনেন। রাজ্যে কিছু দালাল ও গদ্দার বসিয়ে কখনও রাজ্যের মানুষের চাকরি খেয়ে নেওয়া ও কখনও ওবিসিদের সংরক্ষণ বাতিল করে দেওয়া নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দেন মমতা। শিক্ষক বাতিলের রায়ের মতই সংরক্ষণ বাতিলের রায় বিজেপি প্রভাবিত দাবি করেন তিনি বলেন, “আজ কোনও একজন জাজকে দিয়ে অর্ডার করিয়েছে। তিনি ভদ্রলোক বলেই পরিচিত, কিন্তু তাঁর রায় আমি মানি না। ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি খেয়েছিল যখন তখন সেই রায়ও মানিনি। যে রায় দিয়েছেন, বিজেপির রায় এটা। আমরা মানব না। ওবিসি সংরক্ষণ চলছে চলবে।”

ভোট রাজনীতিতে বিজেপি যেভাবে বিরোধীদের নীতির অপব্যাখ্যা করছেন তারও মুখোশ খুলে দেন মমতা। সন্দেশখালি, জাতিগত মারামারির ঘটনা এবং তারপরে তপশিলি সংরক্ষণ বন্ধ করার যে মিথ্যা ভাসন দিয়ে সংবিধানের অবমাননা করেছেন মোদি, দাবি মমতার। সেই সঙ্গে তিনি আদালতে বিজেপির গদ্দারদের প্রবেশ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “কোর্টের সবাই খারাপ নয়, আমি কোর্টকে সম্মান করি। কিন্তু যে ব্যক্তি এই রায় দিয়েছেন যে ওবিসি সংরক্ষণ থেকে মুসলিমদের বাদ দেবে, সেই রায় মানি না। এর জন্য উচ্চতর আদালতে যেতে হলে যাব।” পাশাপাশি যোগ করেন, “মনে রাখবেন আপনাদের মধ্যেও দু একটা গদ্দার ঢুকে গেছে। যে গদ্দারগুলো বিজেপিকে ম্যাটেরিয়াল সাপ্লাই করে। বিজেপির কাছে গিয়ে কাছের মানুষ থাকতে চায়।” সেই সঙ্গে নাম না করে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ও চিত্তরঞ্জন দাসের বিজেপি ও আরএসএস প্রভাবিত হওয়ার প্রসঙ্গও টেনে আনেন। এভাবেই আদালত বিজেপির দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার ব্যাখ্যা দেন মমতা।

Previous article২১-এর বদলা ২৫ তারিখ! নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে ‘RAC বিধায়ক’কে ধুয়ে বার্তা দিলেন অভিষেক
Next articleবিজেপির প্রচারে ধর্মীয়-সাম্প্রদায়িক বার্তা: এতদিনে কড়া নির্দেশ কমিশনের