মোদিরাজ্যে দশ বছরের খরা কাটল কংগ্রেসের, কীভাবে সম্ভব করলেন গেনিবেন

দশ বছর পরে গুজরাটে আবার সাংসদ আসনে জয় কংগ্রেসের। একদিকে যখন কেরালায় প্রথমবার আসন জয় নিয়ে উৎসব করছে, তখন গুজরাটের এই একটি আসনে কংগ্রেসের জয় বিজেপির গলার কাঁটা। তবে ৪৯ বছরের মহিলা প্রার্থী গেনিবেন ঠাকুরের বনসকণ্ঠ আসন জয়ের রাস্তা নেহাৎই সহজ ছিল না। সব প্রতিকূলতাকে পরাস্ত করে গেনিবেনের জয়ে স্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের কাছে ‘রকস্টার’-এর তকমা পেয়েছেন তিনি।

লোকসভা নির্বাচনের আগেই কংগ্রেসের তহবিল আটকে দেয় কেন্দ্রের মোদি সরকার। ফলে গেনিবেনের মত পিছিয়ে পড়া উপজাতি গোষ্ঠীর প্রার্থীর পক্ষে এই নির্বাচনে লড়াই করাটাই বিরাট কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাঁর নিজের কাছে গুজরাটের মতো রাজ্যে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে লড়াই করাটাই ছিল কঠিন। সেই পরিস্থিতিতে টাকার জন্য তাঁকে ভরসা করতে হয়েছে স্থানীয় মানুষের উপর। বর্তমানে ট্রেন্ডিং হওয়া ক্রাউড ফান্ডিংয়ের পথে গিয়েছেন গেনিবেন। কংগ্রেস নেতাদের দাবি, স্থানীয় মানুষের থেকে ১১১টাকা করে চাওয়া হয়েছিল প্রচার চালিয়ে যাওয়ার জন্য।

তবে আর্থিক সমস্যার পাশাপাশি ছিল বনসকণ্ঠের প্রতিপক্ষ বিজেপি প্রার্থীর ক্ষমতার চাপ। আর্থিক দিক থেকে বলবান বিজেপি প্রার্থীর ক্ষমতার প্রয়োগে এলাকায় মিথ্যা মামলা, পুলিশের ক্ষমতার অপপ্রয়োগ, বেআইনি পেশিশক্তির প্রয়োগের সঙ্গেও লড়তে হয়েছে কংগ্রেস প্রার্থীকে।

রাজনীতিকদের মতে, প্রবল চাপের মধ্যে লড়াই-ই গেনিবেনের জন্য শাপে বর হয়েছে। বনসকণ্ঠে পিছিয়ে পড়া জাতিগোষ্ঠী ও মুসলিম ভোট যথেষ্ট রয়েছে। সেখানে বিজেপি প্রার্থী রেখাবেন চৌধুরি একজন উচ্চবর্ণের মহিলা। অন্যদিকে ওবিসি জাতিভুক্ত গেনিবেনের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে কোনও হেভিওয়েট নেতাও এলাকায় যাননি। ফলে তিনি যে ভোট পেয়েছেন তা এলাকার মানুষের জন্যই। আর এই জনসমর্থন তিনি গত সাত বছর ধরে সংগ্রহ করেছে, যা শুরু হয়েছিল ভাভ বিধানসভা এলাকা থেকে। ২০১৭ সালে ভরা বিজেপির বাজারে ভাভ বিধানসভায় কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে জয়লাভ করেন গেনিবেন। ২০২২ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও ভাভ থেকেই তিনি বিধায়ক হন। সেই ভরসাতেই ২০২৪ সালে তাঁকে লোকসভার টিকিট দেয় কংগ্রেস, আর এখানেই সফল কংগ্রেসের প্রার্থী নির্বাচন।

Previous articleবাংলাদেশের সাংসদ খুনে নেপাল থেকে গ্রেফতার অন্যতম অভিযুক্ত সিয়াম
Next articleসাফল্যের সন্ধান পেতে এবার কি ভোট কুশলীর দ্বারস্থ হবে সিপিএম?