Thursday, December 18, 2025

আগে শিশুদের শিক্ষা, দফায় দফায় বাহিনী প্রত্যাহারে মত হাই কোর্টের বিচারপতির

Date:

Share post:

বাংলায় লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে গেরুয়া শিবিরের। সেই ব্যর্থতা ঢাকতে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে তারা। তাদের অঙুলিহেলনেই রাজ্যে মোতায়েন রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। এর জেরে ক্ষতি হচ্ছে পঠনপাঠনের। এদিকে অন্তত দুর্গাপুজো পর্যন্ত বাংলায় বাহিনী রাখার দাবি তুলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি। কিন্তু সেখানেও শিশুদের শিক্ষার অধিকারকে অগ্রধিকার দেন হাই কোর্টের বিচারপতি। তিনি জানান, “যেখানে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের অভিযোগ নেই সেখান থেকে বাহিনী প্রত্যাহার করা যেতেই পারে। এভাবে দফায় দফায় বাহিনী প্রত্যাহার করা যায়।”

রাজ্যে দুর্গাপুজোর পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার আর্জি জানায় বিজেপি। কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের থাকা-খাওয়ার জায়গা কোথায় হবে? তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে হাই কোর্টে। মঙ্গলবার, শুনানিতে রাজ্য এবং কেন্দ্র- দুপক্ষের কাছেই রিপোর্ট তলব করে বিচারপতি হরিশ টন্ডন এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানতে চায় স্কুলের পরিবর্তে কোথায় রাখা যায় ৪০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী? আদালতের নির্দেশ, স্কুলের বিকল্প হিসাবে কোথায় বাহিনী রাখা হবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে রাজ্য এবং কেন্দ্রকে। ২১ জুন ওই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।

নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এই মঙ্গলবার পর্যন্ত বাহিনী রাখা হবে। পরে হাই কোর্টের নির্দেশে সেই সময়সীমা আরও বাড়ে। ২১ তারিখ পর্যন্ত বাহিনী রাখার সিদ্ধান্ত জানায় হাই কোর্ট। রাজ্যের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। এদিন গরমের ছুটির পরে খুলেছে স্কুল। কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকায় লেখাপড়া ঠিক মতো করা যাচ্ছে না। এই নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে হাই কোর্টে। মামলাকারীর বক্তব্য, কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকার ফলে অনেক স্কুল, কলেজে ক্লাস শুরু করা যাচ্ছে না। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে আইনজীবী কুমারজ্যোতি তিওয়ারি সওয়াল করেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে রাখার দায়িত্ব রাজ্যের। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত জানান, “নির্বাচনী আদর্শ আচরণবিধি উঠে গিয়েছে। এখন কেন রাজ্য বাহিনী রাখার দায়িত্ব নেবে? কেন্দ্রের উচিত তাদের কোনও জায়গায় বাহিনী রাখা।“

দুপক্ষের বক্তব্য শোনার পরে বিচারপতি টন্ডনের জানান, “রাজ্য ও কেন্দ্রের মত পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু শিশুদের কোনও মতাদর্শ নেই। তাদের শিক্ষার কথা আগে চিন্তা করতে হবে। বাহিনী রাখার বিকল্প জায়গা খুঁজতে হবে।“

হাই কোর্ট জানায়, শিশুদের শিক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে আদালত দেখছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোথায় বাহিনী রাখা যায়, সে বিষয়ে আগামী তিনদিনের মধ্যে রাজ্য ও কেন্দ্রকে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছে। হরিশ টন্ডন বলেন, “যেখানে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের অভিযোগ নেই সেখান থেকে বাহিনী প্রত্যাহার করা যেতেই পারে। এভাবে দফায় দফায় বাহিনী প্রত্যাহার করা যায়।”

আরও পড়ুন- উপনির্বাচনের প্রার্থী নিয়ে বিদ্রোহ! একের পর এক বিজেপি নেতার পদত্যাগ!

spot_img

Related articles

হোটেল থেকে হোমস্টে, বড়দিনে জমজমাট শৈল শহরের বুকিং! 

উত্তরবঙ্গ জুড়ে ভরপুর শীতের আমেজ, সঙ্গে আবার উৎসবের মরশুম- তাই উচ্চবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত সকলেরই ক্রিসমাস (Christmas time) ডেস্টিনেশন...

আজ থেকে ‘নো ম্যাপিং’ ভোটারদের নোটিশ পাঠানো শুরু কমিশনের

বঙ্গে এসআইআর (Special Intensive Revision) পরবর্তী পূর্ণাঙ্গ খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর এবার শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর)...

নিউটাউনের ঝুপড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

উত্তর ২৪ পরগনার নিউটাউনে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বুধবার সন্ধ্যার পর...

বিজনেস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি কনক্লেভ: বিনিয়োগের বার্তা নিয়ে শিল্পপতিদের সামনে মুখ্যমন্ত্রী

রাজ্যে শিল্প ও বিনিয়োগের সম্ভাবনাকে আরও বিস্তৃত করতে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ‘বিজনেস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি কনক্লেভ’। ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে...