ব্রেন ডেথে মরণোত্তর অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত, পিন্টুর অঙ্গ ফেরাল বহু প্রাণ

নশ্বর দেহ। মৃত্যুর পর তার চিহ্নও থাকে না। তাই প্রাণবায়ু বেরিয়ে যাবার আগে এক দেহের নানা অঙ্গ দান করে একাধিক মৃত্যুপথযাত্রীর জীবন ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলা পিন্টু মণ্ডলের পরিবার।

এক বাইক দুর্ঘটনায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় পিজি হাসপাতালে আনা হয়েছিল মহেশতলার পিন্টুকে। চিকিৎসকদের সমস্ত চেষ্টা বৃথা করে পিন্টুর ব্রেন ডেথ হয়ে যায়। তারপর যন্ত্র বাঁচিয়ে রেখেছিল পিন্টু মণ্ডলকে (৩৮)। যন্ত্র খুলে নিলেই একটার পর একটা অঙ্গ নষ্ট হবে। তাই যতগুলি সম্ভব অঙ্গ দান করে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন এসএসকেএমের চিকিৎসকরা। ট্রমা কেয়ারে দাঁড়িয়ে চিকিৎসকদের প্রস্তাব শুনে দ্বিতীয়বার ভাবেননি পিন্টুর পরিজন। বুধবার রাতেই পিন্টুর দু’টি কিডনি ও দু’টি চোখ প্রতিস্থাপন করা হয় অন্যের শরীরে তারপর সংরক্ষণ করা হয় তাঁর ত্বক। এভাবেই রাজ্যে মরণোত্তর অঙ্গদানের সঙ্গে জুড়ে যায় বজবজের বাসিন্দা পিন্টুর নাম।

বজবজের মহেশতলার সরকারপুলের বাসিন্দা পিন্টু। ৩১ মে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে একটি বাইক তীব্র গতিতে ধাক্কা মেরে চলে যায় তাঁকে। পিন্টুর জামাইবাবু সুশান্ত চক্রবর্তী জানান, পাড়ার লোক ও আত্মীয়রা মিলে তাঁকে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু ডাক্তারবাবু জানান, এখানে চিকিৎসার সুযোগ নেই। এরপর তাঁকে পিজির ট্রমা কেয়ারে ভর্তি করা হয়। মাঝরাত থেকে ভোর পর্যন্ত মস্তিস্কে অস্ত্রোপচার চলে। মাথায় রক্ত জমাট বেঁধে ছিল। অপারেশনের পর সিটি স্ক্যান করা হয়। পাঠানো হয় ভেন্টিলেশনে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। বুধবার সন্ধ্যায় চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন ব্রেনডেথ হয়েছে। তারপর পিন্টুর আত্মীয় পরিজনকে রাজি করিয়ে চোখ, কিডনি-সহ অন্যান্য অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করা হয়।

আরও পড়ুন- পুজোর আগেই ফের ভোট! এবার রাজ্যের ৯ বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন