Friday, August 22, 2025

ফৌজদারি আইন নিয়ে রাজ্যের কমিটি “বেআইনি” বলতেই শুভেন্দুকে পাল্টা চন্দ্রিমার

Date:

Share post:

কেন্দ্রের তৈরি নতুন তিন ফৌজদারি আইন (New Criminal Law) পর্যালোচনা করতে একটি কমিটি গঠন করেছে রাজ্য সরকার। গতকাল, বুধবার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে সাত সদস্যের কমিটিতে কারা রয়েছেন, তা ঘোষণা করেছে নবান্ন। আজ, বৃহস্পতিবার এক্স হ্যান্ডেলে লম্বা-চওড়া পোস্ট করে সেই কমিটিকে “বেআইনি” মন্তব্য করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যদিও শুভেন্দুকে একেবারেই পাত্তা দিতে নারাজ রাজ্য সরকারের ঠিক করে দেওয়া কমিটির সদস্য তথা রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, “আমরা কোনও পরামর্শ দিলে তার বিবেচনা তো রাষ্ট্রপতি করবেন, তাই আমাদের মনে হয় রাষ্ট্রপতি নিজের দায়িত্ব ভালই জানেন। কিন্তু শুভেন্দুবাবু তো ‘এলওপি’, তাই হয়তো একটু বেশিই বোঝেন বা জানেন।”

আরও পড়ুন:

এদিন সকালে এক্স হ্যান্ডলে শুভেন্দু লিখেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০২৪-এর ১৬ জুলাই একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে তিনটি নতুন ফৌজদারি আইন — ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস), ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (বিএনএসএস) এবং ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম সংশোধনের পরামর্শ দেওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে। এই আইনগুলি ১ জুলাই থেকে দেশে কার্যকর হয়ে গিয়েছে। রাজ্য স্তরে এই আইনের নাম পরিবর্তন করা দরকার কি না, তা-ও খতিয়ে দেখবে কমিটি। এই ধরনের উদ্যোগ গ্রহণযোগ্য নয়, এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই বিজ্ঞপ্তিটি শুধু বেআইনিই নয়, এটি যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর পরিপন্থী। সঙ্গে এই প্রচেষ্টা ভারতের সংসদ ও ভারতের রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করছে। নতুন ফৌজদারি আইনের (New Criminal Law) প্রতিটি দিক নিয়ে প্রায় চার বছর ধরে বিভিন্ন স্তরে জড়িয়ে থাকা অংশের সঙ্গে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করে তাদের মতামত নেওয়া হয়েছে। স্বাধীন ভারতে খুব কম আইন নিয়েই এত দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে।’’

শুভেন্দু আরও লিখেছেন, “সংসদের উচ্চ এবং নিম্ন কক্ষে এই বিলগুলি পাশ করার পর ২০২৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তিনটি ফৌজদারি বিলে সম্মতি দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ২০২৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, ১ জুলাই থেকে তিনটি আইনের বিধান কার্যকর হবে। সংসদে এক বার পাশ করা আইন পর্যালোচনা করার অধিকার এবং ক্ষমতা রাজ্য সরকারের নেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতের সংবিধান দ্বারা প্রতিষ্ঠিত নিয়মগুলিকে চ্যালেঞ্জ করছেন। একটি প্রাদেশিক সরকারের প্রধান হিসাবে তিনি তাঁর সীমা অতিক্রম করছেন।”

শুভেন্দুকে জবাব দিতে দেরি করেননি রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘সংবিধানের ২৪৬ অনুচ্ছেদের কথা উল্লেখ করেই ওই কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কনকারেন্স লিস্টের কথা বলা হয়েছে, যেখানে কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়ের হাতেই আইন করার অধিকার রয়েছে। আর আমরা কোনও পরামর্শ দিলে তার বিবেচনা তো রাষ্ট্রপতি করবেন, তাই আমাদের মনে হয় রাষ্ট্রপতি নিজের দায়িত্ব ভালই জানেন। কিন্তু শুভেন্দুবাবু তো ‘এলওপি’, তাই হয়তো একটু বেশিই বোঝেন বা জানেন।’’

উল্লেখ্য, নতুন তিন ফৌজদারি আইন নিয়ে আগেই নিজেদের আপত্তির কথা কেন্দ্রকে জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠিও দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সেই সব আপত্তি উড়িয়ে গত ১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়েছে তিন ফৌজদারি আইন। কার্যকর হওয়া ওই তিন আইন খতিয়ে দেখতেই গতকাল, বুধবার সাত সদস্যের একটি কমিটি গড়েছে রাজ্য সরকার।

আরও পড়ুন: লোকসভা ভোটে ভরাডুবি হতেই মোদি-শাহের নজরে উত্তর প্রদেশ! কেশবের চালে বেকায়দায় যোগী

 

spot_img

Related articles

সোনা জয়ী অভিনবকে শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর

এশিয়ান শুটিং চ্যাম্পিয়নশিপ জুনিয়র (Asian Shooting Championship) এয়ার রাইফেল বিভাগে বাংলার অভিনব সাউয়ের (Abhinaba Shaw)। তাঁর এই সাফল্যই...

পুজোর আগে রাজ্য পুলিশের শীর্ষস্তরে রদবদল! পরিবর্তন হল ৬ জেলার এসপি-ডিসি

পুজোর মুখে রাজ্য পুলিশের শীর্ষ পদে বড়সড় রদবদল করল নবান্ন। বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, একাধিক জেলায় পুলিশ...

‘নোরা ফাতেহি’ হতে হবে! স্ত্রীকে জোর করে শরীরচর্চা করিয়ে গর্ভপাত শিক্ষকের

যোগীরাজ্যে স্কুলশিক্ষকের ফ্যান্টাসির চূড়ান্ত নমুনা! স্ত্রীকে হতে হবে রোগা ছিপছিপে চেহারার। আর সেই চেহারা বানাতে গিয়েই স্বামীর নির্মম...

গান-কবিতায় সংসদে সরব তৃণমূল! বয়কট রাজ্যসভার চা-চক্র

বৃহস্পতিবার অধিবেশনের শেষ দিনে সংসদ উত্তাল হল বাংলা গান, কবিতা, বিক্ষোভ, প্রতিবাদে। সংসদের অন্দরে যেমন কালাকানুন, এসআইআর, ভাষাসন্ত্রাসের...