রাত পোহালেই মানিকতলা উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ। তার আগের দিন বিজেপি (BJP) প্রার্থী ও তৃণমূলের (TMC) আহ্বায়কের মোবাইল ফোনের কথোপকথন ঘিরে সরগরম রাজনৈতিক মহল। কুণাল ঘোষকে (Kunal Ghosh) ক্রীড়া জগতে জাতীয় বা রাজ্য স্তরে উচ্চ পদ দেওয়ার প্রলভন দেখিয়ে তৃণমূলে অন্তর্ঘাত করানোর প্রস্তাব দেন বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবে (Kalyan Chowbey)! অডিও প্রকাশ করে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন তৃণমূল নেতা। এর পরেই সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপি প্রার্থী অভিযোগ করেন, তৃণমূল নেতা না কি বিজেপিতে যাওয়ার জন্য তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। এর উত্তরে মোক্ষম খোঁচা দেন কুণাল। তীব্র তাচ্ছিল্য করে বলেন, ”পচা কল্যাণকে ধরে বিজেপিতে যাওয়া! প্রেস্টিজে লেগে যায়।” কুণাল জানান, তাঁর কাছে কল্যাণ চৌবের সঙ্গে কথপোকথনের সম্পূর্ণ অডিওটি আছে। আজ রাত আটটাতেই সেটি প্রকাশ করবেন কুণাল।

কল্যাণ চৌবে,
যদি বলতে চান ফোন কথোপকথন ঠিক নয়, প্রযুক্তিগত বিকৃত আছে, মিথ্যা আছে, তাহলে মিডিয়ায় ভুলভাল না বকে পুলিশে যান, সিবিআইতে যান, ইন্টারপোলে যান। না হলে বাস্তব মেনে নিন। আর মিথ্যাচার করবেন না।
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) July 9, 2024
মঙ্গলবার দুপুর থেকেই কুণাল-কল্যাণের অডিও ঘিরে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। প্রথমে অডিও ফাঁস করে কুণাল অভিযোগ করেন, বিজেপির নিশ্চিত পরাজয় বুঝে তাঁকে অনৈতিকভাবে ঘুষ দেওয়ার কথা বলছেন কল্যাণ চৌবে। কুণালকে (Kunal Ghosh) অন্তর্ঘাতের প্রস্তাব দেন বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ। বিনিময়ে খেলার জগতে রাজ্য বা জাতীয় স্তরে বড় পদের প্রস্তাব দেন। এআইএফএফ সভাপতির পদ অপব্যবহার করে বড় পদের প্রলভন দেওয়া হয়েছে মোহনবাগান সহসভাপতি কুণাল ঘোষকে। এই প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে এটি অত্যন্ত নিম্নরুচির কাজ বলে তোপ দাগেন কুণাল। এর কিছুক্ষণ পরে সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপি প্রার্থী অভিযোগ করেন, একমাসের মধ্যেই নাকি বিজেপিতে যোগদানের জন্য রাজ্যের বাইরে বৈঠকে বসবেন কুণাল ঘোষ। সেই কারণেই তাঁকে ফোন করেন কল্যাণ। একই সঙ্গে ফোনের অডিও-র কিছু অংশ তাঁর নয় বলেও দাবি করেন বিজেপি প্রার্থী। পাল্টা কুণাল চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, ওই ফোনের কথপোকথন সিবিআই বা যে কোনও কেন্দ্রীয় সরকারি এজেন্সি দিয়ে পরীক্ষা করাতে পারেন কল্যাণ। কুণালের জানান, মঙ্গলবার রাত আটটায় সম্পূর্ণ অডিও টেপ প্রকাশ করবেন তিনি। সেখানে ধর্মেন্দ্র প্রসাদের প্রসঙ্গ নিয়ে কল্যাণ চৌবে তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন বলে দাবি কুণালের।
এর পরেই ফের সাংবাদিক বৈঠক করে কল্যাণকে ধুয়ে দিলেন কুণাল ঘোষ। তিনি সরাসরি কল্যাণকে ‘নির্বোধ’ বলে আখ্যা দিয়ে বলেন, সত্যিই যদি তিনি বিজেপিতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন, তাহলে কল্যাণের প্রস্তাব উড়িয়ে অডিও প্রকাশ করলেন কেন! বিজেপি প্রার্থীকে তুলোধনা করে কুণাল জানান, তাঁর কাকা আইএএস অফিসার হিসেবে গুজরাটে উচ্চপদে কর্মরত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কুণালকে চেনেন। সুতরাং বিজেপি-তে যাওয়ার হলে তাঁকে বারবার হেরে যাওয়া বিজেপি প্রার্থীকে ধরতে হবে না। কুণাল খোঁচা দিয়ে বলেন, ”আমার লেভেলটা ভাবুন। পচা কল্যাণকে ধরে বিজেপি যাবে কেন? প্রধানমন্ত্রী আমায় চেনেন। প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি আমায় চেনেন। পচা কল্যাণকে ধরে বিজেপিতে যাওয়া! প্রেস্টিজে লেগে যায়।”
