মোদি-বিরোধিতা হলেই ‘ব্যান’! লাগাতার বিদেশি সাংবাদিক আক্রমণে সরব তৃণমূল

মোদির নিজের দোষের সমালোচনা করার কারণেই বিবিসি, এবিসি বা ফরাসি সাংবাদিকদের উপর পাশবিক আক্রমণ চালিয়েছে মোদি সরকার, দাবি সাংসদের

দেশের মিডিয়াকে বারবার নিজেদের দখলে রেখে খবর পেশ করে স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব প্রকাশ করতে কখনও লজ্জাবোধ করেনি কেন্দ্রের মোদি সরকার। আরও একবার সেই স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবের কারণে ভারতের মুখ পুড়ল গোটা বিশ্বের কাছে। মাত্র ছয়মাসের মধ্যে একের পর এক বিদেশি সাংবাদিককে দেশে সাংবাদিকতা করার অনুমতি দেয়নি মোদি সরকার। সবক্ষেত্রেই মোদির বিরুদ্ধে খবর করার কারণে রাজরোষে বিদেশি সাংবাদিকরা। বিদেশি সংবাদ মাধ্যমের উপর বিভিন্ন স্বৈরাচারী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে এবার সরব হলেন তৃণমূল সাংসদ জহর সরকার।

নির্বাচনের আগে সিএএ লাগু করা থেকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতারের ঘটনায় যখনই আন্তর্জাতিক মহল সরব হয়েছে, তখনই দেখা গিয়েছে বিদেশমন্ত্রকের পক্ষ থেকে সমালোচনার নিন্দা প্রকাশ করা হয়েছে। সমালোচনা হলে তাকে সদর্থকভাবে নেওয়া তো দূরের কথা, তার পাল্টা কিছু দিতেই হবে, এটাই মোদির সরকারের নীতি। সেই নীতি মেনেই ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সামান্য আয়করের বাহানায় তল্লাশি চালানো হয় বিবিসি-র দিল্লি সদর দফতরে। বিবিসির তথ্যচিত্রে গুজরাট ধর্মীয় অশান্তির ছবি তুলে ধরায়, সেটি ভারতে ব্যান হয়ে যায়। অস্ট্রেলিয়ার একটি টেলিভিশন তথ্যচিত্রে এবিসি খালিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যা সম্পর্কে তুলে ধরা হলে সেটিও ব্যান করে দেয় বিদেশ মন্ত্রক।

তবে লোকসভা নির্বাচনের আগে যেভাবে রাজনীতি থেকে প্রশাসন, সর্বত্র স্বৈরাচারী বহিঃপ্রকাশের শিখরে উঠেছিল মোদি সরকার, সেভাবেই বিদেশি সংবাদ মাধ্যমের সমালোচনাতেও শীর্ষে ওঠে। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ফরাসি সাংবাদিক ভানেসা ডোনাকের ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করা হয়। তিনি নিজের দেশে ফিরে যান। এপ্রিলে অস্ট্রেলিয়ার সাংবাদিক অবনী ডায়াসকে দেশে ফিরে যেতে হয়, ভারত সরকার সাংবাদিক হিসাবে তাঁকে দেওয়া ভিসা ফিরিয়ে নিলে। সর্বশেষ ফরাসি সাংবাদিক সেবাস্টিয়ান ফ্রাসিসের কাজের অনুমতি বাতিল করা হয়। জুনে তিনি দেশে ফিরে যান। ভানেসা ও সেবাস্টিয়ানের ক্ষেত্রে তাঁরা ভারতীয় নাগরিকদের বিয়ে করার কারণে ওভারসিজ সিটিজেন অফ ইন্ডিয়ার সম্মান পেয়ে থাকেন। কিন্তু সাংবাদিকতা করার জন্য বিশেষ অনুমতি থাকা দরকার, যা দেয়নি মোদি সরকার। সেবাস্টিয়ান রাষ্ট্রসঙ্ঘের পত্রিকাতেও মোদি সরকারের আমলে বেকারত্ব নিয়ে লিখেছিলেন।

রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকারের দাবি, এভাবেই বিদেশ মন্ত্রককে শিকারি প্রাণিতে পরিণত করেছে। মোদির নিজের দোষের সমালোচনা করার কারণেই বিবিসি, এবিসি বা ফরাসি সাংবাদিকদের উপর পাশবিক আক্রমণ চালিয়েছে মোদি সরকার, দাবি সাংসদের।