বিপ্লব দেব সন্ত্রাসের প্রতীক, বিজেপির ‘নজর ঘোরানো’ দলকে তুলোধোনা কুণালের

তিনি বলেন, "বিপ্লব দেব নিজে সন্ত্রাসের প্রতীক। আসা মানে ত্রিপুরার সেই ভয়ঙ্কর দিনগুলো আমরা মানুষকে মনে করিয়ে দিতে সুবিধা হবে।

ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবকে সন্ত্রাসের প্রতীক কটাক্ষ করে তৃণমূলের দাবি, লোকসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের পরে মানুষের নজর ঘোরাতে প্রতিনিধিদল পাঠাচ্ছে বিজেপি। যে দলের নেতৃত্বে এমন একজনকে রাখা হয়েছে, যাঁকে দেখালে রাজ্যের মানুষকে ত্রিপুরার সন্ত্রাসের দিনগুলোর ঘটনা মনে করিয়ে দেওয়া সহজ হবে বলে দাবি প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ কুণাল ঘোষের। পুরভোটের সময় ত্রিপুরার সন্ত্রাসের কথা মনে করিয়ে বিজেপির চার সদস্যের প্রতিনিধিদলকে ‘রাজনৈতিক পর্যটক’ বলে কটাক্ষ করেন তিনি।

নির্বাচন কমিশন যে বাংলায় শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হওয়ার তকমা দিয়েছে, সেই বাংলাতেই নাকি একমাত্র সন্ত্রাস হয়েছে নির্বাচনে। এমনটা দাবি বিজেপির। তাই চার সদস্যের দল রাজ্যে পাঠাচ্ছে বিজেপি। দলের নেতৃত্বে থাকছেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। তাঁর অধীনে থাকছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। বিপ্লব দেবের নেতৃত্বে এই দলকেই কটাক্ষ করেন কুণাল ঘোষ। তিনি মনে করিয়ে দেন, “বিপ্লব দেব, যার জমানায় যখন আমরা পুরভোট করতে গিয়েছিলাম যখন গোটা ত্রিপুরা জ্বলছিল বিজেপির তাণ্ডবে। অকথ্য অত্যাচার, নির্যাতন, অপহরণ, মাথা ফাটিয়ে দেওয়া, যেগুলো দক্ষিণী সিনেমায় দেখা যায় ভয়ঙ্কর সিন। থানার মধ্যে ঢুকে গুণ্ডারা যে সন্ত্রাস করে, থানার মধ্যে থেকে তুলে নিয়ে যায়। বিপ্লব দেবের জমানায় থানার মধ্যে আক্রমণ হয়েছিল তৃণমূলের কর্মীদের ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। মাঝরাতে মহিলা থানায় বিজেপির গুণ্ডারা আক্রমণ চালিয়েছিল। ভাঙচুর করেছিল, সব নথি এখনও আছে। মধ্যরাতে যখন সায়নী ঘোষ সহ আমরা সেই থানায় ছিলাম তাদের তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিজেপি আক্রমণ করেছিল বিপ্লব দেবের নেতৃত্বে।”

সেই বিপ্লব দেব যখন বিজেপির দলকে নেতৃত্ব দিয়ে রাজ্যে নিয়ে আসছেন, তখন তাঁর সন্ত্রাসকে মানুষের সামনে তুলে ধরা সহজ হবে বলেই দাবি কুণালের। তিনি বলেন, “বিপ্লব দেব নিজে সন্ত্রাসের প্রতীক। আসা মানে ত্রিপুরার সেই ভয়ঙ্কর দিনগুলো আমরা মানুষকে মনে করিয়ে দিতে সুবিধা হবে।”

আদতে লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবি, আর তারপরে একের পর এক বিজেপির অধীন পঞ্চায়েতের তৃণমূলে পালাবদল চাপ বাড়িয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বের। কুণাল ঘোষের স্পষ্ট দাবি, “নাটক করতে আসছে। ব্যর্থতা, গোহারা হেরেছে বাংলায়। তা থেকে নজর ঘোরাতে আসছে।” শনিবারও কোচবিহারে ঢাংঢিংগুড়ি পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রধান তৃণমূলে যোগ দেন। প্রধানের তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে এলো। ২৩ আসনের পঞ্চায়েতে ১০টি আসন বিজেপির ও ১৩টি আসন তৃণমূলের দখলে রইল। কার্যত লোকসভার ফলাফলে প্রাক্তন সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক কোচবিহার থেকে হেরে যাওয়ার পরে একের পর এক তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছে বিজেপির পঞ্চায়েত।

তাসের ঘর ভেঙে পড়া আটকাতে শনিবার কোচবিহার যান শুভেন্দু অধিকারী। যদিও দলের ভাঙন ঠেকাতে না, দলের বৈঠকে বিক্ষোভের হাত থেকে বাঁচতে কোচবিহার গিয়েছেন শুভেন্দু, কটাক্ষ কুণাল ঘোষের। তিনি জানান, “শুভেন্দু কোচবিহারে গিয়েছেন কলকাতার দলের মিটিং এড়াতে। কারণ ওই মিটিংয়ে ক্ষোভে ফুটছে আদি বিজেপি। মিটিং থেকে পালিয়ে, পুরোনো কর্মীদের মুখোমুখি হতে হবে সেই আতঙ্কে কোচবিহারে নাটক করতে গিয়েছেন।”

Previous articleঈদে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সতর্ক প্রশাসন, মোতায়েন বাড়তি পুলিশ বাহিনী
Next articleরাজ্যের হাতেই ফেরানো হোক দায়িত্ব! কেন্দ্রের নিট পরীক্ষার দুর্নীতি নিয়ে সরব হলেন ব্রাত্য