Budget 2024: রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট, দিশাহীন, গরিব বিরোধী, জনবিরোধী বাজেট: মুখ্যমন্ত্রী

কেন্দ্রীয় বাজেটে বাংলার ভাঁড়ার শূন্যই শুধু নয় গরিব, খেটে খাওয়া মানুষের জন্য কোনও সুরাহা নেই এই বাজেটে। মঙ্গলবার, Budget 2024-25 পেশ হওয়ার পরেই একে রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট, দিশাহীন, গরিব বিরোধী, জন বিরোধী বলে তীব্র আক্রমণ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মঙ্গলবার, বিধানসভায় নিজের দফতরে বসে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”এই বাজেট দিশাহীন, গরিব বিরোধী, জনবিরোধী। শুধুমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই বাজেট করা হয়েছে। আমি কোনও আলো দেখতে পাচ্ছি না। অন্ধকার, অন্ধকার শুধু অন্ধকার।”বাংলার প্রতি বঞ্চনা নিয়ে তোর দেগে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) বলেন, ”পশ্চিমবঙ্গকে হিংসা করে কেন্দ্র। তাই আমাদের বার বার বঞ্চিত করে।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “বাজেটে বাংলা কিছু নাই দিতে পারে, কিন্তু অপমান করলে তার জবাব মানুষ দেবে।”

বাজেটে বাংলাকে ১ লক্ষ ১৭ হাজার কোটি টাকার কোনও কিছুই দেয়নি মোদি সরকার। উল্টে জিএসটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, একটি রাজনৈতিক দলকে খুশি করতে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বাজেট (Budget 2024) তৈরি করা হয়েছে। তীব্র কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ”আমি এরকম কখনও দেখিনি, একটা সরকার শেয়ারের টাকা দিয়ে, শেয়ার স্ক্যাম করে আর আর্থিক প্যাকেজে করে, কেবল অর্থ দিয়ে, মন্ত্রক না দিয়ে, স্পিকারপদ না দিয়ে, বৈষম্য তৈরি করছে। অন্ধ্র, বিহারতে টাকা দিয়েছে, ঠিক আছে। কিন্তু বৈষম্য তৈরি করা ঠিক নয়।”

বিজেপিকে (BJP) নিশানা করে মমতা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ”যদি মনে করে বাংলাকে বঞ্চিত করবে এভাবে, মানুষ গর্জন করবে। যেগুলো ওঁদের পছন্দ, তাই করবে। যার অনেক আছে, তাকে পাইয়ে দেবে, যার কিছু নেই তাকে কিছু দেবে না। বাংলায় এত প্রাকতিক বিপর্যয় হয়, তাকে কোনও টাকা দিল না। আশপাশের সব রাজ্যকে দিল। বাংলা একা নয়, বাংলা একাই ১০০। ভোটের মঞ্চে দেখা হবে।”

বাংলা মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ”বাংলায় ১১-সাড়ে ১১ কোটি মানুষ। প্রচুর ভোট, সেটা মনে রাখবেন। ১০০ দিনের কাজের কোনও খোঁজ নেই। তিন কোটি বাড়ি যে দেওয়া হবে, কাকে দেওয়া হবে? সাধারণ ঘরের মেয়েদের কথা ভাবেনি। সোনা-রুপোর ওপর ভর্তুকি দিয়েছে। আগেরবারও জিরের ওপর ট্যাক্স ছিল, কিন্তু হিরের ওপর ছিল না।”

শিক্ষাক্ষেত্রের বঞ্চনার বিষয়ও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ”মূল্যবদ্ধির দিকে কোনও নজর দিল না। মাত্র ১ লক্ষ ছাত্রকে টাকা দেবে বলছে। ১৩০ কোটির দেশে তো সেটা কিছুই নয়। আমরা তো সবাইকে দিয়েছি, ১০ লক্ষ টাকা করে স্টুডেন্ট ক্রেডিট। আমাদের ১ লক্ষ ৭১ হাজার কোটি টাকা এখনও পাওনা কেন্দ্রের থেকে। এক পয়সাও দেয়নি। উল্টে বঞ্চিত করছে বাংলাকে। এখান থেকে জিএসটি নিয়ে গেছে। আমরা আর কোনও ট্যাক্স করতে পারি না। শুধু সেজ করেছে, যাতে সব লাভ ওদের হয়।”

মমতার কথায়, ”এই বাজেট জনবিরোধী, গরিব বিরোধী, দিশাহীন। এটা পলিটিক্যালি বায়েসড বাজেট। একটা পার্টিকে খুশি করতে এই বাজেট। আয়ুষ্মান ১০০ শতাংশ দিক। আমার আপত্তি নেই। কিন্তু এই স্কিমে তো ৬০ শতাংশ দেয়। ৪০ শতাংশ টাকা প্রাপককেই গুনতে হবে। তারা কোথায় পাবে? আমাদের স্বাস্থ্যসাথী পুরোটাই ফ্রি। এই জন্যই আমরা আয়ুষ্মান ভারতে যোগ দিইনি।”

নীতীশ কুমারকে খুশি রাখতেই কি বিহারের আর্থিক প্যাকেজ? প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”বিহারের ব্যাপারে আমি কিছু বলব না। আমি কোনও পলিটিক্যাল পার্টির নিজের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে কিছু বলব না। আমি কেবল বলব, এই বাজেটে কোনও ভিশন নেই, কেবল পলিটিক্যাল পার্টির মিশন আছে। আমি কোনও আলো দেখতে পাচ্ছি না বাজেটে। অন্ধকার।”

ক্ষোভ প্রকাশ করে মমতা বলেন, ”বাজেটে পাহাড়কে ভুলে যায়। ভোটের সময় মনে রাখে কেবল, তার পরে ভুলে যায়। বাংলাকে ওরা হিংসা করে, তাই বাংলাও ব্রাত্য করে ওদের।”