শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর থেকেই হিংসার আগুন জ্বলছে বাংলাদেশে (Bangledesh)। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের (Mujibur Rahman) একের পর এক মূর্তি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। ভাঙা হচ্ছে স্থাপত্য। এর মধ্যেই ছবি ভাইরাল। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাঙা মূর্তির মাথা মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। এই ছবি থেকে ক্ষুব্ধ-শোকস্তব্ধ সাহিত্যপ্রেমী থেকে রবীন্দ্রানুরাগী সবাই। বিশেষ করে ২২ শ্রাবণ যখন পশ্চিমবঙ্গে সশ্রদ্ধায় বিশ্বকবির প্রয়াণ দিবস পালন হচ্ছে, তখন এই দৃশ্য নাড়া দিয়েছে সকলকে। এই ছবি নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত লেখিকা তসলিমা নাসরিন (Taslima Nasrin)। প্রশ্ন তোলেন, যে ছাত্ররা রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়ে প্রতিবাদ মিছিল করেছিল, সেই ছাত্ররাই কী করে রবীন্দ্রনাথের মূর্তি ভাঙে? তাহলে সবাই কি লোক দেখানো ছিল!
কী লিখেছেন তসলিমা?
“মবোক্রেসি থেকে ডেমোক্রেসি কি আদৌ আসবে?
সেটা ডেমোক্রেসি নয় কিন্তু, যদি মবোক্রেসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনও একটা রাজনৈতিক দলকে নির্বাচন থেকে গায়ের জোরে বাদ দিতে হয়।
যে মবকে পুলিশ বা আর্মি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, সেই মবকে নিয়ন্ত্রণ কে করবে? যে ”জাগ্রত ছাত্র জনতা” রবীন্দ্রনাথের গান গেয়ে মানুষকে মুগ্ধ করেছিল, সেই জাগ্রত ছাত্র জনতা রবীন্দ্রনাথের ভাস্কর্য ভেঙ্গে গুঁড়ো করেছে। তাহলে ওই গান ছিল লোক দেখানো? ছিল ‘ভুয়া’?
সেই ছাত্ররা কি তাদের স্কুলে আর ফেরত যেতে পারবে যে ছাত্ররা হাজারো মানুষকে হত্যা করেছে? পাবলিক প্রপার্টি পুড়িয়ে দিয়েছে? মানুষের ঘর বাড়ি লুট করেছে? আমার মনে হয় না। খুনের নেশা কিন্তু মারাত্মক। নতুন সরকার অপছন্দের কাজ করলে নতুন সরকারকেও খুন করতে যাবে তারা। তবে উন্মত্ত অশান্ত অনেকেই তাদের মাদ্রাসায় ফেরত গিয়ে শিক্ষক দ্বারা বলাৎকারের শিকার হয়ে তবেই শান্ত হবে। আর্মি আর পুলিশ যেটা পারেনি, সেটা মাদ্রাসার শিক্ষকেরা পারবে।“
একটি ছবিও পোস্ট করেন তিনি। সেখানে দেখা যাচ্ছে রবীন্দ্রনাথের মূর্তির ভাঙা মাথা পড়ে রয়েছে মাটিতে।
আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে জাতীয় সংসদ ভেঙে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান করা হয়েছে নোবেলজয়ী ড. মহম্মদ ইউনুসকে। কিন্তুও এখনও জ্বলছে বাংলাদেশ। সংখ্যালঘু থেকে আওয়ামি লিগের নেতা-কর্মীদের উপরে হামলার ঘটনার চলছেই।