তরুণী চিকিৎসকের নৃশংস ধর্ষণ-খুনের ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার মধ্যরাতে রাস্তা দখল কর্মসূচির মধ্যেই দুষ্কৃতী তাণ্ডব চলে আর জি কর হাসপাতালে (RG Kar Hospital)। বৃহস্পতিবার এই বিষয় নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। রাজভবনে চায়ের আমন্ত্রণে যাওয়ার পথে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানান, “এটা ছাত্রছাত্রীদের কাজ নয়। ওদের উপর কোনও রাগ নেই, আমাদের সমর্থন আছে। কিন্তু আমাদের রাগ যারা এই আন্দোলনের নামে হামলা চালিয়েছে, ভাঙচুর করেছে। রাজনৈতিক দলগুলো ঢুকে অশান্তির সৃষ্টি করছে। রাম এবং বামেদের কাজ এটা।”হাসপাতালে হামলা ঠেকাতে গিয়ে কয়েকজন পুলিশ আধিকারিক জখম হন। গুরুতর যখন হন কর্তব্যরত ডিসিও (DC)। পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, “এই ঘটনায় আমাদের ডিসি অত্যন্ত জখম হয়েছে। ওঁর অনেকক্ষণ জ্ঞান ছিল না। প্রচুর রক্তও বেরিয়েছে। পরে তাঁর জ্ঞান ফেরায় আমরা নিশ্চিন্ত হই। আমি ভোর ৪টে অবধি জেগে ছিলাম। যতক্ষণ না ওকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে ও আনকনশাস ছিল, মাথায় লেগে খুব রক্ত বেরোচ্ছিল। পুলিশকে জঘন্য ভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। আমরা কি একবারও ভাবি দুর্গাপুজোর সময় নিরাপত্তা দেন করা? খেলা থেকে শুরু করে, রাস্তা জ্যাম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সব ব্যাপারেই রাজ্য পুলিশ কাজ করে। তাদের মারধরের ব্যাপারটা কি? তারা তো কিছু করে নি। তারা ডিএনএ করেছে, ভিডিও করেছে, ফরেনসিক টেস্ট করেছে, জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেটকে নিয়ে এসেছে। তাছাড়া মা বাবাকে সব দেখিয়ে আসা হয়েছে। এরপর কি প্রশ্ন আছে সেটাও জানতে চাওয়া হয়েছে।”

হামলার ভাইরাল ভিডিও প্রসঙ্গে মমতা জানান, ”আপনারা ভালো করে ভিডিওগুলো দেখুন। এখন তো AI দিয়ে নানারকম মুখ বসিয়ে ভিডিও বানানো হয়। সোশাল মিডিয়ায় প্রচুর ভুয়ো ভিডিও ছড়াচ্ছে।”


মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানান, বহিরাগত রাজনৈতিক দলের লোক এর মধ্যে ঢুকে অশান্তি বাঁধাচ্ছে। বাম এবং রাম ঝামেলা করছে। ফেক ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগও করেন মুখ্যমন্ত্রী। সতর্ক করে বলেন, সেসবে বিশ্বাস করবেন না।

বুধবার রাতে আরজিকর হাসপাতালে (RG Kar Hospital) শতাধিক বহিরাগত হামলা চালায়। হাসপাতালে ঢুকে মারধর করা হয়। জরুরি বিভাগ তছনছ করে দেওয়া হয়। ঘটনায় অত্যন্ত মর্মাহত মুখ্যমন্ত্রী জানান অনেক খরচ করে হাসপাতাল পরিকাঠামো উন্নয়ন করা হয়েছিল। আবার কীভাবে এই ক্ষতি পূরণ করা যায়- তা ভেবেই দুশ্চিন্তা হচ্ছে।

